২৯ মার্চ ২০২৪ / ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / সকাল ৭:৪২/ শুক্রবার
মার্চ ২৯, ২০২৪ ৭:৪২ পূর্বাহ্ণ

আসুন শীতে ভিন্ন কিছু করি

     

মুহাম্মদ হাসান মাহমুদ
আর অল্প কিছুদিন পরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন।যাদের মুখে সদা শুনা যেত ধর্ম বিদ্বেষী কথা,তাদের মাথায় এখন সাদা টুপি ,লম্বা পাঞ্জাবী  উঠতে শুরু করেছে ,মুখে ধর্মের গুনগান  বাড়তে শুরু করেছে।পাশাপাশি হাত ও বেশ লম্বা হতে শুরু করেছে মানে দানশীলতা দেখাতে কোনো গরীব লোক টাকা চাইলে ১০০,৫০০,১০০০ টাকার নোট বের করে দিচ্ছেন।আবার অনেকে বাড়ি বাড়ি গিয়েও খোঁজ খবর নিতে শুরু করেছেন। টাকা পয়সা দান করছেন।
পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি নির্বাচনের কয়েকদিন আগে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নির্বাচনের প্রার্থীও বাড়ি বাড়ি গিয়ে কম্বল বিতরণ করেন , ভোট দিতে যাওয়ার জন্য ফ্রি ভ্যানের ব্যবস্থা করে দেন ,যাতে তাকে ভোট দেয়া হয় ।
যা হোক আজ আমার আলোচনার বিষয় এটি নয়। কাউকে আঘাত দেয়া বা কাউকে নিয়ে সমালোচনা করা ও নয়।তবে কেন বলেছি এ কথা গুলো? হ্যাঁ এবার তাহলে সে বিষয়ে আসি আর সে বিষয়ের সাথে জড়িত হওয়ার জন্য আমি শুধু এ রাজনৈতিক ব্যক্তিদের থাকতে বলব না।আমাদের সবাইকে যুক্ত হতে হবে ।তাহলে আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে পারব।
আমাদের বাংলাদেশ অতি ধনীতে বিশ্বে প্রথম যেমন,উন্নয়নশীল যেমন আবার সঠিক ভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে বিশাল এক গোষ্ঠী এখনো দরিদ্র রয়ে  গেছে তেমনভাবে।যারা রাস্তায় ঘুমান ঘরবাড়ি না থাকার কারনে কিংবা ভিক্ষা করেন জীবিকা নির্বাহের জন্য কিংবা তিন বেলা পেট পুরে খেতে পারেন না নতুবা ছেলে মেয়েদের পড়াশুনার খরচ জোগাতে পারেন না ।
শীতল আবহাওয়া শুরু হয়েছে।শীতের প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে।সামনে আরো বাড়বে।উত্তরবঙ্গের মানুষজন এবং যেসকল মানুষ রাস্তায় রাত্রি যাপন করেন তারা খুব ভালোভাবে বুঝেন শীত কত ভয়ানক ।শীতে কত কষ্ট পেতে হয় একমাত্র তারা খুব ভালোভাবে বুঝেন ।এ বছর যেহেতু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ে শীতের মৌসুম তাই বিভিন্ন সংস্থা-সংগঠনের পাশাপাশি  অনেক নেতা কাঁথা-কম্বল বিতরণ করবেন ।
কিন্তু একটি কম্বল বা কাঁথা প্রাণ কি  সমস্যার স্থায়ী সমাধান? কেন আমরা মানুষকে কম্বল বা কাঁথা  দেই? কারন তারা অর্থনৈতিক ভাবে অস্বচ্ছল।কিন্তু আমরা যদি এমন একটি কিছু করি যাতে তারা নিজেরাই তাদের কাঁথা কম্বল কিনে গায়ে জড়াতে পারবেন, নিজেদের আহারের ব্যবস্থা করতে পারবেন, নিজেদের সন্তানদের স্কুল কলেজের খরচ বহন করতে পারবেন।তাহলে কি করতে হবে?আমি বলব, আপনার ভোট প্রয়োজন আপনি কম্বল এ বছর না দিয়ে এমন কিছুর ব্যবস্থা করুন যাতে  স্থায়ী একটি সমাধান হয়।তাহলে এ জন্য কি করবেন? আপনার সকল দরিদ্রকে সাহায্য করার সামর্থ্য নেই? আপনি আপনার এলাকার একেবারে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বাছাই করুন ,তার ভিতর থেকে আপনি যাদের কে পারেন আপনার এলাকায় যে জিনিস মানুষ বেশি খায়,বেশি কিনে এমন একটি খুদে ব্যবসার ব্যবস্থা করে দিন।হতে পারে তা বাদামের ব্যবসা,পানের ব্যবসা,জাল মুড়ির ব্যবসা,চা বিক্রির ব্যবসা,সবজি বিক্রর ব্যবসা,গরম চানাচুর বিক্রির ব্যবসা।আর এ ব্যবসার ব্যবস্থা করতে  বেশি টাকার ও প্রয়োজন হবেনা প্রায় একটি কম্বলের দাম ই যাবে,হাজার খানেক টাকার ভিতরেই যা সম্ভব হবে।আর একবার আপনি যদি পদক্ষেপ নেন অন্যান্যরা ও আপনার দেখাদেখি এগিয়ে আসবে ।আর একটি কাজ করবেন যাদের কে সহযোগিতা করবেন তাদের কে একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিবেন ৬ মাস কিংবা এক বছরের জন্য।আর এ নির্দিষ্ট সময় শেষ হলে যাকে সাহায্য করা হবে তার ও  একজন অসহায় ব্যক্তিকে সহযোগিতা করতে হবে ।আর একটি বিষয় মনে রাখবেন আপনি কাউকে হাতে নগদ টাকা দিবেন না, দিলে খরচ করে ফেলবে আপনি তাকে আমি যে খুদে ব্যবসা গুলোর কথা বললাম সে রকম যে কোনো একটি ব্যবসার জিনিসপত্র কিনে দিবেন।আর ওই  চুক্তিপত্রটি নিবেন।যাতে কাজ করতে বাধ্য থাকেন।
আমরা যারা শিক্ষার্থী  তারা ও এ ধরণের উদ্যোগ নিতে পারি।প্রত্যেকে যে যা পারি ২০,৫০,১০০,২০০ টাকা দিয়ে সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ নিয়ে  প্রত্যেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে ।আসুন আমরা সবাই সাড়া দিয়ে এ ভাবে কাজ করি,আমরা যারা নেতা তারা শীতের সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে তাদের একটি স্থায়ী সমাধান দেই।যারা বিত্তশালী,অতি ধনী আমরা  তাদের(দরিদ্রদের) পাশে দাড়াই ভিক্ষার হাত দিয়ে নয় ,কর্মের হাত দিয়ে দাঁড়াই।
আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা বদলে দিবে সমাজ,বদলে দিবে দেশ।সবাই পাবে শিক্ষা, কেউ করবে না আর ভিক্ষা, দারিদ্রমুক্ত হবে বাংলাদেশ।সুন্দর হবে আগামী, তিনবেলা খেয়ে পরে সুন্দরভাবে বেড়ে উঠবে আগামী প্রজন্ম।একটি সুন্দর ভোরের অপেক্ষায় চেয়ে রইলাম তবে।
শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply