১৯ এপ্রিল ২০২৪ / ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৪:৪০/ শুক্রবার
এপ্রিল ১৯, ২০২৪ ৪:৪০ অপরাহ্ণ

সমাজ সেবায় শাহ আমানত হজ্ব কাফেলা

     

মাহমুদুল হক আনসারী
মানুষ সমাজবদ্ধজীব। সমাজের নানা শ্রেণী ও পেশার মানুষকে নিয়ে মানুষ জীবন অতিবাহিত করে। মানুষ সমাজ ও রাষ্ট্রের নানা প্রকারের উন্নয়নে সমাজ কল্যাণে সামর্থবান ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসতে দেখা যায়। সমাজের মহৎ ও কল্যাণকামী ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান মানব কল্যাণমূলক কাজে যারা দীর্ঘদিন হতে অবদান রাখছে তার মধ্যে চট্টগ্রামের সুপ্রসিদ্ধ ও সুনামধন্য শাহ আমানত হজ্ব কাফেলা অনন্য একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠান ইসলামের অন্যতম ফরজ ইবাদাত হজ্বে বায়তুল্লাহর মেহমানদের ফরজ ইবাদাত আঞ্জাম দিতে প্রায় দুই যুগের অধিক সময় থেকে আল্লাহুর ঘরের মেহমানদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কাফেলা অদ্যবদি আল্লাহুর ঘরের মেহমানদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। দেশে হাজার হাজার হজ্ব কাফেলার মধ্যে শাহ আমানত হজ্ব কাফেলা হাজী সাহেবানদের সেবায় ইতিমধ্যে মুসল্লীর মাঝে ব্যাপকভাবে প্রশংসা কুড়িয়েছে। কাফেলার প্রতিষ্ঠাতা মধ্যমণি উস্তাদুল আছাতিজা পীরে তরিকত আমিরুল হুজ্জাজ আল্লামা ছালেহ জহুর ওয়াজেদী (রহ.) এ প্রতিষ্ঠান হাজী সাহেবানদের সেবায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বুজুর্গ আলেমেদ্বীন আশেকে রাসুল (দ.) খতীবে চাটগাঁ আল্লামা ছালেহ জহুর নবীর মুহাব্বত ও ভালোবাসায় নিবেদিত হয়ে আল্লাহুর ঘরের মেহমানদের সেবায় নিয়েজিত ছিলেন। এ প্রতিষ্ঠান তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম ও নিষ্ঠা ভালোবাসা আর ত্যাগের বিনিময়ে আজ হাজীদের সেবা প্রদান ও সমাজ সেবায় চট্টগ্রামঞ্চলে একটি সুপরিচিত নামে পরিচয় লাভ করেছে। এ প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র হাজীদের সেবায় কাজ করছেনা। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ, খানেকাহ্র ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, ব্রীজ কালর্ভাট, দুঃস্থ এতীম অসহায় নরনারীর সেবা অব্যাহত রেখেছে এ প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের বর্তমান চেয়ারম্যান আলহ¦াজ আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াছিন মাহমুদ সিদ্দিকী (দা.বা.) পিতার মানবসেবার যাবতীয় কর্মসূচী পরিচালনা ধরে রেখেছেন। এতদঞ্চলের মসজিদের ইমাম, মাদ্রাসার শিক্ষক, গরীব দুঃস্থ অভাবী আলেম ইমাম খতীবদের জন্য এ কাফেলা পিতার পদাংক অনুসরণ করে সাহায্য সহযোগীতা করছেন। কাফেলার কার্যক্রমের খরচ নির্বাহ করে গচ্ছিত অর্থের বিরাট অংশ দুঃস্থদের কল্যাণে ব্যায় করতে দেখা যাচ্ছে। বলা যায় এ কাফেলাকে সম্পূর্ণভাবে একটি পরিপূর্ণ সমাজ সেবা ও সংস্কারের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। কাফেলার অপরাপর পরিচালক মন্ডলী আলহ¦াজ মহিউদ্দিন জহুর ও সাইফুদ্দীন ওয়জেদী সহ সকল ডাইরেক্টর ও কর্মকর্তাদের মাঝে সম্মানিত হাজীদের সেবার পাশাপাশী মানব সেবার একটা প্রচন্ড ইচ্ছা দেখতে পাওয়া যায়। এলাকার মানুষ ও বাইরের যেকোন ধর্মীয় ও সামাজিক কর্মসূচীতে শাহ আমানত হজ্ব কাফেলার পরিবার এগিয়ে থাকতে এলাকাবাসী দেখছে । মুসলমানদের দুই ঈদ, রোজা ও কোরবানী, অন্যান্য ইসলামী দিবেসে শাহ আমানত হজ্ব কাফেলা আন্তরিকতার সাথে সমাজ ও মানুষের পাশে থাকেন। রোজাদার মানুষ, গরীব দুঃস্থ মুসল্লীদের বছরের যেকোন সময় সামর্থনুপাতে সাহায্য সহযোগীতা করা তাদের অন্যতম কর্মসূচী। একটি আলেম পরিবার ও ইসলামী আদর্শের অনুসারী হয়ে মানব ও সমাজ সেবায় তাদের ত্যাগ এলাকায় ব্যাপকভাবে প্রশংসার স্থান করে নিয়েছে। সামর্থনুপাতে সর্বদা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন কাফেলার চেয়ারম্যান ও পরিচালকগণ। এর বাইরেও সামর্থবান অসংখ্য মানুষ ও প্রতিষ্ঠান থাকলেও শাহ আমানত হজ্ব কাফেলার মতো আরো ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান মানুষ ও সমাজের প্রয়োজনে এগিয়ে আসলে সমাজে দুঃস্থ মানুষের সংখ্যা এভাবে বৃদ্ধি হতো না বলে সচেতন মানুষের অভিমত। কাফেলার হজ্ব ব্যবস্থাপনা খুবই উন্নত ও সমৃদ্ধ। এ কাফেলার সঙ্গী হয়ে যারাই পবিত্র হজ্বব্রত পালন করতে সক্ষম হয়েছেন তারাই কাফেলার ভক্ত। পরবর্তীতে উক্ত হাজাীর কোনো সদস্য অন্য কোনো কাফেলার সাথে মক্কা মদীনাতে জেয়ারতের উদ্দেশ্যে যেতে দেখা যায় না। শাহ আমানত হজ্ব কাফেলার সেবা আচার ব্যবহার যেকোন কাফেলার চেয়ে উন্নত বলে এ সুনাম ছড়িয়ে পড়ছে। তাদের ঘর, যাতায়াত, খানাপিনা, হজ্বের যাবতীয় আনুসাঙ্গিক ইবাদতে সার্বিক ব্যবস্থাপনা আধুনিক ও রুচিসম্মত। তাই এ কাফেলার সাথী হয়ে পবিত্র হজ্ব ও ওমরা পালন করতে বেশী সাচ্ছন্দ্য বোধ করেন সম্মানিত হাজী সাহেবান। কথা ও কাজের মিলের সমন্বয় পাওয়া যায় এ কাফেলার ব্যবস্থাপনার মধ্যে। কাফেলার যারা মুয়াল্লিম রয়েছেন তাঁরা মসজিদের খতীব ইমাম, মুহাদ্দিস ও মুফতী পর্যায়ের বিজ্ঞ আলেম। পবিত্র হজ্ব সম্পর্কে তাদের যাবতীয় দিক নির্দেশনা কর্মসূচীর স্বচ্ছ ভাবনা ও বাস্তবায়নের সক্ষমতা আছে। এ পর্যন্ত কোনো আল্লাহুর ঘরের মেহমানদের পক্ষ হতে শাহ আমানত হজ্ব কাফেলার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এটা মহান আল্লাহুর প্রতি অফুরন্ত কৃতজ্ঞতার অর্থেই বলা হয়েছে। শাহ আমানত হজ্ব কাফেলার অর্থ ইনকাম উদ্দেশ্য নয়, আল্লাহর ঘরের মেহমানদের সর্বোচ্চ সেবা প্রদান করায় হচ্ছে আসল কথা। পিতার মাধ্যমে পাওয়া এ কাফেলার যাবতীয় নিয়মনীতি শৃংখলা হাতে কলমে বাস্তবে রপ্ত করেছে এ কাফেলার পরিচালক মন্ডলী। বর্তমান চেয়ারম্যন পরিচালক মন্ডলী সকলেই পিতা আমিরুল হুজ্জ্বাজ আল্লামা ছালেহ জহুর ওয়াজেদী (রহ.) পদাংখ অনুসরণ করে চলছেন। তাঁর ইন্তিকালের পূর্বে দৃঢ়তার সাথে তিনি বলে গেছেন, আমার সন্তানদের আমি আল্লাহর ঘরের মেহমানদের সেবার উদ্দেশ্যে তৈরী করে গেছি। তাদের সহযোগীতায় যারাই পবিত্র হজ্ব পালনের উদ্দেশ্যে তাদের সহযোগীতা নিবে তারা সহিহ শুদ্ধভাবে হজ্বের যাবতীয় কার্যাদি আঞ্জাম দিতে পারবে। হজ্ব একটি ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য ইবাদত। এ ইবাদত আর্থিক ও শারিরীকভাবে যারা সক্ষম তাদের জন্য ফরজ। যাদের যাওয়া আসার মত অর্থ সামর্থ আছে তারা হজ্বে যাবেন। সেক্ষেত্রে হজ্বের যাবতীয় কার্যাদি আঞ্জাম ও পরিচালনা করতে কাফেলাকে প্রয়োজনীয় খরচপত্র না দিলে ঠিকমতো হজ্ব কার্যক্রম সফলভাবে আঞ্জাম দেয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। অনেক হাজী সাহেব টাকা কম দেয়ার জন্য সস্তা ধরনের কাফেলা খোঁজ করেন। এটা করা উচিৎ নয়। ওই ধরনের কাফেলার মাধ্যমে সামান্য কিছু টাকা কম দেয়ার উদ্দেশ্যে যারা যাত্রী হন তারা পথে পথে ভোগান্তির শিকার হন। বাংলাদেশ ও সৌদি সরকারের মধ্যে হাজী সাহেবদের সম্পর্কে যে ধরনের চুক্তি বিদ্যমান ও নতুন নতুন শর্ত হচ্ছে বৃদ্ধি পাচ্ছে সেখানে প্রতিবছর খরচের পাল্লাভারী হচ্ছে। সেক্ষেত্রে হজ্বের প্যাকেজে অর্থ কম নিলে নানা ভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। যেমন সিডিউল, টিকেট সেবার মান ঠিক রাখা সম্ভব হয়না। তাই সম্মানিত হাজীদের সর্বোচ্চ সেবা প্রদানে শাহ আমানত হজ্ব কাফেলা সর্বনিম্ন প্যাকেজ দিয়ে অন্য সব কাফেলার তুলনায় সেবায় অনন্য ভূমিক অব্যাহত রেখেছে। ধোকা প্রতারণা, হয়রানী থেকে বাঁচতে ভালো কাফেলার শরণাপন্ন হওয়া হাজীদের উচিৎ। শাহ আমানত হজ্ব কাফেলা হজ্ব ও হাজীদের উদ্দেশ্য একটি নিবেদিত প্রাণ ও উৎসর্গ করা প্রতিষ্ঠান। এ কাফেলার সাথে সম্পৃক্ত কোনো হাজী প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা নেয় বলা যায়। কাফেলার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পীরে তরিকত আমিরুল হুজ্জাজ (রহ.) এর সে শিক্ষা তাঁর সুযোগ্য সন্তানদের শিক্ষা দিয়ে গেছেন। উপরোক্ত পরিচালক মন্ডলী নিষ্ঠা ও ভালোবাসা দিয়ে হজ্ব কার্যক্রমকে সেবা হিসেবে গ্রহণ করেছে। আজকের দিন পর্যন্ত এ কাফেলা হাজীদের সেবায় একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের অবস্থান দৃঢ়তার সাথে রেখেছে। আল্লাহ আমাদের সহায় হউন।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply