২৮ মার্চ ২০২৪ / ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৪:১১/ বৃহস্পতিবার
মার্চ ২৮, ২০২৪ ৪:১১ অপরাহ্ণ

কূটনীতিকেরা এখনো সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি বোধ করেন

     

ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত মাইকেল হেমনিটি উইনথার বলেছেন, হলি আর্টিজান বেকারির হামলার ১০ মাস পরও সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি বোধ করায় কূটনীতিকদের চলাফেরায় বিধিনিষেধ আছে। কারণ, বিদেশিরা এসব হামলার শিকারে পরিণত হতে পারেন। আজ মঙ্গলবার রাজধানীতে ডিকাব টক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় দুই দেশের সম্পর্কের বিষয়ে কথা বলেন ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত মাইকেল হেমনিটি উইনথার। এ ছাড়া রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, রোহিঙ্গা সমস্যার মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন আলোচিত বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।
ডিকাব সভাপতি রেজাউল করিম লোটাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পান্থ রহমান।

বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মাইকেল হেমনিটি উইনথার বলেন, ‘আমাদের চলাফেরায় এখনো বিধিনিষেধ আছে। ঝুঁকির পরিস্থিতি মূল্যায়ন করলে, আমরা এখনো ঝুঁকি বোধ করি। আমরা এখনো মনে করি, বিদেশিরা ওই সব সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকির শিকার হতে পারেন।’
গত ১ জুলাইয়ের ওই সন্ত্রাসী হামলার পর বিদেশিদের নিরাপত্তায় সরকারের নেওয়া পদক্ষেপে কূটনীতিকদের বিশেষ সন্তুষ্টির কথাও উল্লেখ করেন মাইকেল হেমনিটি উইনথার।

এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি আছে—এমন কয়েকটি দেশের নাম জানতে চাইলে মাইকেল হেমনিটি উইনথার বলেন, ‘আমার নিজের দেশেও (ডেনমার্ক) জঙ্গি আক্রমণের ঝুঁকি আছে। পৃথিবীতে ১৪০টি দেশে জঙ্গি হামলার ঝুঁকি রয়েছে। প্রত্যেকটি দেশে ঝুঁকির মাত্রা আলাদা। আমরা অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে এসব বিষয়ে আলোচনা করে থাকি।’

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এটি একটি জটিল বিষয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ডেনমার্কের কোনো সমাধান দেবে না। দুই দেশকেই এর সমাধান করতে হবে। তবে সমস্যার একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য প্রতিটি দেশকে আমরা আন্তর্জাতিক নীতি মেনে চলতে বলি।’

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং মোট দেশজ উৎপাদনের সঙ্গে তুলনা করলে এখানে বিদেশি বিনিয়োগ যথেষ্ট কম। এমনকি এখানে ডেনমার্কের বিনিয়োগও কম। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিকতা, অবকাঠামোগত দুর্বলতা, দুর্নীতি, সুশাসনের ঘাটতিকে বাধা হিসেবে মনে করেন তিনি।

মাইকেল হেমনিটি উইনথার বলেন, ‘কাজেই এটা সব সময় সহজ নয়। সমস্যাগুলো দূর করতে আমরা সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি।’

ডেনমার্ককে বাংলাদেশের অন্যতম অংশীদার উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচনই আমাদের প্রধান ইস্যু। সাম্প্রতিক সময়ে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের অংশীদার হতে চায় ডেনমার্ক।’

তৈরি পোশাকের পাশাপাশি জাহাজ নির্মাণ থেকে শুরু করে নানা ক্ষেত্রে ডেনমার্ক বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে সংকটের মুখে রয়েছে বাংলাদেশ, তা থেকে এখানকার মানুষকে রক্ষার কাজও করে চলেছে দেশটি।

সুন্দরবনের কাছে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মাইকেল হেমনিটি উইনথার রামপালের নাম উল্লেখ না করে দূষণ কমাতে জলবায়ুর ওপর এ ধরনের প্রকল্পের বিরূপ প্রভাব নিরূপণের জন্য বিশেষজ্ঞ এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানের মতামত নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply