২৮ মার্চ ২০২৪ / ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / সন্ধ্যা ৬:৫৬/ বৃহস্পতিবার
মার্চ ২৮, ২০২৪ ৬:৫৬ অপরাহ্ণ

ভালোবাসার উত্তম নিদর্শন মা

     

ডা. বরুণ কুমার আচার্য বলাই

পৃথিবীর মায়ের ভালোবাসার উপরে এমন কিছু আছে তা আজও অবিশ্বাস্য। মায়ের ভালোবাসায় উত্তম নিদর্শন। মা-ই স্বর্গ। মা-ই শ্রেষ্ঠত্বের বড় উদাহরণ। বিশ্ব মা দিবসে সমগ্র পৃথিবীর সকল মাকে শ্রদ্ধা ভালোবাসা ও পৃথিবীর সকল প্রয়াত মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও সদগতি কামনা করছি। বিশ্ব মা দিবসে পৃথিবীর সকল মায়ের পদপ্রান্তে আমার প্রণাম। বিশ্ব মা দিবসে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মা দিবসের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন পূর্বক দিনব্যাপী অনুষ্ঠান পালিত হবে। চট্টগ্রামে বর্ণাঢ্য আকারে মা দিবসের কর্মসূচি পালিত হচ্ছে সৃজনশীল পত্রিকা দেশচিন্তার আয়োজনে চেরাগী পাহাড়স্থ সুপ্রভাত স্টুডিও হলে। সেমিনার ও আলোকিত মা দিবসের বিশেষ সম্মাননা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। এ রকম অজস্র অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মা দিবসের কর্মসূচি উদযাপন হবে। মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার, এ বছর ১৪ মে, বিশ্ব মা দিবস। বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত কবি কাজী কাদের নেওয়াজ মার প্রতি সম্মান শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার স্মৃতি হিসেবে লিখেছেন:
“মা কথাটি ছোট্ট অতি,/ কিন্তু জেনো ভাই,
ইহার চেয়ে নামটি মধুর/ তিন ভুবনে নাই।
সত্য ন্যায়ের ধর্ম থাকুক/ মাথার ’পরে আজি
অন্তরে মা থাকুক মম/ ঝরুক øেহরাজি।
রোগ-বিছানায় শুয়ে শুয়ে/ যন্ত্রণাতে মরি
সান্ত্বনা পাই মায়ের মধু/ নামটি হৃদে স্মরি।
বিদেশ গেলে ঐ মধু নাম/ জপ করি অন্তরে,
মন যে কেমন করে আমার/ প্রাণ যে কেমন করে।
মা যে আমার ঘুম পাড়াত/ দোলনা ঠেলে ঠেলে,
শীতল হতো প্রাণটা মায়ের/ হাতটা বুকে পেলে।
মাগো, আমি বিদেশ থেকে/ দিচ্ছি তোমায় চিঠি,
কেমন আছ জানতে চাহি,/ দেখতে চাহি দিঠি।
তোমায় স্মরি চোখ ফেটে মোর/ অশ্র“ যে আজ ঝরে,
প্রাণ যে কেমন করে আমার/ মন যে কেমন করে।”
পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর শব্দ ‘মা’। মাত্র একটি অক্ষরের শব্দ ‘মা’, অথচ তাতেই যেন সমস্ত ভালোবাসা, আবেগের সম্মিলন। সম্পর্কের বেড়াজাল ছিন্ন করে সবাই দূর পরবাসে মিলতে পারে। চলে যেতে পারে প্রেমাবেগের বন্ধনের প্রিয়সীও। কিন্তু মা’র স্নেহ-ভালোবাসার বন্ধন কখনই ছিন্ন হবার নয়। আজ বিশ্ব মা দিবস। প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার এ দিবসটি পালন করা হয়।
দিনটি উপলক্ষে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। যদিও একটি বিশেষ দিনে মধ্যে মায়ের প্রতি সন্তানের ভালোবাসা সীমাবন্ধ নয়। এই ভালোবাসা প্রতিটি দিনের। প্রতিটি ক্ষণের। তারপরও মায়ের প্রতি ভালোবাসার দৃষ্টান্ত হিসেবে এই দিনটি পালন করা হয়। বিশ্ব মা দিবসের ইতিহাস শতবর্ষের পুরানো। যুক্তরাষ্ট্রে আনা জারভিস নামের এক নারী মায়েদের অনুপ্রাণিত করার মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্য সচেতন করে তুলতে উদ্যোগী হয়েছিলেন।
১৯০৫ সালে আনা জারভিস মারা গেলে তার মেয়ে আনা মারিয়া রিভস জারভিস মায়ের কাজকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য সচেষ্ট হন। ওই বছর তিনি তার সান ডে স্কুলে প্রথম এ দিনটি মাতৃ-দিবস হিসেবে পালন করেন।
১৯০৭ সালের এক রবিবার আনা মারিয়া স্কুলের বক্তব্যে মায়ের জন্য একটি দিবসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন।
১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেস মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারকে ‘মা’ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এভাবেই শুরু হয় মা দিবসের যাত্রা। এরই ধারাবাহিকতায় আমেরিকার পাশাপাশি মা দিবস এখন বাংলাদেশসহ অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, রাশিয়া ও জার্মানসহ শতাধিক দেশে মর্যাদার সঙ্গে দিবসটি পালিত হচ্ছে।

লেখক: লায়ন ডা. বরুণ কুমার আচার্য বলাই
বিশিষ্ট লেখক, গবেষক, প্রাবন্ধিক ও সমাজকর্মী

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply