২৫ এপ্রিল ২০২৪ / ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ভোর ৫:৩৫/ বৃহস্পতিবার
এপ্রিল ২৫, ২০২৪ ৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ

মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ফজিলাতুন নেসা

     

বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামীলীগের ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন উপলক্ষে চট্টগ্রাম দক্ষিণজেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা গতকাল ২৭ ফেব্রুয়ারী বিকাল ৫টায় সংগঠনের সভানেত্রী সাবেক এমপি চেমন আরা তৈয়বের সভাপতিতত্বে ও সাধারণ সম্পাদিকা শামীমা হারুন লুবনার পরিটালনায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা নারীনেত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এমপি। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আবুল কালাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী হাসিনা মহিউদ্দীন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী দিলোয়ারা ইউছুফ, সাধারণ সম্পাদিকা এড.বাসন্তী প্রভা পালিত, চট্টগ্রাম দক্ষিণজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি শাহিদা আকতার জাহান, সহ সভাপতি কল্পনা লালা, দীপিকা বড়ুয়া, নুরুন্নাহার জালাল, রেহেনা ফেরদৌস চৌধুরী, জান্নাত আরা মঞ্জু, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদিকা খালেদা আকতার চৌধুরী, এড.পাপড়ি সুলতানা, কাজী শারমীন সুমী প্রমুখ। সভায় কোরআন তেলওয়াত করেন হাসিনা মমতাজ, গীতা পাঠকরেন রুনু দাশ, ত্রিপিটক পাঠকরেন দক্ষিণজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদিকা ববিতা বড়ুয়া। সভায় প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামীলীগ উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ নারী সংগঠন ও বাংলাদেশের নারীনেতৃত্বের প্রথম রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আজ একটি প্রাচীন সংগঠন হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই নারীদের রাজনৈতিক মর্যাদা আর নেতৃত্বদানের উপলদ্ধি থেকেই প্রথম ১৯৬৯ সালের। ২৭ ফেব্রুয়ারী মহিলা আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথমে এ সংগঠনের নাম ছিল পুর্ব পাকিস্তান মহিলা আওয়ামীলীগ আর এ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যক্ষ বদরুন্নেসা, সাধারণ সম্পাদিকা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, ও সাংগাঠনিক সম্পাদিকা হিসেবে প্রয়াত আইভি রহমান দায়িত্ব পালন করেছেন দক্ষতা ও নিষ্ঠার সাথে। বঙ্গবন্ধু অনুভব করেছিলেন এদেশের অর্ধেক মানুষ নারীদের বাদ দিয়ে কখনো উন্নয়ন সম্ভব নয়।
নারীদের জন্য বঙ্গবন্ধুই প্রথম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬০ ভাগ চাকুরীর ব্যবস্থা, মহান সংসদে ১৫টি সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা করেছিলেন। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধে যে সমস্ত পরিবারের বাবা, ভাই নিহত হয়েছে তাদের কন্যা ও বোনদের শিক্ষার ব্যবস্থা করেছেন। যার মধ্যে অনেক নারী ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী সহ নানা পেশায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু নারীদের জন্য কুটির শিল্পের ব্যবস্থা, বিভিন্ন দ্রবাদী উৎপাদনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলেন। আজ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যুগোপযোগী কাজ করে যাচ্ছে। ৯৬ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় যখন ছিল তখন দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিলনা। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর আবারো দেশে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিল।বর্তমানে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে কোন ঘাটতি এখন পর্যন্ত নেই বললেই চলে। বর্তমান সরকার প্রায় ১৪ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ৩০ প্রকার ঔষধ বিনামুল্যে দিচ্ছে। বিএনপি সরকারের আমলে দেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৬৪.৫ বছর। আর বর্তমান সরকারের আমলে দেশের মানুষের গড় আয়ু প্রায় ৭২ বছর। যেখানে নারীদের গড় আয়ু বেশি। বিএনপির আমলে দেশে বিদ্যুৎ এর পরিমাণ ছিল ৩১০০ মেগাওয়াট। আর বর্তমান মহাজোট সরকারের আমলে বিদ্যুৎ এর পরিমাণ ১৬,৩০০ মেগাওয়াট। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বছরের ১দিনে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে বিনামুল্যে বই দেওয়া হয় যা বিশ্বের মধ্যে বিরল। ২০১৮ সালে ৩৫ কোটি, ৯২ লক্ষ, ৫২ হাজার, ১৬১টি বই বিনামুল্যে বিতরণ করা হয়েছে। একসাথে এতগুলো বই বিতরণের ইতিহাসে পৃথিবীতে নজির নেই বললেই চলে। নারী উন্নয়ন, সম অধিকার, মর্যাদা ও নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ বিশ্বে একটি অনন্যনেত্রীর নাম। নারীরা এখন দেশের সকল পেশায় সর্বোচ্চ আসনে ও মর্যাদায় নিজেদের প্রতিষ্ঠা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে। তিনি বলেন আমাদের নারীদের ভাবতে হবে আগামীদিনে আমরা কি অসামপ্রাদায়িক না সাম্প্রাদায়িক দেশ গড়ব, উন্নয়ন নাকি ধ্বংস দেখব। তিনি বলেন নতুন প্রজন্মকে ভাবতে হবে তারা কি ডিজিটাল আধুনিক বাংলাদেশ নাকি অন্ধাকারাচ্ছন্ন বাংলাদেশ দেখতে চায়, নারীকে কি আমরা ক্ষমতায়ন নাকি তেতুলতত্ত্ব বাস্তবায়ন করতে দিব। এ সমস্ত বিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে। তিনি বলেন এদেশের নারীরা সংগ্রামী নারী হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে নারীরা বিধবা, নারীরা সন্তান হারা, নারী ধর্ষীতা হবে জেনেও স্বামীদের, সন্তানদের যুদ্ধে পাঠিয়েছেন। এমনকি অনেক নারী নিজেরা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করছেন। বর্তমান বিশ্বে শেখ হাসিনা সততার নিমিত্তে বিশ্বে ৩য় শ্রেষ্ঠ নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতিমধ্যে মর্যাদা পেয়েছে। আর অন্যদিকে বিএনপিনেত্রী বিশ্বে শ্রেষ্ঠ দুর্নীতিবাজ নারী হিসেবে স্থান পেয়েছে। নারী হয়ে আমাদের ঘৃণা হয়, প্রতিটি নারীর ঘৃণা হয় ৩ বারের প্রধানমন্ত্রী দাবী করা খালেদা জিয়া এতিমের টাকা চুরি করেছে আমানত খেয়ানত করেছে। আর এ মামলা তত্ত্বাবধায়ক সরকারই করেছে। আওয়ামীলীগ এ মামলা দেয়নি। গাড়ীতে পেট্টোল বোমা, চলন্ত ট্রেনে বোমা, মায়ের সামনে ছেলে খুন, স্বামীর সামনে স্ত্রীকে খুন, স্ত্রীর সামনে স্বামীকে খুন, ধর্ষন, লুটপাত, ঘরবাড়ী ধ্বংস, দোকানপাটে অগ্নিসংযোগসহ আরোকত জগন্য কাজ করেছে বিএনপি। জাতির এমন এক সময়ে মহিলা আওয়ামীলীগের ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হচ্ছে যখন সামনে জাতীয় নির্বাচন আসন্ন এই নির্বাচনে আমাদেরকে ভেবে দেখতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নাকি রাজাকার আলবদর,আল শামসদের পেতœাতারা ক্ষমতায় আসবে।
তিনি আগামী নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই মহিলা আওয়ামীলীগকে ঐক্যবদ্ধভাবে তৃণমুল পর্যায়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে নৌকার জন্য কাজ করার আহবান জানান। প্রধান বক্তা মফিজুর রহমান বলেন মহিলা আওয়ামীলীগ এদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন মুক্তিযোদ্ধা সকল ক্ষেত্রে ভুমিকা রেখে যাচ্ছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নারীদের উন্নয়নে বিশ্ব মডেল। তিনি বলেন বর্তমানে মহিলা আওয়ামীলীগ অনেকবেশি সংগঠিত। তিনি আগামীতে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করার জন্য এদেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর ভোট পাওয়ার জন্য সরকারের যাবতীয় সাফল্য তৃণমুলে নারী সমাজের কাছে প্রচার প্রসারের আহবান জানান। সভার শুরুতে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান। বেলুন উডিয়ে মহিলা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্ভোধন করেন। সভা শেষে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিরা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply