২৬ এপ্রিল ২০২৪ / ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ভোর ৫:১৮/ শুক্রবার
এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ৫:১৮ পূর্বাহ্ণ

অভিভাবকগণ আতঙ্কিত রামগঞ্জে মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের বলাৎকার

     

রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
রামগঞ্জে মাদ্রাসার শিক্ষক কতৃক একের পর এক শিশু শিক্ষার্থীদের বলাৎকারের ঘটনায় ফুসে উঠেছে অভিভাবকগণ।
এহেন নেক্কারজনক ঘটনা জানাজানি হলে উক্ত মাদ্রাসায় পড়–য়া শিশুদের নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন মা-বাবা। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে মাদ্রাসা থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য বাবা-মা মাদ্রাসা কতৃপক্ষকে তাগিদ দিলেও মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুল কাশেম অভিভাবকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে রাতের আঁধারে অভিযুক্ত শিক্ষককে বের করে দেয়। ঘটনাটি ঘটেছে রামগঞ্জ পৌর বাস টার্মিনালের পূর্ব পাশ্বে সেকান্দর ভবনের ২য় তলার হযরত ওমর ফারুক (রাঃ) মাদ্রাসায়। এ ব্যপারে রামগঞ্জ থানায় নির্যাতিত শিশুর মা ও নিকটাত্মীয়রা রামগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলেও অজ্ঞাত কারনে মামলা না করেই তারা থানা থেকে চলে আসেন।
রামগঞ্জ পৌর উত্তর কলচমা গ্রামের নির্যাতিত শিশুর মা জানান, আমার ছেলে স্কুলে ভালো ছাত্র ছিলো, বৃত্তিও পেয়েছে স্কুলে থাকতে। ছোট বেলায় নিয়ত করেছি ছেলেকে হাফেজী পড়াবো। আমার বোন ও ভাইয়ের ছেলেসহ আমার ছেলেকে হযরত ওমর ফারুক (রাঃ) মাদ্রাসায় ভর্তি করাই। বর্তমানে উক্ত মাদ্রাসা থেকে নাজেরা শেষ করেছে।
সম্প্রতি রমজানের ঈদের পর আমার ছেলে ছুটিতে বাড়ীতে আসার পর আমার ছেলেসহ অন্য দুইজন ছাত্র মাদ্রাসা যেতে না চাইলে তাদেরকে বার বার জিজ্ঞাসা করলেও তারা কোন উত্তর না দিয়ে জানায় হুজুর আমাদের মারধর করে। দুইদিন পর মাদ্রাসার জাহাঙ্গীর আলম (পঞ্চগড়ের হুজুর) ছাত্রটির মায়ের মোবাইলে কল করে কলচমা গ্রামের মৃধ্যা বাড়ীর প্রবাসীর সন্তান উক্ত মাদ্রাসার ছাত্রের সাথে প্রায় ত্রিশ মিনিট কথা বলে। দীর্ঘসময় কথা বলায় মা ও ভাইয়ের সন্দেহ হলে তারা আড়াল থেকে মূল ঘটনা জানতে পারেন।
এসময় অন্য দুইজন ছাত্রকে চাপ দিলে তারা জানান, প্রতি রাতে পঞ্চগড়ের হুজুর জাহাঙ্গীর আলম আমাদের তার রুমে ডেকে নিয়ে যায়, এবং খারাপ আচরন করে। ঘটনাটি কাউকে জানালে তাদের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। এ ঘটনায় যদি তাদের কোন বাচ্চা হয়, তাহলে হুজুর বলছে বিয়ে করবে!
পরদিনই তাদের অভিভাবকগণ বিষয়টির সত্যতা জানতে উক্ত শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসা পাঠানো হলে, একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অবগত করলেও তারা কোন পদক্ষেপ না নেয়ায়, অভিভাবকগণ রামগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিতে গিয়েও ফিরে চলে আসে।
পরবর্তিতে অভিভাবকগণ ৩জুলাই বিষয়টি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুল কাশেমকে জানিয়ে নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের বাড়ীতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বললে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুল কাশেম তাদেরকে বিষয়টি কাউকে না জানাতে হুমকি দিয়ে বলেন, আমরা এখানে ভেসে আসিনি। আপনারা আমাদের মাদ্রাসার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। আপনারা বললে তো হবে না। পরে
স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় উক্ত শিক্ষার্থীদের তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় দিতে এক প্রকার বাধ্য হন অধ্যক্ষ।
বিষয়টি জানতে মাদ্রাসার গেলেও অভিযুক্ত শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের কোন বক্তব্য নেয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুল কাশেম জানান, আমরা অভিভাবকদের অভিযোগ পেয়ে উক্ত শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে আমরা ঘটনার সত্যতা পেয়ে তাকে মাদ্রাসা থেকে বের করে দিয়েছি। তার বাড়ী পঞ্চগড়ে। আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ১১৫জন। আপনারা লেখালেখি কইরেন না, চা পানির খরছ দেয়া হবে। এছাড়া বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যাক্তির নাম বলা হয় ঘটনাটি ভীন্নখাতে প্রভাহিত করতে।
রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তোতা মিয়া জানান, আমার কাছে এসে ঘটনাটি বলেছেন। তাদেরকে বলেছি লিখিত দেয়ার জন্য। কিন্তু তারা আর আমার কাছে আসেনি বা লিখিত কোন অভিযোগও দেয়নি।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply