২০ এপ্রিল ২০২৪ / ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৫:৪৩/ শনিবার
এপ্রিল ২০, ২০২৪ ৫:৪৩ অপরাহ্ণ

দাউদকান্দিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারাই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার দাবি

     

নিজস্ব প্রতিবেদক
দাউদকান্দিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারাই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার দাবি উঠেছে সর্বমহলের পক্ষ হতে। জনকল্যাণকর ও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই ভ্রাম্যমাণ আদালত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারাই পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা। বিদগ্ধজনরা মনে করেন, গত ১১ মে হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃপক্ষ অতি জনপ্রিয় ভ্রাম্যমাণ আদালত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা পরিচালনা অবৈধ ঘোষিত হওয়ার পরপরই সমগ্র দাউদকান্দিব্যাপি আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। আর এই ধারা অব্যাহত থাকলে অপরাধ প্রবণতা যে কোন সময়ের চেয়ে বহুগুনে বেড়ে যাবে বলেও জানান স্থানীয়  সুধি সমাজ।
২০০৯ সালের ৪ অক্টোবর প্রণীত মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯-এর কয়েকটি ধারাকে অবৈধ ঘোষণা করে উচ্চ আদালত। যার ফলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা পরিচালিত মোবাইল কোর্ট একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ও জনবান্ধব আদালত এবং সর্বমহলে তা গ্রহণযোগ্য হওয়ার পরও উচ্চ আদালত কর্তৃক আরোপিত এই রায়ের বিষয়ে জনমনে নানা রকম প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এখন।
দ্রুত সময়ে বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে মোবাইল কোর্ট একটি নির্ভরযোগ্য আদালত। এই ভ্রাম্যমাণ আদালত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক পরিচালিত না হলে অন্যান্য স্থানের মত দাউদকান্দিতেও জনসাধারণ সীমাহীন দুর্ভোগের সম্মুখীন হবে বলে মনে করছেন বিদগ্ধজনরা। তা ছাড়া সরকারের সকল উন্নয়ন কর্মকা- ও কর্মসূচীর সফল বাস্তবায়নে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সহ জেলা প্রশাসনের কর্মরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণের সহিত সাধারণ জনগণের অবাধ সম্পৃক্ততা রয়েছে। “জনসেবার জন্য প্রশাসন” এই মন্ত্রে দীক্ষিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণের কাছে সাধারণ মানুষ যে কোন সময় যে কোন সমস্যা নিয়ে হাজির হয়ে সমাধান পেয়ে থাকেন। পক্ষান্তরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট জনসাধারণের অবাধ প্রবেশ প্রায় অসম্ভবই বলা যায়। এক্ষেত্রে তাদের দ্বারা নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করাও সম্ভবপর নয়। বর্তমান প্রেক্ষাপ্রটে মোবাইল কোর্ট আইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয়। ২০০৯ সাল থেকে অদ্যাবধি দাউদকান্দি উপজেলাতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ অত্যন্ত সফলভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আসছেন। ভ্রাম্যামাণ আদালতের মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীর দৌরাত্ম হ্রাস, মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়া নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, খাদ্যে ভেজাল নিয়ন্ত্রণ ও রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রণ রোধ, ভেজাল ওষুধ বিক্রয় ও সংরক্ষণ প্রতিরোধ, এসিড নিয়ন্ত্রণ, ভেজাল পন্য উৎপাদন বন্ধ, অবৈধ বালু উত্তোলন হ্রাস, ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ-যৌতুক রোধ, বিভিন্ন মেলায় জুয়া ও অশ্লীল নৃত্য বন্ধসহ উপজেলার সামগ্রিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ অক্লান্ত পরিশ্রম করে আসছেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা চলমান না থাকলে উপরোক্ত অপরাধসমূহের লাগাম টেনে ধরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সকলের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়বে-এটাই স্বাভাবিক। জনবান্ধব মোবাইল কোর্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল। মোবাইল কোর্ট এখন জনতার আদালত। সংঘটিত বা উদঘাটিত অপরাধ ঘটনাস্থলে আমলে নিয়ে উপস্থিত জনগনের স্বাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে থাকেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। জনতার সমর্থন বা সহযোগীতা ছাড়া মোবাইল কোর্ট কখনো সফল হয়নি, হবেও না। তাই জনগনের অত্যন্ত নির্ভরতার স্থান ভ্রাম্যামাণ আদালত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক পরিচালনা তথা চলমান রাখার দাবি উঠেছে সর্বমহলে।
হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অবৈধ ঘোষিত হওয়ার ফলে ব্যবসায়ীরা তাদের মজুতদারী বৃদ্ধি শুরু করেছে। শুধু তাই নয়, এখন বাজার ব্যবস্থা মনিটরিংও ভেঙ্গে পড়েছে। ফলে আসছে রমজান মাসে বাজার ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল ও নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপন্যের দাম বৃদ্ধিসহ নানা রকম সমস্যা সৃষ্টি হবে; রমজানে ইফতার সামগ্রিতে ক্ষতিকর দ্রব্যাদি ও চলমান ফলের মৌসুমে বিভিন্ন ফলে রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে ফল পাকানো ও পঁচনরোধ করার ভয়াবহ প্রক্রিয়া ভোক্তা সাধারণের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। এবং আইন-শৃংখলারও অবনতি হবে যে কোন সময়ের তুলনায় বেশি। সুতরাং এই প্রেক্ষাপটে ভ্রাম্যামাণ আদালত পরিচালনা কোনভাবেই বন্ধ করা যাবে না বলে দাবি জানান দাউদকান্দিবাসী।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply