২৯ মার্চ ২০২৪ / ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / ভোর ৫:৩০/ শুক্রবার
মার্চ ২৯, ২০২৪ ৫:৩০ পূর্বাহ্ণ

ভূমি প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ ।। আর কত বঞ্চিত হবে আনোয়ারার উপকূলীয় রায়পুরবাসী?

     

 

দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার উপকূলবর্তী ইউনিয়ন রায়পুর। ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এই ইউনিয়নে। দুই যুগ পেরিয়ে গেলেও এখনো উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছায়নি অবহেলিত রায়পুর ইউনিয়নে। এক সময়ের ঐতিহ্য ও সৌন্দর্য ভরা এই ইউনিয়নের অনেক গ্রাম এখন মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। কারণ এখনো পর্যন্ত নির্মাণ করা হয় নি মজবুত বেড়িবাঁধ। ভাঙা বেড়িবাঁধের কারণে জোয়ারের পানি কৃষি জমিতে প্রবেশ করার ফলে কয়েক বছর ধরে কয়েকশত একর জমি চাষহীন অবস্থায় পড়ে আছে।

সরেজমিন পরিদর্শন করলে দেখা যাবে রায়পুর ইউনিয়নের গহিরা, সরেঙ্গা, পরুয়াপাড়া, ফকিরহাট, বারআউলিয়া, ঘাটকূল এসব এলাকার লোকজন কত কষ্টে জীবন যাপন করছেন। অর্থনৈতিক এলাকা হিসেবে খ্যাত ঐ ইউনিয়নের জনসাধারণ নাগরিক অধিকারসহ সার্বিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আধুনিক যুগে মানুষ যখন বিলাসিতায় জীবন যাপন করছে তখন উপকূলবাসী তাদের ন্যায্য অধিকার পেতে হিমশিম খাচ্ছে। আধুনিক যুগে মানুষ যখন উঁচু ফ্লাইওভার দিয়ে চলাচল করে তখন রায়পুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করে। যে সময়ে ছাত্রছাত্রীরা বিদ্যুতের আলোর নিচে পড়ালেখা করে, এমনি সময় এই ইউনিয়নে কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রী মোমবাতি বা হারিকেন জ্বালিয়ে পড়ালেখা করে। কারণ ঘাটকুল, বারআউলিয়া, নজুমিয়া খাল এলাকায় তার সংযোগ ও বিদ্যুৎ খুঁটি থাকা অবস্থায়ও বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া হয় নি যা অত্যন্ত লজ্জাজনক ও কষ্টকর ব্যাপার।

আনোয়ারার সাবেক সাংসদ বরেণ্য রাজনীতিবিদ মরহুম আলহাজ্ব আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর মুখের কথা আজো আমাদের স্মরণ হয়। তিনি কোন এক সভায় বলেছিলেন রায়পুরের বেড়িবাঁধ ভাঙা থাকলে আমার চোখে ঘুম হয় না। তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি খোঁজ খবর ও যাতায়াত করতেন রায়পুর ইউনিয়নে। আজ রায়পুর ইউনিয়নবাসীর প্রিয় নেতা চিরদিনের জন্য বিদায় নিয়ে গেলো ও রেখে গেলেন তারই সুযোগ্য পুত্র বর্তমান সরকারের মাননীয় ভূমি প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। যিনি সুদৃষ্টিতে তাকালে শুধু রায়পুর ইউনিয়ন নয় বদলে দিতে পারে পুরো আনোয়ারার চেহারা। মাননীয় ভূমি প্রতিমন্ত্রী মহোদয় কিছু দিন আগে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন আনোয়ারা ও পশ্চিম পটিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাজেট বরাদ্দ হয় রায়পুর ইউনিয়নের জন্য।

আসলে এই বাজেটের কোন কাজই চোখে পড়ার মত নয়। তাহলে এই বাজেটের টাকাগুলো কাদের পকেটে? আমরা সাধারণ জনগণ তা জানি না। মাঝে মধ্যে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে দেখা গেলেও সে বেড়িবাঁধ বেশি দিন স্থায়ী হয় না। নানারকম দুর্নীতি, অবহেলা এর প্রধান কারণ। উপকূলীয় এই অবহেলিত, বঞ্চিত জনগণ তো বেশি কিছু চায় না। তারা শুধু তাদের ন্যায্য অধিকার নিয়ে বাঁচতে চায়। তবে তারা কেন বার বার সবকিছু থেকে বঞ্চিত হচ্ছে? বেড়িবাঁধ ভাঙা থাকলে উপকূলবাসীর আর চোখে ঘুম হয় না।

যখন আবহাওয়া অফিস থেকে সতর্ক সংকেত দেয়া হয় তখন প্রাণের ভয়ে অধিকাংশই মানুষ শহরে চলে আসে। মাননীয় ভূমি প্রতিমন্ত্রীর নিকট আকুল আবেদন রায়পুর ইউনিয়নবাসীকে সমুদ্রের ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মজবুত বেড়িবাঁধ নির্মাণসহ ন্যূনতম জীবন ধারণের উদ্যোগ গ্রহণ এবং বিদ্যমান সকল সমস্যার সমাধান করে উপকৃত করবেন।

জনসাধারণের পক্ষে, এম মাহবুবুর রহমান সুজন, দক্ষিণ গহিরা, আনোয়ারা, চট্টগ্রাম।

 
শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply