২০ এপ্রিল ২০২৪ / ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ২:৪৯/ শনিবার
এপ্রিল ২০, ২০২৪ ২:৪৯ পূর্বাহ্ণ

নির্বাচন ও উন্নয়ন – মাহমুদুল হক আনসারী

     

নির্বাচনের সাথে উন্নয়নের সম্পর্ক।প্রার্থীর সাথে দলের সম্পর্ক।উন্নয়নের সাথে দেশ ও জনগণের সম্পর্ক।নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া অন্য কেউ উন্নয়ন করতে পারে না।উন্নয়ন আর নির্বাচন দুর্নীতিমুক্ত না হলে সেখানে সঠিক উন্নয়ন জনগণ দেখতে পায় না।নির্বাচনের সাথে নির্বাচনী দলের সম্পর্ক।যাদের নিবন্ধন আছে তারাই দলীয়ভাবে তাদের প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে।নির্বাচনে জয় পরাজয় প্রার্থী ও দলের জন্য থাকলেও সেক্ষেত্রে প্রার্থী মনোনয়নে কতিপয় গুণাবলী দলের দেখার প্রয়োজন আছে।আমাদের দেশে নির্বাচন আসলে নানা শ্রেণী পেশার মানুষের নির্বাচনমুখী দৌড় ঝাপ শুরু হয়ে যায়।বড়বড় দলের নমিনেশন পেতে কোটি কোটি টাকার লেনদেন করতেও পিছু হটে না।নির্বাচনে একবার জয়ী হতে পারলেই লাভ লোকসান একসাথে দুই হাতে আয় করা সম্ভব।কতিপয় দল গণতন্ত্রের নামে যাদের নূনতম রাজনৈতিক অভিঞতা দূরদর্শিতা, দেশপ্রেমিক ও মাতৃভূমির প্রতি দায়িত্বশীল বিন্দুমাত্র ভূমিকা নেই এমন ধরনের প্রার্থীও নির্বাচনের প্রার্থী হতে দেখা যায়।যাদের হাতে অবৈধ টাকার পাহাড় তারা অর্থ দিয়ে বড়বড় দলের নীতি নির্ধারকদের বশ করে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে যেতে দেখছি।কাড়ি কাড়ি অর্থ খরচ করে ভোটারদের ভোট আদায় করতে দেখা যায়।এসব প্রার্থী জাতীয় সংসদে গিয়ে এলাকার সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানে দুই মিনিট গোছালো বক্তব্যও রাখতে পারে না।তারা সংসদীয় এ সময়ে নিজেদের ব্যবসা বাণিজ্য ও পরিবারকে গোছাতেই ব্যাস্ত থাকে।তাদের ব্যবসা শতশত গুণ বেড়ে যায়।জনগণ এবং উন্নয়নের সাথে তাদের দেখা মিলে না।কারণ যে পরিমাণ অর্থ খরচ করে তারা নির্বাচিত হয়েছে অবশ্যই তার চৌদ্দ গুণ অর্থ ব্যবসা তাদের অর্জন করতে হবে।বাংলাদেশের তৃণমূল থেকে জাতীয় সংসদ পর্য্ন্ত নির্বাচনের এমন প্রার্থী পরিক্রমা জনগণ দেখতে পায়।এ ধরনের পক্রিয়া ছোট বড় সবগুলো দলের মধ্যে বিদ্যমান।এসব রাজনৈতিক মনোনয়ন জনগণ ভালো চোথে দেখে না।তারপরও রাজনৈতিক দলগুলো এ ধরনের আদর্শ ও নীতিহীন কতিপয় প্রার্থী জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়।এক্ষেত্রে কোনো কোনো এলাকা থেকে প্রার্থীর বিজয় দেখা গেলেও বহু এলাকায় প্রার্থীর ভরাডুবি দেখা যায়।আসলে নির্বাচন ও ক্ষমতার পালাবদলের উদ্দেশ্য হওয়া চায় উন্নয়ন।দেশ এখন উন্নয়নের পথে এগোচ্ছে।শহর, গ্রাম, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পর্য্ন্ত উন্নয়নের ছোয়া দেখা যাচ্ছে।উন্নয়ন রাষ্ট্রীয়ভাবে নিজস্ব গতিতে চলছে।বলতে গেলে উন্নয়নের একটা গতি শুরু হয়ে গেছে।এ গতিকে কেউ ইচ্ছে করে থামাতে পারবে না।নতুন প্রজন্ম উন্নয়ন অগ্রগতিতে বিশ্বাসী।দৃশ্যমান উন্নয়ন অগ্রগতিকে তারা সাধুবাদ জানাচ্ছে।অফিস আদালতে আগের মতো যুগ যুগ ধরে ফাইন মামলা বন্দি থাকে না।যেকোনো ঘটনা দুর্ঘটনায় সাথে সাথে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে।ব্যবসা বাণিজ্য সেবা প্রতিষ্টানের ইচ্ছেমাফিক ভোগান্তির দিন শেষ।অন্যায় অবিচার জুলুম করলেই সাথে সাথে এখন তাদেরকে বিচারের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।যতই প্রভাবশালী আর ক্ষমতাধর হোক না কেনো বর্তমান সরকার নিজ দলের হলেও এক্ষেত্রে ছাড় দিচ্ছে না।এতে করে এ প্রজন্মের ভোটারের নিকট সরকারের জনপ্রিয়তা বাড়ছে।উন্নয়ন এবং শৃংখলায় দেশ যেভাবে সামনের দিকে এগোচ্ছে এতে করে সরকারের সাফল্য ও প্রশংসা জনগণের কাছে বাড়ছে।শহর থেকে গ্রাম পর্য্ন্ত তথ্য প্রযুক্তি এবং কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই সরকারের সব ধরনের তথ্য বিজ্ঞপ্তি হাতের নাগালেই পেয়ে যাচ্ছে।ছাত্র আন্দোলন রাজনৈতিক হানাহানি সহিংস কর্মসূচী নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।জনগণ তাদের কর্মযজ্ঞ চালিয়ে দিন যাপন করতে বাধা পাচ্ছে না।নির্দিধায় অসংকোচে জনগণের পথচলা নির্বিঘ্ন হয়েছে।নির্দিষ্ট শ্রেণী ও পেশার মানুষ ছাড়া অন্য জনগণ প্রশাসন ও পুলিশের হয়রানির শিকার হচ্ছে না।দোকান মার্কেট প্রতিষ্টানে একসময় সন্ত্রাসী চাদাঁবাজদের ভয়ে ব্যবসা করতে পারত না।এখন সে ধরনের পরিবেশ খুব কমই পাওয়া যাবে।ব্যবসার সাথে যারা সম্পৃক্ত তাদের বক্তব্য তারা ভালোভাবে ব্যবসায়িক কার্য্ক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।ইচ্ছেমতো স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় মাসের পর মাস অবরোধ রেখে শিক্ষা কার্য্ক্রম বন্ধ রেখে শিক্ষা জীবন ধ্বংস করার কর্মসূচী এখন আর কেউ করতে পারে না।রাজনীতির নামে ধ্বংসাত্মক কর্মসূচী প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে আছে।সরকারি বেসরকারি সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্টান এখন তাদের নিজস্ব নিয়মনীতিতে সুশৃংখলভাবে পরিচালিত হচ্ছে।সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ মাদক বেচা বিক্রি প্রায় নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে।সরকারের কঠোর পদক্ষেপ এবং মনোবলের কারণে এসবসম্ভব হচ্ছে।একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিকটেই চলে আসছে।ভোট নাগরিকের মৌলিক অধিকার।ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন হয়।এ পরিবর্তন যেনো দুর্নীতিকে এগিয়ে না আনতে পারে।অব্যাহত উন্নয়নের শৃংখলা ধরে রাখতে হবে।উন্নয়নে অর্থ দুর্নীতির মাধ্যমে যাতে অন্যের পকেটে ঢুকতে না পারে সে দায়িত্ব কঠিনভাবে পালন করতে হবে জনগণকে।যুগ যুগ ধরে যারা দুর্নীতির মাধ্যমে পকেট ভর্তি করেছে, আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে এ জাতীয় প্রার্থীদের বয়কটকরতে হবে।তাদের সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে রাজনৈতিক দল এবং জনগণকে।আগামী জাতীয় নির্বাচনে যেসব দল অংশগ্রহণ করবে তারা যেনো সৎ যোগ্য আদর্শবান দেশপ্রেমিক লোককে মনোনয়ন দেয়।অর্থ আর কালো টাকার দাপঠে যেনো চোরা কারবারি মাদক পাচারকারি দুর্নীতিগ্রস্ত কেউ যেনো প্রার্থী হতে না পারে।সে বিষয়ে রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনকে কঠোর হতে হবে।অব্যাহত উন্নয়নের ধারা ধরে রাখতে হলে অবশ্যই গতিশীল দায়িত্বশীল দেশপ্রেমিক সরকার দরকার।যাদের পক্ষে উন্নয়ন এবং দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব তাদেরকেই ক্ষমতায় প্রতিষ্টা করা জনগণের দায়িত্ব।কোনো ধরনের দেশি বিদেশী ষড়যন্ত্র আর চক্রান্ত যেনো দেশের উন্নয়নের গতিকে থামিয়ে দিতে না পারে সে দায়িত্ব জনগণকে সঠিকভাবে পালন করতে হবে।উন্নয়ন দেশ বিরোধী সমস্ত চক্রান্ত ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে চ্যালেন্জ হিসেবে নিয়ে জাতিকে সফল হতে হবে।এ সফলতার মাধ্যমে আগামী দিনের জাতীয় সমস্যা কোটি কোটি শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠী যাতে কর্মসংস্থান পায় সে চিন্তা এখন থেকে করতে হবে।প্রতিবছর সবগুলো বাজেটে অধিক হারে কর্মসংস্থান তৈরী করতে হবে।ইতিমধ্যেই সারা পৃথিবীতে শ্রম রপ্তানীর পথ ছোট হয়ে আসছে।হু হু করে পৃথিবী ব্যাপি বেকার কর্মসংস্থান সংকুচিত হয়ে আসছে।এসব চিন্তা পরিকল্পনায় এনে আগামী নির্বাচিত সরকারকে কর্মসংস্থানের অধিক গুরুত্ব দিয়ে বাস্তবায়ন করতে হবে।শ্রমশক্তি বিদেশে রপ্তানী না করে নিজ দেশেই আত্মমর্যাদার সাথে শিক্ষিত যুব শক্তিকে কাজে লাগাতে পারলেই দেশ আর কারো মুখাপেক্ষী হবে না।স্বাধীন বাংলাদেশ স্বাধীনভাবে মাথা উচু করে বিশ্বকে দেখাবে।অতএব একাদশ জাতীয় নির্বাচন দেশের স্বাধীনতার স্বার্বভৌমত্ব ও জনগণের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি নির্বাচন।অতীতের যেকোনো নির্বাচনের চেয়ে এ নির্বাচন অধিক গুরুত্ববহন করে।তাই দেশ ও জনগণ সরকারের স্বার্থেই দুর্নীতিবাজ কালো টাকার মালিক অসৎ শ্রেণীর লোক ও দলকে বয়কট করার শপথ এখন থেকেই গ্রহণ করতে হবে।তাহলেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে।দুর্নীতির শক্তি দুর্বল হবে এবং মাথাছড়া দিয়ে উঠতে পারবে না।এ দায়িত্ব সম্মিলিতভাবে দেশপ্রেমিক সকল শ্রেণী ও পেশার মানুষকে পালন করতে এগিয়ে আসতে হবে।তবেই নির্বাচন ও উন্নয়ন জাতির জন্য সফলতা বয়ে আনবে।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply