২৯ মার্চ ২০২৪ / ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৫:৫৯/ শুক্রবার
মার্চ ২৯, ২০২৪ ৫:৫৯ অপরাহ্ণ

যুক্তফ্রন্টের অনেক দাবির সঙ্গেই সরকার একমত: ওবায়দুল কাদের

     

যুক্তফ্রন্টের দেয়া অনেক দাবির সঙ্গেই সরকার একমত বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যুক্তফ্রন্টের সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সংলাপে বসেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট।

যুক্তফ্রন্টের নেতারা আলোচনায় বসেছিলেন সাত দফা দাবি নিয়ে। তাদের প্রথম দাবি ছিল- নির্বাচনে প্রার্থীদের জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করা। সংসদ ভেঙে দেয়া, সম্ভব না হলে নিষ্ক্রিয় রাখা।

এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের এমপি-মনিস্টিারটা নিজ নিজ এলাকায় উদ্বোধনের কাজ করে ফেলেছেন। আজকে ময়মনসিংহে প্রধানমন্ত্রী ১৯৬টি প্রকল্পের উদ্বোধন বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। এই সুযোগ যদি শিডিউলের পরে থাকত, তবে এতগুলো প্রকল্পে উদ্বোধনের কথা ছিল না।

যুক্তফ্রন্টের দ্বিতীয় দাবি ছিল- নির্বাচনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত কর্মচারীদের নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত করা। নির্বাচন কমিশনকে শতভাগ রাষ্ট্রপতির অধীনে রাখা। তফসিল ঘোষণার পর এমপিরা যাতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় কোনো প্রকল্প উদ্বোধন বা প্রতিশ্রুতি দিতে না পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া। প্রয়োজনে আইন করে মন্ত্রী ও এমপিদের সরকারি সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাহার করা। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের বিল বোর্ড, ব্যানার, পোস্টার অপসারণ করা।

এ ব্যাপারে কাদের বলেন, দুই নম্বরে তারা যেটা বলেছেন, তা আমরা মেনে নিয়েছি। … এ বিষয়গুলো গতবারও ছিল, এবারও থাকবে।”

যুক্তফ্রন্টের তিন নম্বর দাবির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা তো তিন নম্বর দাবি পুরোপুরি মেনে নিয়েছি। এখানে বলা হয়েছে- সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে। অনলটারনেটিভ তাদের একটা দাবি আছে-সংসদ নিষ্ক্রিয় করতে হবে। নিষ্ক্রিয়ের ব্যাপারে তো অলরেডি ডান। আমরা মেনে নিয়েছি। অলরেডি আমরা নিষ্ক্রিয়ের মধ্যেই আছি। আমরা সক্রিয় নেই।

যুক্তফ্রন্টের একটি দাবি ছিল- নির্বাচনের আগে ও পরে যাতে শান্তি-শৃঙ্খলার বিঘ্ন না ঘটে-সেজন্য সেনাবাহিনীকে নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে এবং নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পর পর্যন্ত মোতায়েন করতে হবে। ভোটের দিন সেনাবাহিনীকে সীমিত ক্ষমতা দিতে হবে যেমন, আটক রাখার ক্ষমতা ও ভোট কেন্দ্রে থাকা।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে বলেছেন, আমাদের সেনাবাহিনী নিয়ে অনেক খেলা হয়েছে। তারা এখন শান্তিরক্ষী বাহিনীতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে। এই সনোবাহিনীকে যত্রতত্র ব্যবহার না করাই ভালো। সেনাবাহিনী নিয়োগ হবে। তবে তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে থাকবে।

বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের এখনও জাতীয় নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহারের সক্ষমতা তৈরি হয়নি দাবি করে আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে তা ব্যবহারের বিরোধিতা করে আসছে যুক্তফ্রন্ট।

কাদের বলেন, ইভিএম একটি আধুনিক প্রযুক্তি। নির্বাচন কমিশন ইভিএম ব্যবহারে কতটা ভূমিকা রাখতে পারবে; সেটা স্পষ্ট না। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন কমিশনকে কিছু বলতে পারে না। তবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ইভিএম নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা রাষ্ট্রপতিকে জানাবেন। ইভিএম প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ইভিএম একটা আধুনকি প্রযুক্তি। এটা পার্লামেন্টে কোনো আইন কিন্তু পাস হয়নি। এটির সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করেছেন। এখন নির্বাচন কমিশন এ সময়ের মধ্যে কতটা ইভিএম ব্যবহারে ভূমিকা রাখতে পারবে সেটা একেবারেই পরিষ্কার নই।

তিনি বলেন, হয় তো সীমিত আকারে ইভিএম ব্যবহার হতে পারে। যেমন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দুই সেন্টার, তিন সেন্টারে তারা ব্যবহার করেছিলেন। সেরকম কোনো চিন্তা ভাবনা ইসির থাকতে পারে।

একটি দাবিতে যুক্তফ্রন্ট বলেছিল, নির্বাচন হতে হবে নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে। প্রয়োজনে এক দিনের জন্য সংসদ ডেকে জাতীয় সরকার গঠন করা যেতে পারে। অথবা মন্ত্রিপরিষদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বা জোট থেকে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়ে একটি সন্তোষজনক নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে। নির্বাচনে সকল প্রকার নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার অথবা বর্তমান সরকারের নির্বাচন বিষয়ে ক্ষমতা সীমিত করতে হবে।

এ বিষয়ে কাদের বলেন, যুক্তফ্রন্টের নেতারা সংলাপে সরকার পরিবর্তন বা নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে ‘জোর কোনো দাবি উত্থাপন করেনি’।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আজকের সংলাপে মনে হয়েছে তারা হ্যাপি।সৌজন্য যুগান্তর অনলাইন

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply