১৬ এপ্রিল ২০২৪ / ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ১০:৫৫/ মঙ্গলবার
এপ্রিল ১৬, ২০২৪ ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ

আল্লামা সফিরুর রহমান হাশেমী (রহ:)’র ওরশ শরীফ কাল

     

আগামীকাল ৫ মে ফৌজদারহাট দরবার শরীফে শায়খুল হাদীস আল্লামা সফিরুর রহমান আল- হাশেমী (রহ:) ওরশ মোবারক অনুষ্ঠিত হবে।উক্ত মাহফিলে ওয়ায়েজিন হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসার প্রধান ফকিহ আল্লামা ওছিয়র রহমান, জামাতা ড আল্লামা কামাল উদ্দিন আজহারী সাহেব,হযরত খাজা কালুশাহ (রহ:) মসজিদের খতিব আল্লামা আবুল হাসান ওমাইর রেজভী সাহেব ও ওলামায়ে কেরামবৃন্দ পৃথিবীর সর্বত্র স্থানে নবী-রাসূলের আগমন ঘটেছে। কিন্তু বাংলার জমিনে কোন নবী-রাসূলের আগমন ঘটেনি। এই দেশে ইসলাম প্রচার করেছেন আউলিয়া কেরাম। ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রাম সীতাকুন্ড উপজেলা ফৌজদারহাট এলাকায় পিতা আল্লামা ওবাইদ উল্লাহ হাশেমী (রহঃ) ও মাতা বিবি শরফুন্নিসার গর্ভে ইসলাম প্রচার করার জন্য এক মহান আল্লাহর ওলী জন্মগ্রহন করেছেন যার নাম শাইখুল হাদিস আল্লামা শাহ সফিরুর রহমান আল-হাশেমী (রহ:)। তিনি পিতৃ ও মাতৃকূলে নবী কারীম (স:) ও আবু বকর সিদ্দিক (রা:) এর ৩৩ ও ৩৫তম বংশধর। মাত্র সাত বছর বয়সে মাতৃহারা হওয়ার পর তিনি পিতার তত্ত্বাবধানে পবিত্র কোরআন শিক্ষায় আত্মনিয়োগ করেন। পিতার ইন্তেকালের পর উচ্চ শিক্ষার্থে ভারত গমন করে জৈনপুর,বানারস হয়ে উত্তর প্রদেশের রায়পুর শরীফে মাদ্রাসা আলীয়া-তে এ ভর্তি হন,সেখান থেকে তিনি মাওলানা ,মুফতি,মোহাদ্দেস উপাধিতে ভূষিত হন। চার বছর হাদিস শাস্ত্রে উপর গবেষনা করেন। পরে তিনি হেকিমী শাস্ত্রও অধ্যয়ন করেন। অতি অল্প সময়ের মধ্যে দৃষ্টান্ত কঠোর রেয়াজতের মাধ্যমে মারিফাতের উচ্চমার্গে পৌছে পীরের খেলাফত সৌভাগ্য অর্জন করেন। তিনি ছিলেন হাদিস বিশেষজ্ঞ। প্রায় চুয়াল্লিশ সহিহ হাদিস তার কন্ঠস্থ ছিল। যে কারণে সাধারণ জনগোষ্ঠি এবং আলেম সমাজে তাকে পরম সম্মান ও শ্রদ্ধার সাথে একবাক্যে মোহাদ্দেস ছাহেব বলেই সম্বোধন করত। তখনকার সময়েঅতি অল্প সময়ের মধ্যে দৃষ্টান্ত কঠোর রেয়াজতের মাধ্যমে মারিফাতের উচ্চমার্গে পৌছে পীরের খেলাফত সৌভাগ্য অর্জন করেন। তিনি ছিলেন হাদিস বিশেষজ্ঞ। প্রায় চুয়াল্লিশ সহিহ হাদিস তার কন্ঠস্থ ছিল। যে কারণে সাধারণ জনগোষ্ঠি এবং আলেম সমাজে তাকে পরম সম্মান ও শ্রদ্ধার সাথে একবাক্যে মোহাদ্দেস ছাহেব বলেই সম্বোধন করত। তখনকার সময়ে আন্দরকিল্লাহ শাহী জামে মসজিদে খতিব সৈয়দ মাওলানা আবদুল হামীদ বোগদাদী (রহঃ) পালেস্টাইন যুদ্ধে জিহাদ করার জন্য সিদ্ধান্ত নিলেন। যাওয়ার সময় হাশেমী ছাহেবের পান্ডিত্য ও ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হয়ে তাহার স্বীয়পদের দায়িত্ব দিয়ে যান। দীর্ঘ আট বছর মসজিদের খতিব হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। একজন আদর্শ ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ও দীক্ষা গুরু হিসেবে আল্লামা সফিরুর রহমান হাশেমী (রহঃ) ইংরেজ শাসিত পরাধীন ভারতবর্ষে ,এমনকি সদ্য স্বাধীন পাকিস্তান আমলের শুরুতেও একান্ত দ্বীনী প্রয়োজন রাজনীতির ক্ষেত্রেও দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী আদর্শ ভূমিকা পালন করেছিলেন। বিশ্বব্যাপি মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের প্রতীক ‘খেলাফত আন্দোলন’ ভারতবর্ষে মুসলমানদের সত্বন্ত্র আবাসভূমির আন্দোলন ‘পাকিস্তান আন্দোলন’ এ তিনি সচেতন প্রয়াসে অংশগ্রহন করেছিলেন। তিনি সুন্নতের নিতান্ত পাবন্দ,ন্যায় ও নীতিবান,স্বাধীনতা,হক্ব ও সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত মহাপুরুষ,অন্যায় ও বাতিলের সাথে আপোষহীন ছিলেন। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের তথা সুন্নি আকিদ্বার উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। হাশেমী ছাহেবের সাথে ইমাম আহলে সুন্নাত আল্লামা গাজী শেরে (রহঃ) ,আল্লামা কাজী নুরুল ইসলাম হাশেমী ছাহেবের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। আন্দরকিল্লাহ শাহী জামে মসজিদ চত্ত্বরের একটি কক্ষে হাশেমী দাওয়াখানা প্রতিষ্ঠা করে হেকিমী ব্যবসা আর একটি কক্ষে খানকায়ে সফিরিয়া তরিকতের কর্মকান্ডে চালাতে থাকেন। বাংলাদেশে নক্সবন্দীয়া মোজাদ্দেদীয়া তরিকার প্রচারে যে সমস্ত সূফিবাদক অনন্যসাধারণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তাদের মধ্যে মাওলানা সফিরুর রহমান হাশেমী (রহঃ) এর নাম উল্লেখ্যযোগ্য । তার পবিত্র খানকায় শরীফে মুরিদগন অত্যন্ত উচ্চ নিতবত সমূহ লাভ করেছিলেন এদের মধ্যে ১৩ জন কামিল মোকাম্মেল মুরিদ জীবদ্দশাতেই আল্লাহর মকবুল বান্দা হিসেবে অভিষিক্ত হয়ে উঠেছিলেন। শিক্ষাকতা,ইমামতি ও তরিকতের দীক্ষা এই আকর্ষনীয় ও অসমান্য অবদানের উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখে এই মহান অলী ১৩৭৪ হিজরীর ১৮ শাবান, ১৯৫৫ সাল ১২ই এপ্রিল আন্দরকিল্লাহ খানকায়ে সফিরিয়া মোজাদ্দেদীয়ায় বিকাল ৩ ঘটিকায় ইন্তেকাল করেন। লালদীঘীর মাঠে তাহার একমাত্র পুত্র মাওলানা মোস্তাকীম হাশেমী জানাজার নামাজে ইমামতি করেন এবং ঢাকা ট্রাঙ্করোড ফৌজদারহাটের পশ্চিম পাশে তার পবিত্র রওজা শরীফ অবস্থিত। তাঁর ওফাতের পর তদীয় পুত্র মাওলানা মোস্তাকীম হাশেমী হাশেমী দাওয়াখানা এবং খানকায়ে সফিরিয়াকে কেন্দ্র করে দুনিয়ার আবরনে দ্বীনী কর্মকান্ডে নিরবিচ্ছিন্নভাবে প্রায় অর্ধ শতাব্দীকালে নিজেকে নিবেদিত রেখেছিলেন।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply