২০ এপ্রিল ২০২৪ / ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ৩:২৯/ শনিবার
এপ্রিল ২০, ২০২৪ ৩:২৯ পূর্বাহ্ণ

ঝুঁকির মধ্যে শত পরিবার লামায় এলোমেলো বিদ্যুৎ লাইন

     

মো.কামরুজ্জামান, লামা (বান্দরবান)
লামা পৌর শহর ও আশপাশের ঘনজনবসতিপূর্ন এলাকাগুলোতে এলোমেলো বিদ্যুৎ সংযোগ। হাই ভোল্টেজ ঝুঁকিপূর্ন বিদ্যুৎ লাইনগুলো বাসা-বাড়ি, মসজিদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উপরদিয়ে ছুঁয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ঘটনার মধ্যে রয়েছেন অনেক পরিবার। বিগত কয়েক বছর ধরে স্থানীয়রা সংশ্লিষ্টদের কাছে একাধিকবার ধর্না দিয়েও এর সুরাহা পায়নি। ২০১২ সাল থেকে এই উপজেলাসহ পাশের উপজেলা আলীকদম বিদ্যুৎ সম্প্রসারণ কাজ শুরু হয়ে ধাপে ধাপে এখনো চলমান রয়েছে ৩৩ হাজার লাইন স্থাপনের কাজ। লামা বিদ্যুৎ সঞ্চালক কেন্দ্র থেকে আলীকদম ও ইয়াংছামুখি লাইনগুলো একই সারিতে এনে দুর্ঘটনার কবল থেকে মুক্ত করার দাবী করেছে স্থানীয়রা।
সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখাযায়, ৮০’র দশকে স্থাপিত লামা বিদ্যুৎ সঞ্চালন কেন্দ্র থেকে আলীকদম ও ইয়াংছামুখি তিনটি পৃথক হাই ভোল্টেজ লাইন দেয়া হয়েছে। এসব লাইনগুলো স্থানীয়দের বাড়িঘর ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ছুঁয়ে যাওয়ায় বর্তমানে চরম ঝুঁকি বিরাজ করছে। এর ফলে বাড়ির আঙ্গিণায় সৃজিত গাছগাছালীর সংস্পর্শে অনেক দুর্ঘটনাও ঘটে চলছে। সম্প্রতি হাসপাতালপাড়ার এক প্রকৌশলী যুবক বাসার ছাঁদে উঠে গাছের নারিকেল পাড়তে গিয়ে জীবন হারাতে হয়েছে বিদ্যুৎস্পর্শে।
লামা পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড মধুঝিরি বিদ্যুৎ সঞ্চালন কেন্দ্রের কয়েক মিটর দক্ষিণে ফরেষ্ট অফিস জামে মসজিদের ছাঁদ ঘেসে, এর দশগজ পশ্চিম দিকে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা দিয়ে রয়েছে দু’টি ঝুঁকিপূর্ণ বৈদ্যুতিক খুঁটি। অথচ ফরেষ্ট মসজিদের আঙ্গিণা ঘেষে পূর্বপাশে প্রধান সড়কের পাশ দিয়ে বিদ্যুতের মুল লাইনটি আলীকদমমুখি সম্প্রসারিত হয়েছে। লামা ডিভিশনাল ফরেষ্ট অফিসের পশ্চিম পাশে মসজিদসহ আবাসিক ঘর-বাড়ির উপর দিয়ে ১১ হাজার কেভি হাই ভোল্টেজ তার ও বৈদ্যুতিক খুঁটি তিনটি লাইন দক্ষিণ দিকে বিপদজনকভাবে প্রবাহিত হয়েছে। বর্তমানে ৩৩ হাজার ভোল্টেজ’র খুঁটির স্থাপনের কাজ চলছে।
১৯৮০ ইংরেজিতে যখন এসব বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার স্থাপন করা হয়, তখন সেখানে তেমন কোন স্থাপনা কিংবা ঘর-বাড়ি ছিলনা। ফলে তৎকালীন সময়ে যত্রতত্র এলোমেলোভাবে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার স্থাপন করা হয়েছিল। বর্তমানে ওই এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকা হিসেবে গড়ে উঠেছে। ইতিমধ্যেই এলাকায় সরবরাহকৃত বৈদ্যুতিক লাইনের তারের নিচের জমি/পাহাড়ের ঢালুতে অনেক ঘরবাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে।
মানুষের জীবনমান উন্নয়নের পাশাপশি লামা উপজেলায় ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পৌরসভা। নগরায়নে উন্নীত হওয়ার আকাঙ্খা লালিত স্থানীয়রা পৌরসভা কর্তৃক গৃহ নির্মাণের নক্শা পাশ করণের মাধ্যমে বেশ কিছু ঘরবাড়ি (ইমারত) বিল্ডিং নির্মাণের কাজ করছেন। কিন্তু ঘর বাড়ি এবং স্থাপনা সমূহের সরাসরি উপর দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন ছুঁয়ে যাওয়ায় নির্মাণাধীন স্থাপনা সমূহের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। অপরদিকে পূর্বের স্থাপনাগুলোও চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
পৌর এলাকায় জায়গা-জমির দাম খুব বেড়ে যাওয়ার কারনে ৩/৪ শতাংশ, কেউবা ৫ শতাংশ জায়গা কিনে ঘর বাড়ি বানাচ্ছে। কম জায়গায় অনেকেই বহুতল ভবন তৈরী করছে। একদিকে কম জায়গা অন্যদিকে ঘর বা ছাদের উপর হাই ভোল্টের বৈদ্যুতিক তারের ঝামেলা। সূতরাং বহুতল ভবনের স্বপ্ন থাকলেও সমর্থবানরা বিদ্যুৎ লাইন বিড়ম্বনায় সে স্বপন পূরণ করতে পারছেন না।
নির্মানাধীন পাকা স্থাপনা বা ছাদের উপর দিয়ে হাই ভোল্টেজের তার যাওয়াতে এলাকাবাসী এখন মহা বিপদের সম্মুখিন। সমুহ দূর্ঘটনা এড়াতে এসব লাইনগুলো একই সারিতে পূন:স্থাপন করা না হলে আরো আকস্মিক প্রাণঘাতি দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে, এমন আশংকা স্থানীয়দের।
ইতিপূর্বে এসব বিষয় নিয়ে বহু অভিযোগ-অনুযোগ হয়েছে, কিন্তু কে শুনে কার কথা। কোথায় কার কাছে এর সমাধান মিলবে সে বিষয়টি টুকুও জানা নেই স্থানীয়দের।
অবিলম্বে লামা ফরেষ্ট মসজিদের পশ্চিমের ঝুঁকিপূর্ণ বৈদ্যুতিক খুঁটি ও হাই ভোল্টের লাইন স্থানান্তর করে একই সারিতে আনা প্রয়োজন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজরে আনার গনদাবী উঠেছে।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply