২৬ এপ্রিল ২০২৪ / ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ভোর ৫:৫০/ শুক্রবার
এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ৫:৫০ পূর্বাহ্ণ

পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরন বন্ধ কর : শহীদ আবুল হাশেমের স্মরণ সভায় ছাত্র ইউনিয়ন

     

 

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম জেলা সংসদ কার্যালয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সদস্য আতিক রিয়াদের সভাপতিত্বে শহীদ আবুল হাশেম’র স্মরনসভা অনুষ্ঠিত হয়। স্মরনসভায় অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ইউনিয়ন, কেন্দ্রীয় সংসদ সদস্য অটল ভৌমিক। ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলা সদস্য এ্যানি সেনের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলা সদস্য এঞ্জেল চাকমা, ছাত্র ইউনিয়ন ডবলমুরিং থানা সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদ আল নাহিয়ান, ওসমান গনি প্রমুখ।

স্মরন সভায় বক্তারা বলেন- শহীদ আবুল হাশেম ছিলেন একজন শিক্ষা অধিকার আন্দোলনের কর্মী। ছোটবেলা থেকেই লালন করতেন একটি শোষণ-বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মানের স্বপ্ন। এরই ধারাবাহিকতায় যোগ দিয়েছিলেন ছাত্র ইউনিয়নে। ১৯৯৮ সালে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় ছাত্র ইউনিয়ন গড়ে তোলে নকল ও শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বিরোধী আন্দোলন। শহীদ হাশেম ছিলেন এই আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা। শত ভয়ভীতিতেও আন্দোলন বন্ধ না করায় একই বছর ৮ অক্টোবর স্থানীয় সন্ত্রাসীরা রাতের অন্ধকারে ডিগ্রি পরীক্ষার্থী হাশেমকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

বক্তারা আরো বলেন- শহীদ হাশেম শিক্ষা ব্যবস্থার অসঙ্গতি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিল বলেই সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করেছিল। কিন্তু শহীদ হাশেমের মৃত্যুর ১৯ বছর পেরিয়ে গেলেও তার স্বপ্ন আজো পূরন হয়নি। আজো দেশের ছাত্রসমাজ একটি সার্বজনীন বিজ্ঞানভিত্তিক একইধারার অসাম্প্রদায়িক শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য আন্দোলন করে আসছে। এদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় বারবার সরকার পরিবর্তন হলেও কোন সরকারই এদেশের ছাত্র সমাজের অধিকার নিশ্চিত করেনি। এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এখনো ধনী-গরীবের বিভাজন রয়েছে। যে যত বেশি টাকা দেবে , সে তত ভাল শিক্ষা পাবে এই ব্যবস্থা শিক্ষাকে আজ পরিণত করেছে পণ্যে। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বঞ্চিত করে তাদেরকে অজ্ঞতার অন্ধকারে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। প্রতিনিয়ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বেতন বাড়ানো হচ্ছে, বাড়ছে শিক্ষার উপকরনের দাম। ফলে আমাদের মত মধ্যম আয়ের দেশের জন্য শিক্ষা গ্রহন হয়ে উঠছে মরিচিকার ন্যায়। এছাড়া প্রতিবছরের মত এই বছরও শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে ইতিহাস বিকৃত ও ভুলেভরা পাঠ্যবই। নকল প্রবণতা কমলেও বেড়েছে প্রশ্নপত্র ফাঁসের হার। এছাড়া সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শে বিভিন্ন শ্রেণীর বই থেকে বাদ দেয়া হয়েছে রবীন্দ্রনাথ সহ প্রগতিশীল লেখকদের লেখা। পাঠ্যবইকে ব্যবহার করা হচ্ছে রাজনৈতিক দলের প্রচার মাধ্যম হিসাবে। ছাত্র সংসদ নির্বাচন না থাকায় শিক্ষাঙ্গনগুলো পরিণত হয়েছে সরকারী ছাত্র সংগঠনগুলোর অপরাধের আখাড়ায়। বক্তারা অবিলম্বে পাঠ্যবইয়ের সাম্প্রদায়িক পরিবর্তন বাতিলের দাবি জানান। এছাড়া তারা চাকসু সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেয়ার দাবি এবং বাংলাদেশের বর্তমান বৈষম্যমূলক শিক্ষা ব্যবস্থা বাতিল করে সার্বজনীন বিজ্ঞানভিত্তিক অসাম্প্রদায়িক আধুনিক শিক্ষানীতি প্রণয়নের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply