১৮ এপ্রিল ২০২৪ / ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ৯:৩৩/ বৃহস্পতিবার
এপ্রিল ১৮, ২০২৪ ৯:৩৩ পূর্বাহ্ণ

শহরের প্রাণ কেন্দ্র ”লামার প্রথম পুকুরটি” এখন ডাসবিনে পরিণত: দখলদারদের কবলে স্মৃতি পাতা থেকে হারিয়ে যাচেছ

     

লামা প্রতিনিধি

লামা উপজেলা শহরের ঐতিহ্যবাহী বাজার পুকুরটির চারদিক ভরাট করে দখলে নিয়েছে কতিপয় অসাধু ব্যক্তিরা। স্থানীয়দের কাছে এক সময় যে পুকুরটি ছিল পূজনীয়; মলমুত্র ত্যাগ, বাসাবাড়ির ময়লা আবর্জনা ফেলে বর্তমানে ডাসবিনে পরিণত হয়েছে। পরিবেশের গুরুত্বপূর্ন সহায়ক হিসেবে এর ব্যবহার না হয়ে; এ পুকুরটি এখন ম্যালেরিয়া, চিকনগুনিয়া, ডেঙ্গু মশার আ¯তানায় পরিণত হয়ে। সমাজের বিত্তবানরা গ্রামবাসীর নিরাপদ মিঠা পানির উৎস হিসেবে পুকুর বা দীঘি খনন করতেন।
বর্তমানেও গ্রামীণ সমাজ ব্যবস্থায়, পুকুরকেন্দ্রিকতা বিদ্যমান। পুকুর মানুষের নিত্যদিনের উপজীব্য হিসেবে এখনো বিবেচিত হয়ে আসলেও সংশ্লিষ্টদের উদাসিনতায় লামা বাজারের প্রথম খনন করা পুকুরটি কালের নিষ্ঠুর গহ্বরে হারিয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, ঊনিশ শতকের শুরু থেকে লামা বাজারের হরিমন্দিরের দক্ষিণ পাশের পুকুরটি পাকা অবকাঠামো সিঁড়ি নির্মাণ করে ব্যবহার করে আসছিল ব্যবসায়ীরা। মাতামুহুরী নদীর পরে বাজারবাসীদের কাছে এই পুকুরটি ছিল পুঁজনীয়। ৮০’র দশক থেকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে বাজার সম্প্রসারণ হয়ে বাজার আবাসন বৃদ্ধি পায়। সে থেকে ক্রমেই একটি আগ্রাসী মহলের দৃষ্টি পড়ে পুকুরটির উপর। চারপাশ থেকে দখলদারদের কবলে পড়ে এর আকার অনেক ছোট হয়ে গেছে। তা ছাড়া পাড়ে বসতি স্থাপনকারীরা বাসাবাড়ির ময়লা আবর্জনা নিক্ষেপ ও পুকুরের সাথে টয়লেটের সংযোগ করে দেয়। এর ফলে লামা বাজারের প্রাচীনতম পুকুরটি বর্তমানে ডাস্টবিনে পরিনত হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রায় দুশো বছর আগে লামা বাজার স্থাপন হওয়ার পরই পুকুরটি খনন করা হয়েছিল। সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই পুকুরটি ছিল পূজনীয়। তারা দু;খ করে জানান, বহুকাল থেকে সার্বজনীন; কালের স্মৃতিস্বাক্ষর বহনকারী এই পানির ভান্ডারটি এখন মালিকানা দ্বন্ধের শিকার হয়ে হারিয়ে যেতে বসেছে।
কতিপয় অসাধু ব্যক্তিদের দখলে থাকা পুকুরটি এখন মশামাছির এক বিশাল আ¯তানায় পরিনত হয়েছে। সঠিক ব্যবহার না করায় পুকুরটি পরিবেশের সহায়ক নেই আগের মতো। এ থেকে জম্মানো মশামাছি-বিভিন্ন রোগ জীবানু ছড়াচ্ছে গোটা শহর ব্যপি। ব্যবসায়ীরা বলেন, বর্ষা মৌসুমে মাতামুহুরী নদী গোসল ও ধোয়াপালার জন্য বাজারবাসীদের অনুকুল থাকেনা। ব্যবসায়ীদের বড় একটি অংশ নদীর পানিতে গোসল ও ধোয়াপালা করছে। তাও গত কয়েক বছর ধরে বাজার ঘাটের পাকা অবকাঠামোটি ভেঙ্গে যাওয়ায় দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে সবাইকে। আবার অনেক আগ থেকে ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ কেন্দ্রীয় মসজিদ ও চেয়ারম্যানপাড়া মসজিদের পুকুরও ব্যবহার করছেন।
জানাযায়, পুকুরটির মালিকানা নিয়ে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর সাথে বাজারফান্ড প্রশাসনের বিরোধ রয়েছে। বাজার ব্যবসায়ীরা জানান, লামা বাজারে সমাজ-সেবার প্রথম নিদের্শন প্রাচীনতম পুকুরটি পূন:খনন, সংস্কার করা দরকার। সাম্প্রতিক সময়ে পৌরসভা ও জেলা পরিষদ-এর যৌথোদ্যোগে পুকুরটি আগ্রাসীদের কবল থেকে রক্ষার প্রয়াসটিও ক্ষিণ হয়ে পড়েছে বলে বাজারবাসীরা জানান।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply