২৯ মার্চ ২০২৪ / ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / রাত ৮:২৮/ শুক্রবার
মার্চ ২৯, ২০২৪ ৮:২৮ অপরাহ্ণ

বিজয় মেলার নামে বাণিজ্যমেলা বন্ধ করা হউক

     

দেওয়ান মাকসুদ আহমেদ

এক দুর্নিবীত দুঃসময়ে ১৯৮৯ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় বীর বাঙ্গালির অহংকার এই স্লোগানকে ধারণ করে বিপ্লবাতীর্থ চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার যাত্রা সূচিত হয়। এই আয়োজন বাঙ্গালি জাতিসত্তার শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং আপামর বাঙ্গালির মহামিলন মেলায় পরিণত হয়। এই মেলায় জাতীয় কৃষ্টি ও ঐতিহ্যের রকমারী পসরা নিয়ে হাজির হতেন উৎপাদন ও পণ্য বিপননকারীরা। বিজয় মঞ্চে আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে উদ্ভাসিত হতো বীর বাঙ্গালির হিরণময় কীর্তিগাঁথা, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ফল্গুধারা। এতে অংশ নিতেন দেশ বরেণ্য বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা, ইতিহাসবিদ, শিক্ষাবিদ, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির রাজনীতিক, পেশাজীবি ও সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ। সকলের সহযোগে আয়োজিত এই বিজয় মেলা প্রজন্ম পরম্পরায় মহান মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনা পৌঁছে দিয়েছিল টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত। আজ অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত চিত্তে বলতে হচ্ছে সেই বিজয় মেলার আবেদন আজ নেই। নেই কোন আমেজ, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রটি কেমন যেন মলিন। এই বিজয় মেলা আজ বাণিজ্য মেলায় রূপান্তরিত হয়েছে। কিছু পেশাদার লোক এক কোটি পঞ্চাশ লক্ষ টাকা নিয়ে প্রশাসনের পরোক্ষ যোগ সাজাসে এই বিজয় মেলার নামে বাণিজ্য মেলায় রূপান্তিত করে টাকা ভাগ বাটোয়ারা করছে এবং নিজেদের পকেটে নিচ্ছে। এদের অধিকাংশই ভূঁয়া এবং পেশাদার মুক্তিযোদ্ধা। যখন সমগ্রজাতি স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি তথা শেখ হাসিনা সরকারকে পুনঃ নির্বাচিত করার মানসে ভোট যুদ্ধে লিপ্ত, যখন সরকার সুষ্ঠ শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের জাতীয় কুচকাওয়াজ স্থগিত করেছেন, যখন নির্বাচনকে বানচালের ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে সমগ্রজাতি এবং সরকার কঠোর দৃষ্টি রাখছে, ঠিক তখনই নির্বাচনের এই মুহুর্তে তথাকথিত বাণিজ্য মেলা করা কার স্বার্থে। এতে কি কোন নির্বাচন বানচাল কারীদের ষড়যন্ত্র চরিত্তার্থ হচ্ছে? আমাদের প্রশ্ন? প্রশাসন এই মুহুর্তে কিভাবে এই মেলা আয়োজনের অনুমতি দিলেন? কিছু পেশাদার দূর্নীতিবাজ মুক্তিযোদ্ধা এবং ভূঁয়া মুক্তিযোদ্ধার এই ধরণের বাণিজ্য মেলা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাবমুর্তি নষ্ঠ করবে ও করছে। আমরা স্পষ্ঠভাবে বলতে চাই, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনি মুহুর্তে জাতীয় নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ হতে না দিয়ে, এই নির্বাচনি যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আধুনিক বাংলাদেশ নির্মাণের প্রত্যয়ে নৌকা প্রতীক জয় যুক্ত করে ত্রিশ লক্ষ শহীদ এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার মানসে মানুষের দ্বারে দ্বারে শেখ হাসিনার উন্নয়নের ইতি কথা বলে ভোট ভিক্ষা করি। তাই আমাদের আবশ্যিক দায়িত্ব হলো বাঙ্গালি জাতিসত্তার অস্তিত্ব রক্ষায় আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রতীক নৌকার বিজয় নিশ্চিত করা। এই মূল্যবোধ থেকে বিজয় মেলার নামে মুক্তিযোদ্ধা লেবাসধারী দুর্বৃত্তদের লোভাতুর বাণিজ্যিক ধান্ধাবাজি বন্ধ করা হোক। বিবৃতি দাতা বীরমুক্তিযুদ্ধাগণ হলেন, বীর প্রতীক মোঃ খোরশেদ আলম, এনামুল হক চৌধুরী, মহিউদ্দিন রাশেদ, কমান্ডার মাহবুব, নুরুল হক বীর প্রতীক, জীতন্দ্র প্রসাদ নাথ মন্টু, শাহজাহান খান, মোঃ আবুল কাশেম, জাফর আহমদ, খলিল উল্লাহ সরদার, মনজুরুল আলম, মোঃ হোসেন, গোলাম রহমান, মোঃ মহিউদ্দিন চৌধুরী, শামছুল আলম, মোঃ শফি, আব্দুল মাবুদ, আলী আহমদ, জয়নাল আবেদীন, মনছুর রহমান, আবুল হাশেম, এনায়েত আলী, ফারুক আহমদ, আইয়ুব নাছের, সিরাউদৌল্লাহ, মনিরুল ইসলাম, আব্দুল সালাম, শ্যামল বরণ বড়ুয়া, মহিউদ্দিন ভূঁইয়া, মাখন চন্দ্র নাথ, এম এনামুল হক, রফিকুল ইসলাম, আব্দুল মোতালেব, হাজী মোঃ আবুল বশর, মোঃ ইউসুফ, নির্মল চন্দ্র নাথ, নুরুল হুদা, আবু তাহের, মোঃ ইলিয়াস খোকা, এস এম নুরুজ্জামান চৌধুরী, পংকজ কুমার দস্তিদার, কমান্ডার কাজী সিরাজ, এম রেজাউল করিম চৌধুরী, আবু আহমদ, নুুরুল ইসলাম, মোজাম্মেল হক, কমান্ডার মুহাম্মদ মিয়া প্রমুখ।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply