১৯ এপ্রিল ২০২৪ / ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / দুপুর ১:৩৫/ শুক্রবার
এপ্রিল ১৯, ২০২৪ ১:৩৫ অপরাহ্ণ

রাঙ্গামাটিতে ৪ সন্ত্রাসী আটক রাইফেলসহ গুলি উদ্ধার

     

চৌধুরী হারুনুর রশীদ
রাঙ্গামাটিতে পৃথক অভিযান চালিয়ে চার সন্ত্রাসীকে আটক করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। তাদের কাছ থেকে ১টি জি-৩ রাইফেলসহ বিপুল পরিমাণ গুলি উদ্ধার করা হয়।আজ বুধবার জেলার রাজস্থলীর গবাছড়ি এবং বাঘাইছড়ির সাজেক থেকে পৃথক অভিযানে তাদের আটক করে নিরাপত্তাবাহিনী। আটকরা হল- মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন আরাকান লিবারেশন পার্টির (এএলপি) সক্রিয় সদস্য চাচিং মারমা (২৯) ও উংসিংনু মারমা (৩২)। তাদের কাছ থেকে ১টি জি-৩ রাইফেল, ২টি ম্যাগজিন ও ২৪ রাউন্ড তাজাগুলি উদ্ধার করা হয়।
এ ছাড়া বাঘাইছড়ির সাজেক থেকে ৯৮০ রাউন্ড এসএমজি (সাব-মেশিন গান) গুলিসহ আটক করা হয় – স্থানীয় বাসিন্দা বিদ্যাজয় ত্রিপুরার ছেলে কর্ণমোহন ত্রিপুরা (২৬) ও মনা ত্রিপুরার ছেলে সাগর ত্রিপুরা (২৮) নামে দুই সন্ত্রাসী। পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
আটকদের স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে দায়িত্বশীল সেনা সূত্র জানায়, চাচিং মারমা এএলপির প্রশিক্ষিত সদস্য। সে ২০১৭ সালে মিয়ানমার গিয়ে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নেয়। উংসিংনু মারমা দলটির সক্রিয় সদস্য। তারা রাজস্থলী উপজেলার কারিগরপাড়া এলাকায় মারমা লিবারেশন পার্টি ও মারমা প্রোগ্রেসিভ পার্টি নাম দিয়ে এএলপির সশস্ত্র অবস্থান গড়ে তোলে চাঁদা আদায় এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে। এ ছাড়া সশস্ত্র দলটি স্থানীয় সাধারণ মারমা সম্প্রদায়ের একটি অংশকে ভুল বুঝিয়ে একটি ছায়া সংগঠন তৈরির অপচেষ্টায় লিপ্ত। সশস্ত্র দলটি বিভিন্ন এলাকায় নিজেদেরকে মগ পার্টি নামেও প্রচার করছে। তারা সীমান্ত এলাকায় খুন, গুম, হত্যা, লুণ্ঠন, চাঁদাবাজি চালিয়ে আধিপত্য বিস্তার করে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, সকাল ৬টার দিকে রাজস্থলী উপজেলার গবাছড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ এএলপির ওই দুই সদস্যকে আটক করে নিরাপত্তাবাহিনী। আটক চাচিং মামরা রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা সুইচিং মং মারমার ছেলে এবং উংসিংনু মারমা রাজস্থলী উপজেলার বাঙালহালিয়ার কাকড়াছড়ি পাড়ার বাসিন্দা মংরাই মারমার ছেলে।
সূত্র মতে, পার্বত্য অঞ্চলের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের সশস্ত্র সংগঠনগুলোর পাশাপাশি নতুন সশস্ত্র সংগঠন হিসেবে আরাকান লিবারেশন পার্টির অবস্থান তৈরি হলে হুমকিতে পড়বে নিরাপত্তাবাহিনীসহ রাষ্ট্র। তাই মারমা প্রোগ্রেসিভ পার্টি নামধারী আরাকান আর্মির সম্ভাব্য অবস্থানের ওপর পর্যায়ক্রমে কার্যকরী অভিযান চালিয়ে পার্বত্য অঞ্চল হতে তাদের বিতাড়িত করতে নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযান অব্যাহত থাকবে। পরে অস্ত্রসহ আটকদের পুলিশে হস্তান্তর করা হয় বলে জানান, রাজস্থলীর চন্দ্রঘোনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আশরাফ উদ্দিন।
অপরদিকে পৃথক অভিযানে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক থেকে খাগড়াছড়ি যাওয়ার পথে গাপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি মোটরসাইকেলে আটকিয়ে দুই সন্ত্রাসীকে আটক করে সাজেক থানা পুলিশ। এ সময় বাঘাইহাট পুলিশ ক্যাম্পের সামনে আটক দুইজনের কাছ থেকে তল্লাশি চালিয়ে ৯৮০ রাউন্ড এসএমজি গুলি উদ্ধার করা হয় বলে জানান, রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শফিউল্ল্যাহ।
সাজেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনোয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ব্যবহৃত মোটরসাইকেলসহ আটকদের থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। মামলার পর তাদেরকে আদালতে চালান দেয়া হবে।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply