২০ এপ্রিল ২০২৪ / ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / দুপুর ১:০৩/ শনিবার
এপ্রিল ২০, ২০২৪ ১:০৩ অপরাহ্ণ

নির্বাচনের বাজেট ৭শ’ কোটি টাকা

     

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত করেছে ইসি।নির্বাচন পরিচালনার জন্য ৭০০ কোটি টাকা বাজেট অনুমোদন করেছে ইসি।  প্রথমবারের মতো প্রার্থীদের অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সুযোগ রাখা হচ্ছে। আগামী ৩০ অক্টোবরের পর যেকোন দিন তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক বৈঠক শেষে সচিব সাংবাদিকদের বলেন, সংসদ নির্বাচনের সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে সোমবার সকাল ১১টায় নির্বাচন ভবনে একাদশ জাতীয় সংসদের প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়।সভা শেষ হয় বিকাল ৫টায়। তফসিল ঘোষণার আগে অনুষ্ঠিত গুরুত্বপূর্ণ এই সভায় ভোটকেন্দ্র, ভোটার তালিকা, নির্বাচনী সামগ্রী সংগ্রহ, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ, প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়। এসব কার্যক্রমের পর্যালোচনার পাশাপাশি ৩৬ তম কমিশন সভায় ইসি সচিবালয়কে নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। তবে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের নির্বাচন নিয়ে পাঁচ দফা প্রস্তাব কমিশনের সভায় এজেন্ডাভুক্ত না হওয়ায় নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে সভা বর্জন করেন। তবে বাকী কমিশনারদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে বেশকিছু প্রস্তাবণা অনুমোদন করা হয় সভায়।
সভা শেষে নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের জানান, আরপিও সংশোধনী সংসদে পাস হলে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। আর সেনা মোতায়েন হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে তফসিলের পর।
একাদশ জাতীয় সংসদের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে ইসি সচিব বলেন, যে বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে সেগুলো চার ভাগ করে চারজন নির্বাচন কমিশনারকে তদারকির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ৩০০ আসনের ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রতিটি আসনের জন্য সিডি প্রস্তুত করে আঞ্চলিক অফিসে পাঠানো হয়েছে। এতে কোনো ভুলভ্রান্তি থাকলে তফসিল ঘোষণার আগে আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে কমিশনকে অবহিত করা হয় এবং সংশোধন করা হয় সে বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ১০টি নিয়ে হাইকোর্টে মামলা হয়েছে। এসব মামলার গতি প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং আইন শাখাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ৪০ হাজার ১৯৯টি ভোটকেন্দ্র প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর কমিশনের অনুমোদনক্রমে নির্বাচনের ২৫ দিন পূর্বে ভোটকেন্দ্রের গেজেট প্রকাশ করা হবে। বর্তমানে যে ভোটকেন্দ্র আছে তার অতিরিক্ত ৫ শতাংশ ভোটকেন্দ্র চিহ্নিত করার জন্য কমিশন নির্দেশনা দিয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোনো কারণে ভোটকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হলে এসব ভোটকেন্দ্র ব্যবহার করা হবে।
সচিব বলেন, ৭০০ কোটি টাকার বাজেট করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় খাতওয়ারি যে বাজেট করেছে তা কমিশন অনুমোদন করেছে। নির্বাচন সামগ্রী কেনাকাটার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক সামগ্রী গুদামজাত করা হয়েছে। ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বাকিগুলো সব পেয়ে যাব।
হেলালুদ্দিন আহমদ বলেন, এবছর অনলাইনের মাধ্যমে মনোনয়ন গ্রহণ করা হবে। হিজড়া জনগোষ্ঠীর আলাদা ভোটার তালিকা না থাকায় হিজড়াদের জন্য মনোনয়নপত্রে আলাদা কলাম রাখা হবে না। দেশি এবং বিদেশি পর্যবেক্ষকদের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। আগামী কমিশন সভায় অনুমোদন দেয়া হবে। নির্বাচনী ফলাফল কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে ঘোষণা করা হবে। এজন্য প্রযুক্তির সহায়তা নেয়া হবে। সভায় ভোটগ্রহণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
ইসি সচিব বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রশাসন ও পুলিশসুপারসহ প্রশাসনের কোথাও যেন পদ খালি না থাকে সেজন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন কারণে উপজেলা নির্বাচন অফিসারের পদ খালি থাকবে। আগামীতে বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাকে উপজেলা নির্বাচন অফিসারের দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়োগ দেয়া হবে। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুতের জন্য নির্বাচন কমিশন নির্দেশনা দিয়েছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অতিরিক্ত দশভাগ রেখে এই তালিকা প্রণয়ন করা হবে।
সচিবের মতে, বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা বিশেষ করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা সকল ধরণের কর্মকর্তাদের ব্রিফিং ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রিটার্নিং অফিসারদের নিয়ে ৮টি বিভাগে ৮টি আঞ্চলিক সভা হবে। তিন পার্বত্য জেলা মিলে একটি বিশেষ সভা হবে। সব মিলিয়ে ১০টি সভা হবে। সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনাররা এসব মিটিংয়ে যাবেন।
সচিব জানান, আগামী ২৭ অক্টোবর ৯টি অঞ্চলে ইভিএম মেলা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে দুইদিনব্যাপী ইভিএম মেলা হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এবং আরপিও সংশোধন হলে আমাদের ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তুতি রয়েছে। সংশোধন না হলেও সে প্রস্তুতি আমাদের আছে।
সংসদ নির্বাচনের তফসিল প্রসঙ্গে ইসি সচিব বলেন, তফসিলের বিষয়ে সভায় কোনো আলোচনা হয়নি। ৩০ অক্টোবরের আগে আরেকটি সভা হবে সেখানে তফসিল বিষয়ে আলোচনা হবে। ৩০ অক্টোবরের পর যে কোনো সময়ে তফসিল ঘোষণা হতে পারে।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply