২৯ মার্চ ২০২৪ / ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / ভোর ৫:১৫/ শুক্রবার
মার্চ ২৯, ২০২৪ ৫:১৫ পূর্বাহ্ণ

ঠাকুরগাঁও ছাত্রদলের ১২০ নেতাকর্মীর পদত্যাগ

     

 

হিমেল তালুকদার, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

বহু কাঙ্ক্ষিত ও প্রত্যাশিত ঠাকুরগাঁও জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণায় ‘উজ্জীবিত’ হওয়ার বদলে গভীর ‘হতাশা’য় নিমজ্জিত হয়েছেন নেতাকর্মীরা। পদ না পাওয়ার বঞ্চনা, রাগ ও ক্ষোভ থেকে ছাত্রদলের সক্রিয় কিছু মুখ সহ বড় একটি অংশ দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সুসংগঠিত ছাএদলে অবশেষে ভাঙন শুরু হয়েছে । নবগঠিত জেলা কমিটির ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রবিন, পৌর ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুরখাব, সহ-সভাপতি রনিসহ বিভিন্ন শাখার ১১৭ জন নেতাকর্মী ছাত্রদল থেকে পদত্যাগ করেছে বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।

বুধবার রাতে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির কাছে লিখিতভাবে ওইসব নেতাকর্মী ছাত্রদলের সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি চেয়ে পত্র জমা দেন।

জানা যায়, দীর্ঘ ১৫ বছর পর গত শনিবার (২৯ এপ্রিল) ঠাকুরগাঁও জেলা ছাত্রদলের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সম্মেলনের ১ম অধিবেশন শেষে বিএনপি মহাসচিবের উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান জেলার নতুন ছাত্রদল সভাপতি কায়েস সাধারণ সম্পাদক অহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন ইসলামের নাম ঘোষণা করেন। এতে করে ছাত্রদলের কিছু ত্যাগী নেতার নাম বাদ পড়ায় ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন অনেকেই। সম্মেলনে দলের জন্য নিবেদিত ও যোগ্যতাসম্পন্ন ছাত্রদের বাদ দিয়ে অযোগ্য, সুবিধাভোগীদের নিয়ে কমিটি গঠন করায় ঠাকুরগাঁও ‘টক অব দ্য টাউনে’ পরিণত হয়।

বুধবার (৩ মে) রাতে ঠাকুরগাঁও পৌর এলাকার গোলায়পাড়া বিএনপি ও ছাত্রদলের প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মী ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির কাছে লিখিতভাবে সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি চেয়ে পত্র জমা দেন।

পদত্যাগকারী জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিন জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত জেলা ছাত্রদলের নেতৃত্ব দিয়ে যারা রাজপথ কাঁপিয়েছেন তাদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটিতে অছাত্র, ড্রাইভারকে সাধারণ সম্পাদক পদ দেয়া হয়েছে। ওই নেতৃত্বে জেলা ছাত্রদল কখনো সুসংগঠিত হতে পারে না। তাই আমিসহ অনেক নেতাকর্মী ছাত্রদল থেকে অব্যাহতিপত্র জমা দিয়েছি।

পৌর ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুরখাব জানান, ঠাকুরগাঁওবাসীর দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষা ছিল- জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে দলের দুঃসময়ের কাণ্ডারিদের ভালো জায়গায় রাখা হবে। কিন্তু কতিপয় অযোগ্য ব্যক্তিকে মূল দায়িত্ব অর্পণ করায় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই স্বেচ্ছায় ছাত্রদল থেকে পদত্যাগ করছি।

পৌর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল রানা বলেন, ‘ঘোষিত কমিটিতে একজন ট্রাকশ্রমিককে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। একজন ছাত্রনেতা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করবেন। কিন্তু যে কখনো কলেজে পা দেয়নি, এমন একজন শ্রমিকের কাছ থেকে এসব কী করে আশা করবেন?’

ঠাকুরগাঁও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাশেদ আলম লাবু বলেন , এটি একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা। কিছু ভুল বোঝাবোঝির কারনে এমনটা হয়েছে। আমরা ওদের সাথে কথা বলেছি। ওরা অবশ্যই আবার দলে ফিরে দলকে শক্তিশালী ও সুসংগঠিত করতে ভুমিকা রাখবে।

ছাত্রদলের নতুন সভাপতি কায়েসের কাছে নেতাকর্মীদের পদত্যাগের সত্যতা জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি বিষয়টি এখনো অবগত নই।

ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পয়গাম আলী জানান, বিএনপির দুঃসময়ে অনেক ছাত্রদল কর্মী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। অনেকে পদ থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিমানেই অব্যাহতিপত্র জমা দিতে এসেছে। আমরা নেতাকর্মীরা তাদের অভিমান ভাঙিয়ে ছাত্রদলকে আরও শক্তিশালী করে গড়ে তুলবো।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply