১৬ এপ্রিল ২০২৪ / ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৪:৪০/ মঙ্গলবার
এপ্রিল ১৬, ২০২৪ ৪:৪০ অপরাহ্ণ

মুসলিম মিল্লাতের মহান জাতীয় শহীদ দিবস শাহাদাতে কারবালা দিবস উপলক্ষে বিশ্ব সুন্নী আন্দোলনের সমাবেশ ও শোভাযাত্রা

     

মিথ্যা-অবিচার-স্বৈরতার কবল থেকে সত্য ও মানবতার মুক্তি সাধনায় সর্বকালের সর্বোচ্চ মহা শাহাদাত, মুসলিম মিল্লাতের মহান জাতীয় শহীদ দিবস শাহাদাতে কারবালা দিবস উপলক্ষে বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন, বাংলাদেশ এর উদ্যোগে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তন হলে আজ এক বিরাট সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান মেহমান হিসেবে দোআ করেন তফসিরে কোরআন মাশাহেদুল ঈমানের প্রণেতা ও পবিত্র বোখারী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ প্রণেতা, ওস্তাজুল ওলামা, শায়খুল হাদিস, ইমামে আহলে সুন্নাত, পীরে হাক্কানী, ওলীয়ে রাব্বানী হজরত আল্লামা সৈয়দ সাইফুর রহমান নিজামী শাহ।
আল্লামা শাহ আরেফ সারতাজ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বিরাট সমাবেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন এর প্রতিষ্ঠাতা এবং আহলে সুন্নাতের নির্দেশিত জীবন ব্যবস্থার মানবিক রূপরেখা খেলাফতে ইনসানিয়াত তথা সর্বজনীন মানবিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও মানবিক সাম্যের রূপরেখায় মুক্ত মানবতার অখন্ড বিশ্বব্যবস্থার দিকদর্শন বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লবের প্রবর্তক হজরত আল্লামা ইমাম হায়াত।
বিশেষ মেহমান হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইমামে আহলে সুন্নাত আল্লামা সৈয়দ আবেদ শাহ মোজাদ্দেদী (রঃ) এর সাহেবজাদা পীর আল্লামা সৈয়দ জাহান শাহ, অধ্যাপক আল্লামা ডঃ আতাউর রহমান মিয়াজী (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক আল্লামা ডঃ আবদুল্লাহ আল মারুফ (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), পীরে তরিকত আল্লামা মোশাররফ হোসেন হেলালী (হাক্কানী দরবার শরীফ, ঢাকা), অধ্যাপক আল্লামা ডঃ আব্দুল কাদির (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক আল্লামা আহসানুল হাদী (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক ডঃ আল্লামা নুরুন্নবী (এশিয়ান ইউনিভার্সিটি, ঢাকা)।
প্রধান বক্তা হিসেবে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যে ইমাম হায়াত দশ-ই মহররম শাহাদাতে কারবালা দিবসকে ঈমানী অস্তিত্বের স্মারক ও মুসলিম মিল্লাতের মহান জাতীয় শহীদ দিবস এবং মানবতার মুক্তির মহা শাহাদাত উল্লেখ করে বলেন, প্রাণপ্রিয় ইমামে আকবর সাইয়েদেনা হজরত ইমাম হুসাইন রাদিআল্লাহু আনহুর অতুলনীয় মহান শাহাদাতের মধ্যেই নিহিত সত্য ও জীবনের মর্মধারা তথা  দুনিয়ার পূর্বাপর সমস্ত জিহাদ ও শাহাদাতের সম্মিলিত পূর্ণ মর্ম। তিনি বলেন, মহান ইমামে আকবর রাদিআল্লাহু আনহুর শাহাদাতের শিক্ষা ও তাৎপর্য উপলব্দি ব্যতীত ঈমান ও দ্বীন বুঝা সম্ভব নয় এবং প্রকৃত ইসলাম ও ইসলামের নামে ছদ্মবেশী কূফরীর প্রতারণার পার্থক্যও বুঝা সম্ভব নয়।
ইমাম হায়াত বলেন, মহান জাতীয় শহীদ দিবস কারবালার অতুলনীয় মহান শাহাদাত প্রাণের বিনিময়ে কূফর-জুলুম-স্বৈরতার ধারক অপশক্তির কবল থেকে পবিত্র কলেমার আমানত রক্ষা তথা ঈমানী আত্মা ও দ্বীনের প্রকৃত রূপরেখা এবং সমগ্র মানবমন্ডলীর জন্য ন্যায়-মানবতা-নিরাপত্তা-অধিকার-স্বাধীনতা-কল্যাণের ধারা ও কাঠামো রক্ষার শাহাদাত। তিনি বলেন, আত্মা ও জীবনকে বাতেল জালেম অপশক্তির আঁধার-রুদ্ধাতা-বিনাশ থেকে মুক্ত রাখা এবং সত্য ও মানবতার মুক্ত প্রবাহ জারি রাখাই ছিল শাহাদাতের কারবালার অন্যতম মূল লক্ষ্য। পবিত্র কলেমার মর্মধারার চুড়ান্ত প্রকাশ মহান শাহাদাতে কারবালার শিক্ষা ব্যতীত ঈমানী অস্তিত্ব ও দ্বীনের প্রকৃত রূপরেখা এবং অপশক্তির গ্রাসমুক্ত স্বাধীন মানবতার কোন উপায় নেই।
কারাবালার শাহাদাত দয়াময় আল্লাহতাআলা ও তাঁর প্রিয়তম হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রেমের পরম নিদর্শন উল্লেখ করে ইমাম হায়াত বলেন, দয়াময় আল্লাহতাআলার উদ্দেশ্যে সব কিছুর উর্ধ্বে প্রাণাধিক প্রিয়নবীর প্রেমই শাহাদাতে কারবালার মূল মর্ম, যে প্রেম ভিত্তিক আত্মা ব্যতীত শাহাদাতে কারবালার শিক্ষা চেতনা যেমন উপলব্ধি করা যাবেনা তেমনি আত্মা ও জীবন আঁধার কলুষতায় নিমজ্জিত হয়ে বাতেল জালেম অপশক্তির কোন না কোন দিকে বিকিয়ে যাবে। কোন অবস্থায় বাতেল জালেম অপশক্তিকে আত্মিকভাবে কবুল না করা পবিত্র কলেমার অঙ্গীকার তথা শাহাদাতের কারবালার অন্যতম মৌলিক শিক্ষা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জীবনের কোন স্তরে বাতেল জালেম অপশক্তির সহযোগী হওয়া শাহাদাতে কারবালার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতার মাধ্যমে আত্মবিনাশ।
ইমাম হায়াত বলেন, জীবনের সত্য তথা পবিত্র কলেমা ভিত্তিক আত্মসত্তা ও জীবন চেতনা রেসালাত কেন্দ্রিক তাওহীদ ভিত্তিক আত্মসত্তা যার সম্পূর্ণ বিপরীত বিরুদ্ধ বিষয় মিথ্যার উৎস নাস্তিক্য উদ্ভূত বস্তুবাদী আত্মসত্তা ও জীবন চেতনা যে দুই বিপরীত ধারার চিরন্তন অনিবার্য সংগ্রামই কারবালার পবিত্র জিহাদ ও মহান শাহাদাতের ঐতিহাসিক পটভূমি। তিনি বলেন, এভাবে সত্য-মিথ্যা, মানবতা-পাশবতা, স্বাধীনতা-পরাধীনতা, অধিকার-স্বৈরতা, মালিকানা-দাসত্ব, বিকাশ-রুদ্ধতা, দয়া ভালবাসা-হিংস্রতা, শান্তি নিরাপত্তা-আতংক খুনের দুই চিরন্তন বিপরীত ধারার অনিবার্য সংগ্রামই মহান শাহাদাতে কারবালার ঐতিহাসিক প্রেক্ষপট। তিনি বলেন, যারা কোন প্রকার বাতেল ফেরকা ও বস্তুবাদী মতবাদে যুক্ত এবং এসব মতবাদের অসৎ স্বার্থে সৃষ্ট একক গোষ্ঠিবাদী অপরাজনীতি ও স্বৈর দস্যুতার রাষ্ট্রব্যবস্থার সমর্থক তাদের অবস্থান শাহাদাতে কারবালার বিপরীত ধারায় ফলে তারা ঈমান দ্বীনের পবিত্র কলেমা থেকেও বিচ্ছিন্ন।
ইমাম হায়াত বলেন, মানব জীবনকে তার সৃষ্টির লক্ষ্য উদ্দেশ্যে পৌঁছানোর জন্য এবং জীবন বিণাশী সকল অপশক্তি থেকে বাঁচানোর জন্য দয়াময় আল্লাহতাআলার পরম রহমতে দুনিয়ায় মহান প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শুভাগমনের যে দান ও লক্ষ্য, সত্য ও জীবনের অপরিহার্য সে দান যখন অপশক্তি ছিনিয়ে নিচ্ছিল এবং আত্মা ও জীবনের সব দিকে সে লক্ষ্যের বিপরীতে ফেরাউন-নমরূদ-আবু জেহেল-আইয়ামে জাহেলিয়াতের এজিদবাদী কূফরী ধারাবাহিকতায় অবৈধ মুলুকিয়তের প্রক্রিয়ায় মিথ্যা-আঁধার-পাশবতা-পরাধীনতা-বর্বরতা-স্বৈরতার বিণাশী ধারায় সবকিছু যখন নিমজ্জিত করা হচ্ছিল, মহামান্য খোলাফায়ে রাশেদীনের ধারাবাহিকতায় প্রাণপ্রিয় ইমামে আকবার রাদিআল্লাহু আনহু এবং মহামহিম পবিত্র আহলে বায়েত রাদিআল্লাহু আনহুম তখন শাহাদাতের সর্বোচ্চ মহা ত্যাগের মাধ্যমে সে দান ও লক্ষ্য রক্ষা করেন।
ইমাম হায়াত বলেন, অবৈধ রাষ্ট্র ক্ষমতার জোরে ঈমানী আত্মসত্তা ও মানবিক জীবন চেতনা উৎখাত করে বস্তুবাদী গোত্রবাদী আঁধার রুদ্ধতার পাশবিক বর্বরতা প্রতিষ্ঠা করে যখন আত্মিক বিণাশ করা হচ্ছিল তখন শাহাদাতে কারবালা তা প্রতিরোধ করে ঈমানী অস্তিত্ব তথা সত্যের ধারা জারি রাখে। তিনি বলেন, মুসলিম ছদ্মবেশে কূফরী অপশক্তি যখন দ্বীনকে বিকৃত ও উৎখাত করে দ্বীনের নামে অধর্ম প্রতিষ্ঠা করছিল তখন কারবালার শাহাদাত তা প্রতিহত করে দ্বীনের প্রকৃত ধারা সমুন্নত রাখে। সত্যের মুক্ত প্রবাহ এবং জীবনের অধিকার স্বাধীনতার সর্বজনীন রাষ্ট্রব্যবস্থা খেলাফতে ইনসানিয়াতের বিপরীতে যখন বস্তুবাদী গোত্রবাদী ধারায় একক গোষ্ঠির স্বৈরদস্যুতা বা মুলুকিয়ত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রাষ্ট্রকে কুক্ষিগত ও অন্যায় অবিচারের হাতিয়ার করে সত্য ও জীবন রুদ্ধ করা হচ্ছিল শাহাদাতে কারবালা-ই তখন তা রূখে দাঁড়ায়।
ইমাম হায়াত বলেন, ঈমান-কূফর, সত্য-মিথ্যা, হালাল-হারাম, আলো-আঁধার যেমন পরস্পর বিরুদ্ধ বিপরীত বিষয় তেমনি দ্বীনের নির্দেশিত খেলাফতে ইনসানিয়াত বা সর্বজনীন মানবতার মুক্ত রাষ্ট্র এবং অপরদিকে মুলুকিয়ত বা রাষ্ট্রের নামে একক গোষ্ঠির স্বৈরদস্যুতার কারাগার কষাইখানা সম্পূর্ণ বিপরীত বিষয়। তিনি বলেন, খেলাফতে ইনসানিয়াতের উৎস ঈমানের পবিত্র কলেমা যেখানে মানুষকে আত্মিকভাবে সব বস্তুর উর্ধ্বে ও জীবনকে স্বাধীন এবং দুনিয়াকে সবার সব মানুষের জন্য ঘোষিত হয়েছে, আর মুলুকিয়তের উৎস নাস্তিক্য উদ্ভুত বস্তুবাদ যা শুধু জীবন ও স্বাধীনতা অধিকার অস্বীকার ও হরণই করেনা বরং পবিত্র কলেমার চেতনা অস্বীকৃতির উপর প্রতিষ্ঠিত এবং প্রকৃত পক্ষে মহামহিম তাওহীদ ও মহামান্য রেসালাতের পরম কর্তৃত্বেরও অস্বীকৃতি।
ইমাম হায়াত বলেন, কারবালার মহান শাহাদাত পবিত্র কলেমার আলোকধারার পূর্ণাংগ প্রকাশ ও দ্বীনে হকের রূপরেখার চুড়ান্ত রূপ যে মহান শাহাদাতের দিকদর্শন ব্যতীত ঈমানী অস্তিÍÍত্ব ও সত্যের মুক্ত প্রবাহ এবং মানবতার মুক্ত জীবন অসম্ভব। তিনি বলেন, সত্য ও মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে শাহাদাতের কারবালার আত্মিক দিশা যেমন ঈমানী অস্তিত্বের একমাত্র রূপরেখা কলেমা প্রদত্ত রেসালাত কেন্দ্রিক তাওহীদ ভিত্তিক আত্মসত্ত্বা ও জীবন চেতনা তেমনি এ মহান শাহাদাতের ভিত্তিতে জীবনের রাজনৈতিক নির্দেশনা দ্বীনী মূল্যবোধ ভিত্তিক সর্বজনীন মানবিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও মানবিক সাম্যের রূপরেখায় মুক্ত মানবতার অখন্ড বিশ্বব্যবস্থা খেলাফতে ইনসানিয়াত যা ব্যতীত সত্যের মুক্ত প্রবাহ এবং জীবন ও দুনিয়া মিথ্যা অবিচারের ধারক একক গোষ্ঠির স্বৈরদস্যুতায় অবরুদ্ধ হয়ে যায়।  দ্বীন ও জীবনের জন্য কলেমা প্রদত্ত ও শাহাদাতের কারবালার নির্দেশিত আধ্যাত্মিক ও রাজনৈতিক কোন দিক বাদ দিলে ঈমানী অস্তিত্বের অবলম্বন এ মহান শাহাদাতের সাথে চরম বিশ্বাসঘাতকতা তথা দয়াময় আল্লাহতাআলা ও তাঁর মহান হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকেই বিচ্ছিন্নতা।
ইমাম হায়াত বলেন, দ্বীন ও জীবনের কোনো দিকে মহান শাহাদাতে কারবালার শিক্ষা ও নির্দেশনা হারিয়ে ফেলা নিজেদের ঈমানী অস্তিত্ব ও দ্বীনের প্রকৃত ধারা হারিয়ে ফেলা এবং স্বাধীনতা-অধিকার-নিরাপত্তা হারিয়ে অপশক্তির গ্রাসে জীবন ও দুনিয়া চলে যাওয়া। তিনি বলেন, অরাজনৈতিক গন্ডীর দাসত্বের ফাঁদে আবদ্ধ করে কিম্বা বিভিন্ন বাতেল জালেম অপশক্তির অসৎ স্বার্থে সৃষ্ট অপরাজনীতির বিনাশী শিকার করে মহান শাহাদাতে কারবালার শিক্ষা ও নির্দেশনা ভুলিয়ে দেয়ার ভয়াবহ চক্রান্ত চলছে। তিনি বলেন, নানাবিধ বাতেল ও তাদের সহযোগী দালালদের ষড়যন্ত্রে মহান শাহাদাতে কারবালার লক্ষ্য ও নির্দেশনা পরিত্যক্ত হয়ে কেবল স্মৃতিচারণ ও শোক পালনে সীমাবদ্ধ হয়ে যাওয়ার কারণেই মিল্লাত ও সমগ্র মানবতা আজ সত্য হারা ও স্বাধীনতা অধিকার হারিয়ে অপশক্তির গ্রাসে নিপতিত হয়ে রক্তের সাগরে ভাসছে এবং জীবন ও দুনিয়া সম্পূর্ণ ভাবে বাতেল জালেম স্বৈরদস্যু শক্তির কবলে অবরূদ্ধ হয়ে গেছে।
বদর ওহোদ কারবালার পক্ষ ও বিপক্ষ এবং শিক্ষা চেতনা এক ও অভিন্ন উল্লেখ করে তিনি বলেন, মহামান্য খোলাফায়ে রাশেদীন, মকবুল সাহাবায়ে কেরাম, সত্যের ইমামবৃন্দ ও মহান আওলিয়াকেরাম যুগ থেকে যুগান্তরে চিরন্ত্রন সত্যের ধারাবাহিকতা যাদের পূর্ণাংগ পথ ও দিশা থেকে বিচ্যুত হয়ে অপশক্তির বিনাশী প্রক্রিয়ায় আত্মসমর্পনই সত্য ও মানবতার বিপর্যয়ের প্রধান কারণ। তিনি বলেন, মহান শাহাদাতে কারবালার নির্দেশনায় তথা পবিত্র কলেমার দিকদর্শনে এবং ন্যায় অন্যায়ের মানবিক মাপকাঠিতেই জীবন ও দুনিয়ার ইতিহাসের সব ঘটনা ও আবর্তন বিবর্তন বিচার ও মূল্যায়ন করতে হবে না হয় সত্য ও জীবনের বিরূদ্ধে অপশক্তির অন্যায় অবিচার-পাশবতা-স্বৈরচারের প্রক্রিয়ায় আত্মসমর্পন হবে এবং অপশক্তিই বিজয়ী থাকবে।
ইমাম হায়াত বলেন, পবিত্র কলেমা ও মহান শাহাদাতে কারবালার শিক্ষা এবং ন্যায় ও মানবতার দৃষ্টিতে একক গোষ্ঠির স্বার্থে  দুনিয়াকে খন্ড বিখন্ড করে সত্য প্রবাহ ও সম্পদ প্রবাহ রূদ্ধ করে সব মানুষের জীবন অস্বীকার করে রাষ্ট্রকে একক গোষ্ঠিভিত্তিক স্বৈরতান্ত্রিক করে ফেলা সত্য ও জীবনের বিরুদ্ধে চরম অপরাধ, আর এই অপরাধের প্রতিরোধই ছিল কারবালার মহান শাহাদাতের অন্যতম মৌলিক বিষয়। তিনি বলেন, প্রকৃত ধর্মের আলোকধারা ও মূল্যবোধের ভিত্তিতেই রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং জীবনের সব ব্যবস্থা পরিচালিত হবে, কিন্তু রাষ্ট্রকে একক ধর্মের নামে কুক্ষিগত করে ফেলা সব প্রকৃত ধর্মের শিক্ষা বিরোধী যেখানে ধর্মরাষ্ট্রের নামে ধর্মই কুক্ষিগত হয়ে একক গোষ্ঠির অসৎ স্বার্থের হাতিয়ার হয়ে যায় এবং প্রকৃত ধর্ম ধ্বংস হয়ে যায়।
ইমাম হায়াত বলেন, ইসলাম ও ন্যায়ের ধর্ম এবং মানবতার দৃষ্ঠিতে রাষ্ট্র ও বিশ্ব সব মানুষের জন্য মুক্ত থাকবে এবং একক ধর্ম-জাতি-গোত্র-শ্রেণী-পেশা-লিঙ্গ-বর্ণ ভিত্তিক বা একক গোষ্ঠি ভিত্তিক হতে পারে না। দুনিয়াব্যাপী বিভিন্ন নামে একক গোষ্ঠি ভিত্তিক স্বৈর রাষ্ট্রব্যবস্থা ও অমানবিক বিশ্বব্যবস্থাই সত্য ও ন্যায়ের বিলুপ্তি এবং খুন-জুলুম-পাশবতা-বর্বরতা-শোষন-দারিদ্র-বঞ্চনা-বৈষম্য-অরাজকতা-লুন্ঠন-হিংস্রতার কর্তৃত্ব আধিপত্য ও জীবনের উর্ধ্বে বস্তুর সার্বভৌমত্ব এবং সর্বোপরি মিথ্যা ও অবিচারের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছে। তিনি বলেন, কলেমা-দ্বীন-মানবতার সুরক্ষার দিকদর্শন মহান শাহাদাতে কারবালার নির্দেশিত জীবন চেতনায় একমাত্র সর্বজনীন মানবিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিশ্বব্যবস্থা তথা মানবতার বিপ্লবই সকল অপশক্তির কবল থেকে সত্য ও মানবতার বিজয় সুনিশ্চিত করতে পারে।
দয়াময় আল্লাহতাআলার অপার রহমতে দুনিয়ায় মানব জীবনে মহান প্রিয়নবীর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শুভাগমনের দান ও লক্ষ্য বাস্তবায়নে শাহাদাতে কারবালার শিক্ষা ও নির্দেশনায় দুনিয়াব্যাপী বিরাজমান মিথ্যা-অবিচার-জুলুম-শোষণ ভিত্তিক একক গোষ্ঠিবাদী স্বৈর রাষ্ট্রব্যবস্থা ও জীবন বিধ্বংসী বিশ্বব্যবস্থার কবল থেকে মুক্তির লক্ষ্যে সত্য-সুবিচার-মানবতা-অধিকার ভিত্তিক সর্বজনীন মানবিক সমাজ-রাষ্ট্র-বিশ্বব্যবস্থা খেলাফতে ইনসানিয়াত গড়ে তোলার বিপ্লবী লক্ষ্যে দৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহনের জন্য ইমাম হায়াত সবার প্রতি আহ্বান জানান।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply