মাননীয়,

চট্টগ্রামের মেয়র ডাঃ শাহাদাত হোসেন  সমীপে,

শ্রদ্ধেয় শাহাদত ভাইজানরে ,

গরম গরম কথার শুরুতে আমার লাখ কোটি সালাম জানিবেন। আশা করি, আল্লাহ মালিকের অপার মহিমায় ভালো থাকিয়া বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের মেয়র হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ ও পালন করিয়া নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে নানান ফর্মূলা তৈরী ও বাস্তবায়ন করিয়া ভালোই আছেন। আমিও গ্রাম বাংলার এক মফস্বল শহরে থাকিয়া দেশের ভবিষ্যতের কথা ভাবিয়া ভাবিয়াই নানান রকম চিন্তা করিয়া ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্ছার মতো খাইয়া না খাইয়া বাঁচিয়া আছি।

 গেলবার  অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস সমীপে গরম কথা লিখিবার সময় এইবার আপনার সমীপে লিখিব বলিয়াছিলাম বলিয়াই আপনাকে লিখিতেছি বলিয়া রাগ করিবেন না বরং শত ব্যস্ততার মধ্যেও গরম কথাটুকু পড়িয়া দেখিবেন ও যাহা প্রয়োজন তাহা করিবেন আর ভুল হইলে নিজ গুনে মাফও করিয়া দিবেন। এর আগে চট্টগ্রামের মেয়রগণকেও লিখিয়াছিলাম, জনগণের কাজও হইয়াছে।

ভাইজানরে,

আপনি হইলেন, দেশের মেঘাসিটিখ্যাত সমুদ্রবন্দর বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের বর্তমান মেয়র। ‘জনতার মেয়র’ হিসাবে আপনার দেশ জুড়িয়া পরিচয় রহিয়াছে। এরও আগে আপনি চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সফল সভাপতিও ছিলেন। পেশায় চিকিৎসক হইলেও আপনার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞার বিশালতা রহিয়াছে। জনবান্ধব নেতা হিসাবে আপনার তুলনা আপনিই । যাক, সেইসব কথা।

ভাইজানরে,

চট্টগ্রামে আপনার আগে আরো ৭ জন মেয়রের চেয়ারে বসিয়াছেন। তাহাদের কাজকর্ম আচার আচরণ ও ক্ষমতার ব্যবহার নগরবাসী দেখিয়াছে ও মনেও রাখিয়াছে।  ১৯৮৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর জাতীয় পার্টির আমলে বাঁশখালীর কৃতিসন্তান মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী মেয়রের দায়িত্ব নিয়াছেন। মাত্র ১বছর ৪ মাসের মাথায় ১৯৯০ সালে ৪ ডিসেম্বর তিনি মেয়র পদ হারাইয়াছেন। সামান্য এই কয়েকদিনে তিনি বাঁশখালীর অনেক মানুষকে চাকুরী দিয়াছিলেন সিটি কর্পোরেশনে। যাহা এখনো বাঁশখালীবাসী গর্ব করিয়া বলিয়া থাকেন। এরপর ১৯৯১ সালে ১২ মে  বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের হইয়া মীর মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিন মেয়রের দায়িত্ব নিয়াছিলেন। ১৯৯৩ সালে ২০ ডিসেম্বর তিনি মেয়র পদ থেকে অব্যাহতি পাইলেন। ১১মার্চ ১৮৯৪ সালে আওয়ামী লীগের জমানায়  এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী মেয়রের দায়িত্ব নেন। একটানা ১৯৯০ সালের ৩০ জানুয়ারী পর্যন্ত এই চেয়ারে আসীন ছিলেন তিনি।

ভাইজানরে,

মহিউদ্দিন চৌধুরী যখন মেয়র ছিলেন তখন মোহাম্মদ মনজুর আলম ওয়ার্ড কমিশনার ছিলেন। দুইজনের মধ্যে মধুর সম্পর্কও ছিলো। চট্টগ্রামবাসী মহিউদ্দিন চৌধুরীকে গুরু ও মোহাম্মদ মনজুর আলমকে তাঁহার শিষ্য হিসাবে চিনিতেন। মেয়র নির্বাচনে এইদুই জনেই প্রার্থী হইয়া নগরবাসীকে  তাক লাগাইয়া দিলেন। বিপুল ভোটে গুরুকে হারাইয়া শিষ্য বসিলেন মেয়রের আসনে।   ২০১০ সালের ২০ জুলাই মেয়রের এই আসনে বসিয়া ২০১৫ সালের ৬ মে পর্যন্ত ছিলেন তিনি এই আসনে। ৭মে অর্থাৎ একদিন পর  আবু জাহেদ মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন এই আসনে বসিলেন ও থাকিলেন ৪ আগস্ট ২০২০ পর্যন্ত।এরপর মেয়রের স্থলে হইলেন প্রশাসক। প্রশাসক হইলেন খোরশেদ আলম সুজন। ৫ আগস্ট ২০২০ সালে দায়িত্ব পাইলেন ও ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালে এই আসন হইতে অব্যাহত পাইলেন তি্নি। এরপর ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালে রেজাউল করিম চৌধুরী মেয়র হইলেন রেকর্ডপত্র অনুযায়ী ১৯ আগস্ট ২০২৪ সাল পর্যন্ত মেয়র পদে ছিলেন।এখনো পলাতক রহিয়াছেন তিনি । চলিত সালের ৩ নভেম্বর আপনি মেয়র হিসাবে দায়িত্ব গ্রহন করিয়া আজ পর্যন্ত পালন করিয়া আসিতেছেন।

ভাইজানরে,

লোকেরা বলিতেছে আপনি চেয়েছিলেন মেয়র নির্বাচন বাতিল কিন্তু হইয়া গেলেন মেয়র। এই নিয়া আপনার বিরুদ্ধবাদীরা নানা কথা বলিতেছে। যাহারা আপনাকে পছন্দ করিবেন না তাহারা আপনি যতই ভালো করেন না কেন পাত্তাই দিবে না। এটাই দুনিয়াতে দেখিয়া আসিতেছি । বেশী ভালো করিলেও শেষতক ইহারা বলিবে বেশী ভালোও ভালো না। তাই সমালোচনাকে ভয় করিলে চলিবে না।

ভাইজানরে,

যতদিন মেয়রের দায়িত্বে আছেন ততদিন উল্লেখযোগ্য কাজ করুন। যাহা অতীতের মেয়রেরা পারেননি তাহা আপনি করিয়া চট্টগ্রামবাসীকে দেখাইয়া দিন। সত্যকার অর্থে চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানীতে পরিণত করুন। হাইকোর্ট বেঞ্চ চট্টগ্রামে আনুন, নৌবাহিনীর সদর দপ্তর চট্টগ্রামে আনিবার দাবী দীর্ঘদিনের, বাণিজ্যিক ব্যাংকের কোন হেড অফিস চট্টগ্রাম নেই কেন ? ফজলুল কাদের চৌধুরী ক্ষমতা পাইয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও মেরিন একাডেমী চট্টগ্রামে আনিয়াছেন। ফজলুল কাদের চৌধুরীকে এই কারণে চট্টগ্রামের মানুষ সম্মান ও শ্রদ্ধা করিয়া থাকেন ।

আজ আর নয়। আপনার মঙ্গল ও সুস্বাস্থ্য কামনায়

ইতি আপনারই গ্রাম বাংলার অখ্যাত ঠান্ডা মিয়া

গ্রন্থনা ম. আ. হ ।

আগামী সংখ্যায় ত্রান পুর্ণবাসন ও দূর্যোগ মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্ঠা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক ই আজম সমীপে ঠান্ডা মিয়ার গরম কথা (৩৪১) সম্প্রচার করা হইবে।

শেয়ার করুনঃ