২৯ মার্চ ২০২৪ / ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / সকাল ১১:৪১/ শুক্রবার
মার্চ ২৯, ২০২৪ ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ

গাইবান্ধা হাসপাতাল থেকে ঢামেক হাসপাতালে রেফার্ড তোফা-তহুরা অসুস্থ্য

     

মোঃ গোলজার রহমান
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাশদহ গ্রামের জোড়া লাগালো শিশু তোফা-তহুরা অপারেশনের মাধ্যমে আলাদা করার পর সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফেরার এক মাসের মাথায় ফের অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। যার কারনে তাদেরকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল থেকে ঢামেক হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
তোফা-তহুরার মা শাহিদা বেগম জানান,গত এক সপ্তাহ ধরে তোফা-তহুরার শারিরিক অবস্থার পরিবর্তন দেখা দিলে রোববার সকালে তাদেরকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের শারিরিক বিভিন্ন বিষয়ে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের ডাক্তাররা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের অধ্যাপক ডাক্তার শাহিনুর ইসলামের সাথে যোগাযোগ করে রোববার দুপুর ১ টায় তাদেরকে ঢাকায় রেফার্ড করে দেয়। পরে তোফা-তহুরাকে সুন্দরগঞ্জের কাশদহ গ্রামের নানার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে সুন্দরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এ্যাম্বুলেন্স স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে তোফা-তহুরাকে নিয়ে বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডাক্তার এ বি এম আবু হানিফ তাদের রেফার্ড করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেজ্ঞ ডাক্তার আবুল আজাদ মন্ডল জানান, তোফা-তহুরার বিষয়টি অত্যন্ত জটিল । যার কারনে এখানে কোন প্রকার চিকিৎসা প্রদান করা হয়নি। ঢামেক হাসপাতালের শিশু বিভাগের সাথে যোগাযোগ করে তাদেরকে রেফার্ড করা হয়েছে। তিনি বলেন তাদের শরিরের ওজন কমে গেছে,গায়ে জ্বর রয়েছে,যা খায় তা বমি করে বের করে দিচ্ছিল এমনকি তারা অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছে।
শাহিদা বেগম জানান,এক সপ্তাহ থেকে তোফা-তহুরা জ্বরে ভুগছিল। সে কারনে তারা দুই বোন কম খেত। এতে তারা দুর্বল হয়ে পরে। এছাড়া ঘন ঘন প্রসাব করছিল । তারা যা খাচ্ছিল তাই বমি করে দিচ্ছিল। এসব কারনে তাদেরকে গাইবান্ধা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর দুই বোন তোফা-তহুরার জন্মদিন পালন করা হয় তাদের নানার বাড়িতে। এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের অধ্যাপক ডাক্তার শাহিনুর ইসলাম, অধ্যাপক ডাক্তারএ কে এম আমিরুল মোরশেদ খষরু, অধ্যাপক ডাক্তার এমডি মহিবুর হোসাইন নিরব, সুন্দরগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত ইউএনও সামিউল আমিন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহমুদ হোসেন মন্ডল,রামজীবন ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মিজানুর রহমান প্রমূখ।
অপারেশন করার পর সুস্থ্য হয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে বাড়ী আসেন তারা। তারা নানার বাড়ী উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের কাশদহ গ্রামে অবস্থান করছিল।
২০১৬সালের ২৯ সেপ্টেম্বর বাবার বাড়ীতে গ্রাম্য ধাইয়ের হাতে যমজ সন্তানের জন্ম দেন শাহিদা বেগম। দুই বোন শুধু যমজ নয় একজন আর একজনের সাথে জোড়া লাগানো।এনিয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় খবর প্রকাশ হলে বিষয়টি প্রধান মন্ত্রীর নজরকারে । পরে ২০১৬ সালের ১৬ জুলাই তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশে শুরু হয় তাদের চিকিৎসা। ২০১৬ সালের ২০অক্টোবর তাদের প্রথম অস্ত্রোপচার করা হয় । ২০১৭ সালের ১ আগষ্ট তাদেরকে আলাদা করার জন্য অস্ত্রোপচার করা হয়। ঢাকা হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক আশরাফুল হকের নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক তার অস্ত্রোপচার করেন। তোফা-তহুরা শাহিদা বেগমের হয় সন্তান। দীর্ঘ ৮বছর আগে ঝিনিয়া গ্রামের রাজা মিয়ার সাথে বিয়ে হয় শহিদার।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply