২৯ মার্চ ২০২৪ / ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / সকাল ৬:৪৬/ শুক্রবার
মার্চ ২৯, ২০২৪ ৬:৪৬ পূর্বাহ্ণ

আনোয়ারার দক্ষিন গহিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত করা হউক

     

মুহাম্মদ মনছুর

আনোয়ারা উপজেলার গহিরা বার আউলিয়া গ্রামে অবস্থিত দক্ষিন গহিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রথম শ্রেণি হতে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান চলে এখানে। বিদ্যালয়টি ত্রিমুখি সাগরবেষ্ঠিত উপকূলিয় গহিরার প্রান্তিক জনপদে অবস্থিত। যেখানে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে ছাত্রদের ঝরে পড়তে হয়। দুর্যোগ ও বন্যা কবলিত এলাকা বিধায় গ্রামের আশেপাশে কোন উচ্চ বিদ্যালয় না থাকায় পঞ্চম শ্রেণির পর উচ্চ শিক্ষার পড়ালেখার সুযোগ তাদের  হয়না। উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তে যেতে হয় চার মাইল দূরে অবস্থিত হাই স্কুলে। দুর্যোগ কবলিত এলাকায় অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও যাতায়াত সমস্যার কারনে এতদূর গিয়ে এতঞ্চলের ছাত্রদের পড়ালেখা করা চরম দুস্কর। এতে অকালে স্কুল থেকে ঝরে পড়ে যায় অনেকে। এমনিতে দেশে প্রাথমিক পর্যায়ে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর হার ২২%, মাধ্যমিক পর্যায়ের ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর হার ৪২%। ফলে ঝরে পড়ার সংখ্যার যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি শিক্ষার প্রবৃদ্ধির হার চরমভাবে হ্রাস পাচ্ছে। গহিরা উপকূলিয় প্রান্তিক জনপদ হিসেবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যা, খরা, জলাবদ্ধতা এতঞ্চলের নিত্য সমস্যা। বিধায় মৌলিক চাহিদা শিক্ষা লাভ এসব বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অঞ্চলে জনগনের জীবন যাত্রার মানোন্নয়নেও রয়েছে প্রতিটি পরতে পরতে সমস্যা আর বাঁধা। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত কোনমতে পড়ালেখা করা যায়। পঞ্চম শ্রেণি পাশ করার পর শুরু হয় উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ালেখার চিন্তা। শীত মৌসুমে চার মাইল দূরে গিয়ে পায়ে হেটে স্কুলে যাওয়া যায়। তীব্র বর্ষা ও প্রচন্ড গরমে খড়া রৌদ্রে স্কুুলে যাওয়া দু:সাধ্য। বর্তমান সরকারের জাতীয় শিক্ষা নীতি অনুযায়ি ২০১৮সালের মধ্যে সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করা হবে। এটা বাস্তবায়নের জন্য সরকার কাজ করছে। তবে ২০১৮সাল আর বেশি দূরে নয়। এটার পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে কিনা? তাছাড়া যাতায়াত সমস্যার কারনে এ স্কুলের শিক্ষকগণ বেশিদিন চাকরি করতে চাইনা। কিছুদিন করার পর তারা অন্যত্র বদলি হয়ে যায়। বর্তমান সরকার শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করলেও শিক্ষাঙ্গনে যাওয়ার জন্য ময়নাগাজির মোড় থেকে স্কুল পর্যন্ত দুই কিলোমিটার বখতিয়ার রোডের পিচ ঢালাইয়ের কাজ দীর্ঘ ২৬ বছরে করা হয়নি। বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে বিভিন্ন সময় শুধু মাটির ভরাটের কাজ হয়েছে। তাছাড়া নির্মাণ করা হয়নি পাথর দিয়ে টেকসই স্থায়ি বেড়িবাঁধ। পল্লি হিসেবে ইতিহাসের, সাহিত্য ও কবিতার প্রতিটি লাইনে ও চারনে পল্লির ঐতিহ্যের কথা লিপিবদ্ধ রয়েছে। গহিরার মত যন্ত্রণা ও বঞ্চনার পল্লি আর কোথাও খোঁজে পাওয়া দুস্কর। তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে এরকম পিছিয়ে থাকা পল্লি আর কোথাও আছে কিনা স্বচক্ষে না দেখলে বলা মুশকিল। সবকিছু বঞ্চিত করা যায়। তবে শিক্ষা কখনো বঞ্চিত করা যায়না। বর্তমান মহাজোট সরকার প্রত্যন্ত অঞ্চল ও গহিন অরণ্যে শিক্ষার আলো পৌছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রান্তিক জনপদের এ স্কুল দক্ষিন গহিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করতে এলাকাবাসি মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী, গণ শিক্ষা মন্ত্রী এবং ভূমি প্রতি মন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছে।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply