২০ এপ্রিল ২০২৪ / ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৪:৩০/ শনিবার
এপ্রিল ২০, ২০২৪ ৪:৩০ অপরাহ্ণ

মসজিদ ও তারাবিহ নামাজ

     

মাহমুদুল হক আনসারী
মসজিদ আল্লাহর ঘর। আল্লাহর ঘরকে ঘিরেই নামাজ আনুষ্ঠিত হয়। সমস্ত মসজিদে ইমাম সাহেব ইমামতির মাধ্যমে নামাজ আদায় করে থাকেন। পাঁচ ওয়াক্তিয়া নামাজ থেকে আরম্ভ করে জুমার নামাজ, তারাবিহ নামাজ ও সকল মসজিদেই অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশে প্রায় চার লাখ মসজিদের মধ্যে এ নামাজ ইমামের সাথে জামাতে অনুষ্ঠিত হয়। লাখ লাখ মুসল্লীগণ জামাতে নামাজে অংশ গ্রহণ করে থাকে। মসজিদকে কখনো দলীয় বা সমাজপতিদের আধিপত্যর স্থান বানানো যাবে না। মহান আল্লাহর ঘরের সর্ব অংশ পবিত্র ও মর্যাদা পূর্ণ। মসজিদের ভিতর ও বারান্দা একই ভাবে সম্মানের পাত্র। মসজিদকে রাজনীতি মুক্তি রেখে যে কোন দলীয় চিন্তার উপরে মসজিদকে সম্মানের সাথে স্থান নিতে হবে। কমিটি রাজনৈতিক হলেও ইমাম খতীব রাজনৈতিক মতাদর্শের বাইরে রাখতে হবে। ইমাম-খতীব কখনো কোনো রাজনৈতিক দলের হলে সেখানে নামাজ ও আল্লাহর ঘর মসজিদ পবিত্র থাকে না। ইমাম-খতীব হবেন কোরআন হাদীসের পূর্ণ অনুসারী ও মুক্তাকাী আমলদার ব্যক্তি। তাঁকে দৈনন্দিন জীবনে ইসলামের ফরজ ওয়াজিবের আনুসারী হতে হবে। সুন্নাতে রাসূলের অনুসরণ অনুকরণ তাঁর মধ্যে থাকতে হবে। পবিত্র কোরআন সুন্নাহ বিরোধী কোনো কর্মকান্ড তাঁর দৈনন্দিন জীবনে পাওয়া গেলে তার পিছনে নামাজ আদায় করা শরীয়ত সম্মতভাবে জায়জ নাই। কোন ইমাম কোরআন ও হাদীসের অপব্যাখ্যা করলে তার পিছনে নামাজ পড়া হারাম। পবিত্র কোরআন হাদীসের বিশুদ্ধ জ্ঞান। তেলাওয়াতে বিশুদ্ধ, বিবাহিত, সুন্দর কন্ঠের অধিকারী ও জ্ঞানী আলেমদের ইমাম, খতীব হিসেবে নিয়োগ দানের কথা শরীয়তে বলা হয়েছে। কোন কোন মসজিদে দেখা যায় কোরআন তেলাওয়াত মসলা-মসায়েল সম্পর্কে পারদর্শী না হলেও দলীয় বিবেচনায় রাজনৈতিক চিন্তায় ইমাম খতীব নিয়োগ দেয়া হয়। একইভাবে দেখা যায় পবিত্র তারাবিহ নামাজের জন্য হাফেজে কোরআন নিয়োগ দানের ক্ষেত্রেও এ ধরণের নানা অভিযোগ নজরে আসছে। কমিটির প্রভাবশালী লোকদের তদবির এবং রাজনৈতিক দলীয় বিবেচনায় পবিত্র কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করে নামাজ আদায় করার জন্য হাফেজ নিয়োগ দান করা হয়েছে। এমন ধরণের অভিযোগ ও আমরা পেয়েছি। মসজিদ, ইমামতি, তারাবিহ নামাজ নিয়ে রাজনীতি করতে দেখলেও এতদিন আমরা সে স্পর্শকাতর বিষয়ে না বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নানাভাবে এ ধরণের অপতৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়াতে লিখতে হচ্ছে। নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য ইমামের ইমামতি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হতে হবে। তার দৈনন্দিন জীবনে ইসলামের আদর্শের অনুসরণ অনুকরণ থাকতে হবে। কোনো শরীয়ত বিরোধী ইমাম আলেম খতীবের পিছনে নামাজ পড়লে মুসল্লীদের নামাজ পূর্ণ আদায় হবে না। বিশুদ্ধভাবে নামাজ আদায় হতে হলে ইমামের আদাব-আখলাক, ইসলামী চরিত্র বিশুদ্ধ হতে হবে। মসজিদ সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর ঘর হিসেবে পবিত্র রাখতে হবে। এখানে মসজিদ, নামাজ, ইসলাম সম্পর্ক ছাড়া অন্যে কোনো ধরণের বিষয়কে নিয়ে এসে মসজিদের পরিবেশ নষ্ট করা যাবে না। নামাজ, তারাবিহ বিশুদ্ধ করার জন্য বিশুদ্ধ পরিচ্ছন্ন মেধাবী কোরআন তেলাওয়াতকারী হাফেজ নিয়োগ দিতে হবে। রাখতে হবে তাকওয়াবান ইমাম ও খতীব। তা হলে নামাজ বিশুদ্ধ হবে। আত্মীয়তার পরিচয়ে হাফেজ, ইমাম নিয়োগ দিলেও বাস্তব জায়গায় তার যোগ্যতা দেখার দায়িত্ব মসজিদ পরিচালনা কমিটির। সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হাফেজ, ইমাম, খতীব নিয়োগ দিয়ে মসজিদ কে রাজনীতি মুক্ত রাখুন এবং মুসল্লীদের নামাজ আদায় ও কবুলে একে অপরকে সহাযোগীতা করি।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply