১৬ এপ্রিল ২০২৪ / ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৪:২৭/ মঙ্গলবার
এপ্রিল ১৬, ২০২৪ ৪:২৭ অপরাহ্ণ

ভাগডাঙ্গা ইউনিয়নের রাজারহাট দাখিল মাদ্রাসা কুড়িগ্রামে মাদ্রাসা শিক্ষকের লালসার শিকার গৃহবধু ৯দিনেও মামলা রেকর্ড করেনি পুলিশ

     

 

সাইফুর রহমান শামীম,কুড়িগ্রাম
অভিনব প্রতারনার ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন এক বিধাব গৃহবধূ (৩০)। এ গৃহবধূর ইজ্জত লুটের অভিযোগ কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের রাজারহাট দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল আজিজের (৪৫) বিরুদ্ধে। পাষবিক এ ঘটনার ৯দিন পেরিয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে মামলা নেয়নি পুলিশ। বিচারের আশায় শনিবার কুড়িগ্রামে সাংবাদিকদের দাড়স্থ হয় এ গৃহবধূ।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ তেলীয়া গ্রামের মৃত সৈয়দ আলী সরকারের কন্যা (মোছাঃ সুফিয়া বেগম)(৩০) ঢাকায় একটি সোয়েটার ফ্যাক্টরীতে চাকুরি করত। তার সহকর্মী রিয়াজুলের বাড়ী কুড়িগ্রামের ভোগডাঙ্গা এলাকায়। রিয়াজুল তাকে প্রলুব্ধ করে তার এলাকার মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল আজিজের সাথে কথা বলতে। কারণ সে বিয়ে করার জন্য মেয়ে খুঁজছে। এরপর থেকে মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল আজিজ ০১৭২৪৯১৪২৬১ নম্বর থেকে গত ২০/২২ দিনে ৮০/৯০ বার কথা বলেছে গৃহবধূর ০১৭৯৮৯৬৮৯৮৭ নম্বরে। আব্দুল আজিজ ফোনে জানায় তার স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ্য। তার চিকিৎসায় প্রায় ৯লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। তুমি তো চাকুরি কর, যদি কিছু টাকা দাও তাহলে তোমাকে বিয়ে করব।
এভাবে তিনি প্রেমের ফাঁদে ফেলেন। এরপর তিনি ফোনে বাড়িতে আসতে বলেন। কথামত গত শুক্রবার (৩/৩/১৭) সন্ধ্যায় কুড়িগ্রামে পৌঁছলে আব্দুল আজিজ তাঁকে নিজ বাড়ীতে নিয়ে যায়। রাতে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে উপর্যোপুরি কয়েক দফা ধর্ষন করে। সকালে জানায় টাকা নিয়ে আসো তোমাকে বিয়ে করব। কারণ আমার স্ত্রীর চিকিৎসা খরচ অনেক বেশী। এরপর জোরপূর্বক বাড়ি থেকে বের করে গাইবান্ধা পাঠিয়ে দেয়। এরপর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে ধর্ষিতা গৃহবধূ শনিবার (৪/৩/১৭) গোবিন্ধগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেয়। রোববার (৫/৩/১৭) দুপুরে ধর্ষিতা নিজে বাদি হয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানায় একটি লিখিত এজাহার দাখিল করেন। এজাহারের সঙ্গে গাইবান্ধা গোবিন্দগঞ্জ হাসপাতালের প্রমাণপত্রও সংযুক্ত করা হয়।
পাষবিক নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ অভিযোগ করেন, এজাহার দাখিলের ৭দিন পরও থানা পুলিশ মামলা রেকর্ড না করে তালবাহানা করছে। গত সপ্তাহের রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫দিন গাইবান্ধা থেকে এসে কুড়িগ্রাম সদর থানার বারান্দায় ধরনা দিয়েছি মামলা রেকর্ডের জন্য। পুলিশ আজ না কাল এভাবে ঘুরাচ্ছে। নিরুপায় হয়ে ন্যায় বিচারের আশায় সাংবাদিক ভাইদের দাড়স্থ হয়েছি।
ধর্ষক হিসাবে অভিযুক্ত রাজারহাট দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল আজিজকে শনিবার (১১/৩/১৭) মোবাইলে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি। মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে দিয়ে মোবাইলটি বন্ধ করে দেন তিনি।
কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম আব্দুস সোবহান জানান, মামলা এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়নি। বাদী আমাদের এলাকার নয় তাই বিস্তারিত খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। কারণ বাদির বাড়ি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ এবং তিনি চাকুরি করেন গাজিপুরে। অথচ ঘটনাস্থল দেখানো হচ্ছে কুড়িগ্রামে। অপর দিকে অভিযুক্ত শিক্ষক এ মেয়েকে চেনেন না বলে দাবি করছেন। ফলে বিলম্ব হচ্ছে।

About The Author

শেয়ার করুনঃ