১৯ এপ্রিল ২০২৪ / ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ১২:৩১/ শুক্রবার
এপ্রিল ১৯, ২০২৪ ১২:৩১ পূর্বাহ্ণ

বাঁধের কাজ শেষ হলেও বিল পাচ্ছেন না পিআইসি ও মজুররা

     

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা
সুনামগঞ্জের বিশ^ম্ভরপুর ও জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাও ও ধনপুর ইউনিয়নে হাওররক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হলেও বিল পাচ্ছেননা পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) ও মজুররা। জানা যায়,জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাও ইউনিয়নের কুশিয়ারা নদীর ডান ও বামতীরের হাওরের ফসলরক্ষার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ২২ টি বেরীবাঁধ নির্মাণের জন্য বরাদ্দের চাহিদাপত্র প্রদান করে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ ২২ টির মধ্যে মাত্র ৮টি পিআইসি প্রকল্প অনুমোদন করে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে সভাপতি হাজী মোঃ মখলুছ মিয়ার নেতৃত্বাধীন ৩০ নং পিআইসি, মোঃ দুরুদ মিয়ার নেতৃত্বাধীন ১৭ নং পিআইসি, সুরুজ্জামান মিয়ার নেতৃত্বাধীন ৪৬ নং পিআইসি,আলাউর রহমানের সেতৃত্বাধীন ৫০ নং পিআইসি,দুদু মিয়ার নেতৃত্বাধীন ৪২ নং পিআইসি, মোঃ শওকত আলীর নেতৃত্বাধীন ৭০নং পিআইসি, টিপু সুলতানের নেতৃত্বাধীন ১১৩ নং পিআইসি ও শহীদ মিয়ার নেতৃত্বাধীন ১১৪ নং পিআইসি। গত ১৫ মার্চ নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে এসব প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করেছেন সংশ্লিষ্ট পিআইসির ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির কৃষকরা। পাইলগাও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী মোঃ মখলুছ মিয়া বলেন,আমার ইউনিয়নে বাধের কাজ করতে গিয়ে দফায় দফায় নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়েছে পিআইসর লোকদেরকে। বিষয়টি সরজমিনে এসে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পাউবোর সেকশন অফিসাররা প্রত্যেক্ষ করেছেন। শত প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও আমরা বাঁধের কাজ শেষ করেছি। অন্যদিকে জেলার বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার তার ইউনিয়নের ফসলরক্ষার জন্য ১০ টি বেরীবাঁধ নির্মাণের লক্ষে বরাদ্দের চাহিদাপত্র প্রদান করেন। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ এ ইউনিয়নে মাত্র ৫টি পিআইসি প্রকল্প অনুমোদন করে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে সভাপতি মোঃ আমিনুল হকের নেতৃত্বাধীন ৭ নং পিআইসি, সভাপতি মোঃ লোকমান মিয়ার নেতৃত্বাধীন ২৭ নং পিআইসি, সভাপতি হক মিয়ার নেতৃত্বাধীন ২৯ নং পিআইসি, সভাপতি মোক্তার মিয়ার নেতৃত্বাধীন ৪২ নং পিআইসি ও সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক মাস্টারের নেতৃত্বাধীন ৪৩ নং পিআইসি। উক্ত পিআইসির প্রতিনিধিরা গত ২৮ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে তাদের প্রকল্পের কাজ শতভাগ সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাদেরকে মাত্র ২টি বিলের আওতায় শতকরা ৪০ থেকে ৫০ ভাগ টাকা প্রদান করেছেন। ফলে পিআইসির লোকজন মারাত্মক ক্ষতির মধ্যে রয়েছেন। বরাদ্দকৃত বিলের টাকা পেয়ে পরিশোধ করবেন এই শর্তে কোন কোন পিআইসির সভাপতি ও সদস্য-সচিবগন ধার কর্জ ও সুদে টাকা সংগ্রহ করে জরুরী ভিত্তিতে বাঁধের কাজ শেষ করেছেন। কোন কোন বাঁধে সর্বোচ্চ ৫শ থেকে ৭শত টাকা রোজে তারা মাটিকাটার জন্য মজুর নিয়োগ করেছেন। আবার কেউ কেউ ঢাকা থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ভাড়া দিয়ে মাটিকাটার মেশিন এনে প্রকল্পের কাজ শেষ করেছেন। প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ করানোর জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসাররা দফায় দফায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের পাশাপাশি পিআইসির লোকদেরকে চাপপ্রয়োগ করেছেন। কিন্তু এখন কাজ আদায়ের পর আর তারা বিল দিচ্ছেননা। জানা যায়,প্রত্যেক উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসারদের যৌথ স্বাক্ষরে পিআইসির সভাপতি ও সদস্যসচিবের অনুকূলে বরাদ্দকৃত টাকা ছাড় দেয়া হয়। ৪ কিস্তিতে বরাদ্দকৃত টাকা ছাড় দেয়ার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত ২কিস্তির টাকা প্রদান করেছেন। ফলে বাকী টাকা পাওয়ার জন্য পিআইসির প্রতিনিধিরা এখন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পাউবোর সেকশন অফিসারের দ্বারে দ্বারে প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন। এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক সাবিরুল ইসলাম বলেন,আমরা পিআইসির কাজ ভিডিও করবো। সামগ্রিকভাবে সবকটি বাঁধের কাজ ম্যাজারম্যান্ট করার পর বকেয়া বিল প্রদানে সচেষ্ট থাকবো।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply