১৬ এপ্রিল ২০২৪ / ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / দুপুর ২:০৪/ মঙ্গলবার
এপ্রিল ১৬, ২০২৪ ২:০৪ অপরাহ্ণ

সুনামগঞ্জের ইব্রাহিমপুরে কাউন্টার মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ

     

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা

সুনামগঞ্জের ইব্রাহিমপুর গ্রামে কাউন্টার মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রতিপক্ষকে হয়রানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তথাকথিত মিথ্যা মামলার বাদি মির হোসেন গ্রামের একজন চিহ্নিত মাদকসেবী মাতাল। মিথ্যা মামলার বাদী হওয়ার পাশাপাশি ২১ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার রাত দেড়টায় উক্ত মির হোসেন ও তার ভাই নূর হোসেন প্রতিপক্ষ আকিনুর মিয়ার বাড়ীর সামনে বাঁশের ঝাড়ের পাশে কয়েক বোতল ভারতীয় মদভর্তি একটি ব্যাগ ফেলে রেখে পুলিশে খবর দেয়। এদিকে এ চক্রের সাথে যোগসাজশ করে কাউন্টার মিথ্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে সদর থানার এসআই আবুল কালাম চৌধুরী (বিপি নং ৮১০০০৯৭৩০৯) মঙ্গলবার রাত দেড়টায় ঘটনাস্থলে মদ উদ্ধারের জন্য অভিযানে যান। অন্যদিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে একজন পুরুষ নূর হোসেনকে মদের বোতল ফেলে রাখার সময় হাকডাক শুরু করলে পাড়া মহল্লার লোকজন ঘুম থেকে জেগে উঠে মাদক সংগ্রহকারী নূর হোসেনকে ধাওয়া করেন। উত্তেজিত জনতার ধাওয়া খেয়ে নূর হোসেন তার মদের বোতল ও পায়ের সেন্ডেল ফেলে রেখে দ্রুত পালিয়ে যায়। পুলিশ মাদক সংগ্রহকারী নূর হোসেন ও তার ভাই মিথ্যা মামলার বাদী মির হোসেনকে আটক না করে উল্টো নিরীহ লোকজনকে আটক করার চেষ্টা করে। কথিত মিথ্যা মামলায় ইব্রাহিমপুর গ্রামের আব্দুল মনাফের দুই পুত্র আকিনুর ও শাহিনূর,মৃত আব্দুল হেকিমের পুত্র আশরাফ আলী,আশরাফ আলীর দুইপুত্র ইব্রাহিম ও ইমনকে আসামী করা হয়। এর মধ্যে ইমন ১৩ বছরের কিশোর। এক পরিবারের ২ ভাই ও আরেক পরিবারের ৩ পিতাপুত্রকে কোনপ্রকার আইনানুগ কারন না থাকার পরও মিথ্যা সাজানো ও বানোয়াট ঘটনার উল্লেখে দায়েরকৃত মামলাটিকে বাংলাদেশ দন্ডবিধিআইনের১৪৩/৪৪৮/৩২৩/৩৮০/৩৫৪/৪২৭/১১৪/৫০৬ ধারায় সুনামগঞ্জ থানার মামলা নং ২৭ (জিআর ৫৮/২০১৭) তাং ২১/২/২০১৭ইং এফআইআর করা হয়। মামলার বাদি মীর হোসেন তার স্ত্রী ও ভাতিজিকে ভিকটিম সাজিয়ে সম্পুর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে গ্রামের প্রভাবশালী এক গডফাদারের টাকায় মিথ্যা মামলাটি এফআইআর করায়। নিরীহ লোকজন জানান, মির হোসেন তার স্ত্রীকে নিয়ে প্রথমে সুনামগঞ্জ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে (মাতৃমঙ্গলে) যায় এবং অন্তস্বত্তা স্ত্রীর গর্ভের সন্তান নষ্ট করে দেয়ার জন্য ডাক্তার নার্স ও আয়াদেরকে মোটা অঙ্কের টাকা প্রদানের প্রস্তাব দেয়। এসময় মির হোসেনের স্ত্রীর সাথে রাবেয়া রাহেলা ও জামালসহ ৩জন নারীপুরুষ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে অন্যায় তদবীরে ব্যস্ত ছিলো। এ বিষয়টি বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের নেতৃবৃন্দকে অবগত করা হলে কমিশনের মহিলা প্রতিনিধিরা এর সত্যতা পান। অন্যদিকে মাতৃমঙ্গল কর্তৃপক্ষ তাদের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় পরে মির হোসেন তার স্ত্রীকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানেও কার্যসিদ্ধি না হওয়ায় দুইদিন চিকিৎসাধীন রাখার পরই সুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ীতে ফিরে যায়। গ্রামের নিরপেক্ষ লোকজন জানান,গত ২৫ ডিসেম্বর রবিবার রাত ১১টায় ইব্রাহিমপুর গ্রামের ব্রীজের উপরে পূর্ব বিরোধের জের ধরে আব্বাছ মিয়ার ৩ পুত্র যথাক্রমে মির হোসেন,নুর হোসেন ও আক্তার মিয়া তাদের প্রতিপক্ষ আদ্দুল মনাফের পুত্র আকিনূর মিয়া (৩৫) কে লোহার রড দ্বারা এলোপাতাড়িভাবে মারপিঠক্রমে গুরুতর আহত করে। আহত করার একপর্যায়ে আকিনূরের ৩টি দাত ভেঙ্গে দেয় তারা। এ ঘটনায় আকিনুরের ভাই শাহিনূর মাতাল সন্ত্রাসী মির হোসেন,নুর হোসেন ও আক্তার মিয়াকে আসামী করে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/১১৪/৫০৬ ধারায় মামলা নং ০১ (জিআর ১/২০১৭) তাং ১/১/২০১৭ইং দায়ের করেন। এ মামলায় সকল আসামীরা আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিজ্ঞ আমল গ্রহনকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এলাকার চিহ্নিত মাতাল সন্ত্রাসী আক্তার মিয়ার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে প্রেরন করেন। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে হাজতাবদ্ধ আক্তারের ২ ভাই ও তাদের স্ত্রীসহ আত্মীয় স্বজনরা গ্রামের নিরীহ দিনমজুর আশরাফ আলীর বাড়ীতে হামলা করে তার স্ত্রী ও কন্যাদেরকে আহত করে। এসময় নিজেদের লোকদের হাতেই আহত হয় মির হোসেনের স্ত্রী। নিরীহ আশরাফ আলী ও তার পরিবারের লোকজন এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ না করলেও নিজেদের অপকর্মকে ঢেকে রাখতে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের স্ত্রীকে ভিকটিম সাজিয়ে কাউন্টার মিথ্যা মামলার আশ্রয় নেয় মির হোসেন। মির হোসেনের ভাই নূর হোসেন ইব্রাহিমপুর আনন্দ বাজারে চাস্টলের দোকান বসিয়ে রাতে ভারতীয় মদ বিক্রি আর দিনে গাপলা ও লুড্ডু খেলার মাধ্যমে জুয়ার আসর বসায়। এলাকাবাসী মিথ্যা মামলার বাদী মির হোসেন ও তার ভাই মাদক ব্যবসায়ী নুর হোসেন এবং তাদের গডফাদারকে আটক করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply