২৮ মার্চ ২০২৪ / ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / রাত ৮:২২/ বৃহস্পতিবার
মার্চ ২৮, ২০২৪ ৮:২২ অপরাহ্ণ

সিটি কর্পোরেশন নিয়ে রাজনীতি, জনগণ নাখোশ

     

মাহমুদুল হক আনসারী
৬০ লাখ মানুষের সুখ-দুঃখের কল্যাণে কাজ করছে সিটি কর্পোরেশন। এ কর্পোরেশন স্থানীয় সরকার ও জনগণের টেক্সের আয়ে চলে থাকে। জনগণের সুবিধা অসুবিধা দেখবার দায়িত্ব রয়েছে এ কর্পোরেশনের। বিগত দিনে জনপ্রতিনিধি ও মেয়র জনকল্যাণ ও চট্টগ্রাম নগর উন্নয়নে সাধ্যমতো কাজ করেছে। বর্তমান মেয়র নির্বাচনের প্রায় ৩ বছরের কাছাকাছি সময় অতিবাহিত করছে। এ সময়কালে তিনি পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, পানি নিস্কাশন, শিক্ষাখাত, ফুটপাতবেদখল, রাস্তাঘাটকে হকার মুক্তকরণ, সেনিটেশনসহ নানাভাবে সফলতা আনতে জনকল্যাণে কাজ করছে। অতীতের অনেকগুলো বিশৃংখল কর্মসূচীকে শৃংখলায় আনতে বেগ পেতে হচ্ছে তাকে। নালার উপর স্কুল, কলেজ , বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ, দোকান মার্কেট প্রতিষ্ঠা, ফুটপাত দখল করে ব্যবসা চালানো, কর্পোরেশনের বকেয়া বিল পরিশোধ না থাকা, কর্পোরেশনের বকেয়া অর্থ উদ্ধার করা। জনগণের টেক্স ফাকি বন্ধ করা। হোল্ডিং টেক্স যথাযতভাবে পরিশোধ না করার মতো অনেকগুলো অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার উদ্দোগ গ্রহণ করেছে এ কর্পোরেশন। বর্তমান মেয়র কর্পোরেশনকে জনবান্ধব মানব ও নগর কল্যাণে নিয়োজিত করতে ব্যাপকভাবে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে। টেক্স ছাড়া সিটি কর্পোরেশন অথবা কোনো সরকারী দপ্তর চলেনা। টেক্স আর আয়কর রাষ্ট্র ও সংস্থাকে নিতে হয়। তাবে তা হতে হবে যথাযত ও ন্যায়নীতিমালার মধ্যে। হঠাৎ করে অধিক হারে টেক্স নিতে গেলে ঝামেলা হবে। তা বাস্তবায়ন করা কষ্ট হবে। ন্যায় হউক বা অন্যায় হউক যে কোনো জনবান্ধব কর্মসূচী বাস্তবায়ন করতে হলে রাজনৈতিক ঐক্য দরকার। ক্ষমতাসীন নেতার মধ্যে সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন নিয়ে ঐক্যবদ্ধ চিন্তা চেতনা থাকতে হবে। বর্তমান মেয়র সরকারী দলের নির্বাচিত মেয়র। জনগণ নির্বাচনের মাধ্যমে তাকে নির্বাচিত করেছেন। দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মী তখন তার পক্ষে কাজ করে তাকে জয়ী করেছেন। তিনি জোর করে মেয়র হননি। তবে স্বয়ং তার দলে এতো ক্ষোভ বিক্ষোভ কেন, মেয়রের আসনে বসার পর হতে তিনি দলের পক্ষ থেকে সহযোগীতা পেয়েছেন বলে দৃশ্যমান নয়। তিনি যে কর্মসূচীই নেয়না কেন তাঁকে ব্যর্থ করার অপচেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করছেন কর্পোরেশনকে স্বাবলম্ভী করতে । লুটপাট বন্ধ করতে। কর্মকর্তা কর্মচারীদের দায়িত্ব যথাযত পালনে নির্দেশ ও আদেশ দিচ্ছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার তিনি সহ্য করছেননা। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরোদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন। সব দিক বিবেচনা করে তিনি একটা কল্যাণময় কর্পোরেশন করতে চেষ্টা করছেন বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। কিন্তু সেখানে বাঁধা হচ্ছে কতিপয় ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও সমর্থক কর্মী। পদে পদে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। কর্মসূচী গ্রহণ করলেই সেখানেই বাঁধা প্রাপ্ত হচ্ছেন। দলের নেতাকর্মী কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হলে দলের নির্বাচিত মেয়র কী করে সামনে এগুবে সেটায় এখন জনগণের ভাবনা। জনগণ চাইছে নগর জনবান্ধব হউক। বাজার, রাস্তা, ব্রীজ, নির্মাণ যথাযত হউক। সিটি কর্পোরেশনের স্কুল মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দিরের আরো উন্নয়ন অগ্রগতি দুর্নীতিমুক্ত হউক। শৃংখলায় সবগুলো সেক্টর ফিরে আসুক, দুর্নীতি বন্ধ হউক। রাস্তা ঘাটের যথাযত উন্নয়ন হউক। বাজার, মার্কেট, স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত তদারকী ও নার্সিং হউক। এসব ঠিকঠাকভাবে চললে জনগণ খুশী। সব কিছুর মূল্য বাড়ছে। ভোগ্য পণ্যের বাজারে কোথাও কোন মূল্যের কমতি নেই। ঘরভাড়া বাসাভাড়া গ্যাস,বিদ্যুৎ বিল বাড়ছে। তাহলে বাড়ী ভাড়া জমিদারগণ বৃদ্ধি করতে পারলে সিটি কর্পোরেশন মন্ত্রণালয় ও নিজস্ব তহবিলের সু-রক্ষার জন্য হোল্ডিং টেক্স ন্যায্যমূল্যভাবে নিতে পারবেনা কেন? টেক্স না নিলে কর্পোরেশন কিভাবে চলবে। কর্পোরেশনের আয় ব্যয় কিভাবে পরিচালিত হবে, সেখানে জনগণের প্রশ্ন এখন প্রবল হচ্ছে। কে কার আমলে কতো নিয়েছে সেটা বড় কথা নয়। এখন বাজার ও মার্কেট জীবন মান নির্ণয় করে কর্পোরেশনকে সবকিছু ঠিক করে চলতে হবে। জনগণ ও সিটি কর্পোরেশনকে বাঁচিয়ে রাখতে যা যা করা দরকার তা না করতে পারলে বর্তমান মেয়র ব্যর্থ হবেন। ব্যর্থ না হওয়ার জন্য তাকে কাজ করতে দিতে হবে। টেক্স সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে। টেক্স নিয়ে রাজনীতি না করে কীভাবে টেক্সের হার ও আদায় করতে হবে তা নিয়ে সব রাজনৈতিক দল ও জনপ্রতিনিধিদের উচিৎ মেয়রকে পরামর্শ দেয়া এবং মাননীয় মেয়রের উচিৎ রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের গোলবৈঠক ডেকে এ সমস্যার সমাধান করা। একজন নির্বাচিত মেয়রকে আল্টিমেটাম দিয়ে চেয়ারচ্যুৎ করা কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্যে পড়েনা। এক্ষেত্রে মেয়রের উচিৎ কাউন্সিলরও জনপ্রতিনিধি,রাজনৈতিক দল, মহল্লা সরদার কমিটির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে একটি উন্নয়ন তদারকী ডেভলাপ কমিটি গঠন করা। তাদের পরামর্শ ও নির্দেশনা দেখে মাননীয় মেয়র সিদ্ধান্ত দিবেন। আগামীতে যে কয়টি মাস তিনি দায়িত্বে আছেন এসময়টুকু সঠিক ও সুন্দরভাবে কাজ করলে সিটি এলাকায় বহু উন্নয়ন কাজ দেখা যাবে। রাজনীতির খেলায় জনগণ যেনো ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ হতে বিরোধীতার সম্মুখীন না হয় সেটায় এখন নগরবাসীর প্রত্যাশা। একজন জনপ্রতিনিধিকে যেনোতেনোভাবে হেনস্তা করার মনমানসিকতা পরিহার করতে হবে। তাকে তাঁর চেয়ারের সম্মান ধরে রেখে নগর উন্নয়ন ও জনকল্যাণে কাজ করতে দিতে হবে। আমার মনে হয় তিনি সব ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরোদ্ধে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে সক্ষম হবেন। তিনি সততা নিষ্ঠা দুর্নীতিমুক্ত হিসেবে এ কর্পোরেশনকে এগিয়ে নিবেন। তার সমস্ত বক্তব্যে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়। আশা করা যায় তিনি তাঁর যোগ্যতা, আন্তরিকতা ও ভালোবাসা দিয়ে জনগণের সমর্থন আদায় করে নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে দমিয়ে রাখা যাবেনা বলে মনে করে জনগণ। নাগরিকদের বিশ্বাস এগিয়ে যাবে মেয়র এগিয়ে যাবে সিটি কর্পোরেশন। জনকল্যাণ ও সুপ্ত রাজনীতি পরিচালনায় নগর রাজনীতি পরিচালিত হউক সেটায় জনপ্রত্যাশা।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply