২৪ এপ্রিল ২০২৪ / ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সন্ধ্যা ৬:৫৯/ বুধবার
এপ্রিল ২৪, ২০২৪ ৬:৫৯ অপরাহ্ণ

খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ এর চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত  সবার জন্য খাদ্য ও পুিষ্ঠর নিরাপত্তা চাই, খাদ্য অধিকার আইন চাই

     

সরকারের পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ি দেশের ৪ কোটি দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করে এবং এর মধ্যে ২ কোটি লোক অতিদরিদ্র। দৈনিক ২১২২ ক্যালরী খাবার কিনতে অক্ষম তারাই দরিদ্র। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ২০৩০(এসডিজি)র উন্নয়ন কাঠামোর অন্যতম লক্ষ্য হলো ২০৩০ সালের মধ্যে সব ধরনের দারিদ্রের অবসান এবং আগামী ১৫ বছরের মধ্যে ক্ষুদামুক্তির অঙ্গিকার। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ খাদ্য অধিকার ও পুষ্ঠি নিরাপত্তার বিষয়ে সমর্থন দিয়ে ক্ষুদ্র মুক্ত বিশ্ব গড়ার প্রত্যয় ঘোষনা করে এসডিজি অনুমোদন করেছেন। আর এসডিজি বাস্তবায়নে প্রয়োজন রাজনৈতিক অঙ্গিকার ও সহযোগিতামুলক আইন ও নীতি। নীতি ও আইন যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। তাই এসডিজির মুল লক্ষ্য অনুযায়ী দেশে সবার খাদ্য নিশ্চিত করতে দ্রুত খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন দরকার। সবার জন্য খাদ্য ও পুষ্ঠির নিরাপত্তা বিধান ও খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে চট্টগ্রামে খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ এর চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ০৯ এপ্রিল নগরীর জুবলী রোড়স্থ তাইওয়া রেস্টুরেন্ট এ প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়। খাদ্য অধিকার আন্দোলন চট্টগ্রামের সভাপতি এস এম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে সভায় মুখ্য আলোচক ছিলেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ এর সাধারন সম্পাদক মহসিন আলী ও যুগ্ন সম্পাদক রতন সরকার। আলোচনায় অংশনেন খাদ্য অধিকার আন্দোলন কুমিল্লার সভাপতি মাহবুব মোর্শেদ, চট্টগ্রামের সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, বিবাড়ীয়া জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, বান্দারবানের সাধারন সম্পাদক শান্তিময় তঞ্চ্যাংগা, চট্টগ্রাম জেলা কমিটির জেসমিন সুলতানা পারু, জান্নাতুল ফেরদৌস, অজয় মিত্র শংকু, আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, তৌহিদুল ইসলাম, ফারহানা জসিম, জানে আলম প্রমুখ।
 
বক্তাগন বলেন বর্তমান সরকার ও বিভিন্ন জাতীয়-আর্ন্তজাতিক উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগের কারনে দেশে খাদ্য নিরাপত্তায় ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হলেও নিরাপদ খাদ্যের বেলায় মারাত্মক হুমকিতে আছে। বাংলাদেশের সংবিধানে সবার জন্য খাদ্য অধিকারের কথা বলা হলেও এ পর্যন্ত সকলের জন্য খাদ্য অধিকার আইন প্রণীত হয়নি। ২০০৭ সালে আঞ্চলিক খাদ্য নিরাপত্তা সংরক্ষনাগার হিসাবে সার্ক ফুড ব্যাংক গঠন করা হয়। খাদ্য উৎপাদন ও বিপনণে বহুজাতিক কোম্পানী গুলির একছত্র আধিপত্য সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। আর সে কারনে বিগত বিশ বছরে দেশে খাদ্যের মুল্য বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুনেরও অনেক বেশী, মোটা চালের দাম বিগত ০১ বছরে দ্বিগুনেরও বেশী বৃদ্দি পেয়েছে। অথচ মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের মতো উন্নত দেশগুলিতে খাদ্যের মূল্য সেভাবে বাড়েনি। অন্যদিকে প্রকৃত কৃষক তার উৎপাদিত খাদ্য পণ্যের ন্যায্য মুল্য পাচ্ছে না, যা মধ্যস্বত্বভোগী ও ফাড়িয়ারা এবং খাদ্য ব্যবসবায়ীরাই সিংহভাগ হাতিয়ে নিচ্ছে। ফলে দেশীয় কৃষক প্রতিবছরই লোকসান গুনছে। সেকারনেই সবার জন্য খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা প্রদানে রাস্ট্রকে বাধ্য করতে ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার তাগিদ দেন।  
 
সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন, নিরাপদ খাদ্য আইনের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে ভেজালমুক্ত ও নিরাপদ খাদ্যের যোগান নিশ্চিতকরণ, নিরাপদ খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম জোরদার, স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠির জন্য রেশনিং ব্যবস্থা এবং সরকারি বণ্টন ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ, কৃষিতে ভর্তুকির মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা এবং প্রান্তিক কৃষক ও বর্গাচাষীদের সরাসরি ভর্তুকির আওতায় আনা, প্রান্তিক কৃষক এবং বর্গাচাষীদের নিয়ে সমবায় গড়ে তোলার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা জোরদার, সমবায়ভিত্তিক কৃষিব্যবস্থার উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, কৃষিপণ্যের সঠিক মূল্য নিশ্চিতকরণ, সকল পর্যায়ে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা, নারী কৃষকদের স্বীকৃতি ও তাদের অধিকার নিশ্চিতকরণ, নারী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, পশু পালনকারী, জেলেদের মতো জনগোষ্ঠীর জন্য ভূমি নিরাপত্তা, শিক্ষা, আর্থিক লেনদেনসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার উৎস নিশ্চিতকরণ, খাদ্য সংকট মোকাবিলায় সরকারকে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ নিশ্চিত করা, কৃষি উৎপাদনে পরিবেশের ভারসাম্য নিশ্চিত করে জলবায়ু পরিবর্তন, প্রতিকুল আবহাওয়া, বন্যা, খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে যাতে ফসল টিকে থাকতে পারে তা নিশ্চিত করা; ২০২০ সালের মধ্যে বীজ, শস্য, পালন করা পশুর জিনগত বৈচিত্র বাড়ানোয় কাজ করা; বিশ্ব খাদ্য পণ্যের বাজারে দাম স্থিতিশীল ও ক্রেতার হাতের নাগালের মধ্যে রাখতে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ, কৃষিভিত্তিক গবেষণা ও প্রযুক্তি উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোর কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর দাবী জানানো হয়। প্রতিনিধি সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলার ৩০ জন অংশগ্রহনকারী অংশনেন।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply