২০ এপ্রিল ২০২৪ / ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ১০:০১/ শনিবার
এপ্রিল ২০, ২০২৪ ১০:০১ পূর্বাহ্ণ

মৌলভীবাজারে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ’র সভা রমজান মাসকে সামনে রেখে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে উদ্বেগ ও প্রতিবাদ

     

জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ এর জেলা কমিটির নিয়মিত সভায় সাম্প্রতিক নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ ও প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তারা বলেন মোটা চালের মূল্য কেজি প্রতি ৪৫-৪৮ টাকা করার পর আসন্ন রমজান মাসকে সামনে রেখে আড়তদার-মজুতদাররা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পরিকল্পতিভাবে ছোয়া, ডাল, তেল, লবন, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের মূল্যবৃদ্ধি করে জনগণের পকেট কাটছে। সকাররের মন্ত্রীরা নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে লোকদেখানো “কঠোর হুশিয়ারি” উচ্চারণ করলেও কার্যক্ষেত্রে আড়তদার-মজুতদাররা সরকারের যোগসাজসে মূল্যবৃদ্ধি ঘটিয়ে লুটপাট করছে। তা না হলে সরকার নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুত থাকার কথা বলার পরও কি করে বাজারে দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে? ১৩ মে সন্ধ্যায় শহরের চৌমুহনাস্থ কার্যালয়ে জেলা এনডিএফ’র সভাপতি কবি শহীদ সাগ্নিকের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সভা থেকে বক্তারা এই অবিযোগ করেন। সভায় বক্তব্য রাখেন এনডিএফ’র জেলা সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস, বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি মৌলভীবাজার জেলা কমিটির আহবায়ক ডা. অবনী শর্ম্মা, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ জেলা কমিটির সহ-সভাপতি মোঃ মোস্তফা কামাল, ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ মৌলভীবাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক অমলেশ শর্ম্মা, মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ ২৩০৫ এর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন মিয়া, মৌলভীবাজার জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি নং চট্টঃ ২৪৫৩-এর সভাপতি সোহেল আহমেদ, জেলা এনডিএফ;র সাংস্কৃতিক সম্পাদক মৃগেন চক্রবর্তী, সদস্য কিসমত মিয়া, তারেশ বিশ্বাস সুমন, মোঃ জসিমউদ্দিন প্রমূখ। সভার শুরুতে বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ ও এনডিএফ’র কেন্দ্রীয় সদস্য জয়দীপ দাস চম্পুর পিতা দীপক কুমার দাসের মৃত্যুতে দাড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয় এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়। সভায় বক্তারা আরও বলেন সাম্রাজবাদী সংস্থার নীতি নির্দেশে আমাদের দেশের ক্ষমতাশীন ও ক্ষমতা প্রত্যাশী প্রতিক্রিয়াশীল দালাল দলগুলো জাতীয় ও জনস্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে এসডিজি’র আলোকে ভিশন-মিশন-রূপকল্প ঘোষণা দিয়ে সাম্রাজবাদের স্বার্থরক্ষা করে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে বা ক্ষমতাশীন হতে নানামূখী অপতৎপরতায় লিপ্ত। জাতীয় ও জনস্বার্থ কখনও তাদের কাছে গরুত্ব পায়নি। বিশ্ববাজারে জ্বালানীতেলের মূল্য রেকর্ড পরিমান কমে গেলেও দেশের বাজারে জ্বালানীতেলের মূল্য কমানো হচ্ছে না। উপরন্তু বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদের দালাল এসব দলের একমাত্র লক্ষ্য প্রভূ সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থ রক্ষা করার মাধ্যমে যেনতেন উপায়ে ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করা বা ক্ষমতাশীন হওয়া। বাংলাদেশের মত নয়া উপনেবিশক দেশের নিয়ন্ত্রক হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদ। তাই সাম্রাজ্যবাদের এক দালালের পরিবর্তের আরেক দালাল বা জোট নয়, এক সাম্রাজ্যবাদের পরিবর্তে আরেক সাম্রাজ্যবাদ নয়, সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও আমলা দালাল পুঁজি বিরোধী শ্রমিক কৃষক জনগণের রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে। এ জন্য শ্রমিক শ্রেণীর নেতৃত্বে শ্রমিক-কৃষকের মৈত্রীর ভিত্তিতে সকল সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী শক্তি এবং শ্রমিক-কৃষক-জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিপ্লবী বিকল্প ধারার লড়াই সংগ্রামকে অগ্রসর করতে হবে।
সভা থেকে সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালাল ভারতের সাথে জাতীয় স্বার্থ বিরোধী সকল চুক্তি বাতিল, গ্যাস-বিদ্যুৎসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ, শ্রমিক-কর্মচারিদের জন্য বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে মজুরি নির্ধারণ ও গণতান্ত্রিক শ্রমআইন প্রণয়ন, সাম্প্রতিক অকাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক-জেলেদের উপযুক্ত ক্ষতিপুরণ, বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য অপরিকল্পিত ব্রিজ-কালর্ভাট-স্লুইচ গেট নির্মাণ বন্ধ এবং জাতীয় স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে দেশের সকল নদ-নদী, খাল-বিল খনন, ভূমিহীন দরিদ্র কৃষকের হাতে জমি ও কাজ, কৃষি উৎপাদনের খরচ কমানো এবং ফসলের ন্যায্যমূল্য, সার, ডিজেল, কীটনাশকের দাম কমানোর দাবিতে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply