২৮ মার্চ ২০২৪ / ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / রাত ৯:০৪/ বৃহস্পতিবার
মার্চ ২৮, ২০২৪ ৯:০৪ অপরাহ্ণ

ঠাণ্ডা মিয়ার গরম কথা (২০৯) ড. কামাল হোসেন

     

মাননীয়,

ঐক্যফ্রণ্টের শীর্ষ নেতা সাবেক আইন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন সমীপে

কামাল ভাইজানরে,

গরম গরম কথার শুরুতে আমার লাখ কোটি সালাম জানিবেন। আশা করি আল্লাহ মালিকের অপার মহিমায় ভালো থাকিয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর ভিশন ও মিশন কায়েমের লক্ষ্যে নানান ফর্মূলা তৈরী ও বাস্তবায়ন করিয়া মহা- সুখেই আছেন। আমিও গ্রাম বাংলার এক মফস্বল শহরে থাকিয়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ও দেশের ভবিষ্যতের কথা ভাবিয়া ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্ছার মতো খাইয়া না খাইয়া বাঁচিয়া আছি। গেল বারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে. এম নুরুল হুদা সমীপে লিখিবার পর এইবার আপনার সমীপে লিখিব বলিয়াছিলাম বলিয়াই লিখিতেছি বলিয়া রাগ করিবেন না বরং শত ব্যস্ততার পরও গরম কথাটুকু পড়িয়া দেখিবেন ও যাহা প্রয়োজন তাহা করিবেন এবং ভুল হইলে নিজ গুনে মাফও করিয়া দিবেন।

ভাইজানরে,

আপনি হলেন, একজন দুনিয়াখ্যাত ভিজ্ঞ আইনজীবি।বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্হ সহচর ও বঙ্গবন্ধুর সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী।হালে চলিত মাসে দেশ ও দেশের বাহিরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচিত ও সমালোচিতদের আপনি প্রথম কাতারের একজন।আজীবন নৌকার জন্য কাণ্ডারী ছিলেন । হক – ভাষানী -বঙ্গবন্ধুর নৌকার জন্য জীবনভর লড়াই সংগ্রাম করা এক মহান ব্যাক্তি আপনি। নিজেও আওয়ামী লীগের মনোনিত নৌকা প্রতীক লইয়া রাষ্ট্রপতি প্রার্থী ছিলেন।যদিও ওইসময় বিএনপি মনোনিত ধানের শীষ প্রার্থী মরহুম আবদুস সাত্তার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।তখনো আপনি আওয়ামী লীগের হইয়া কাজ করিয়াছিলেন। এখন অবশ্য সাত্তার সাহেব বাঁচিয়া নাই, নাই দুই দলেরই নীতি আদর্শও। ব্যাপক ফারাকও তৈরী হইয়াছে দুই বৃহৎ দলে । সজীব ওয়াজেদ জয় ও তারেক রহমান তৃণমূলে কাজ না করিয়াও শুধুমাত্র হাসিনা ও খালেদার ইচ্ছাই দুইজনই দুই দলের বড় মূল হোতা।তবে এই ক্ষেত্রে তারেক রহমানের চেয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা রহিয়াছে বেশী।তবু কেমন জানি মনে হয় এইসব কিসের আলামত? যাক, সেইসব কথা।

ভাইজানরে,

আপনি বলিয়াছিলেন, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বা রাষ্ট্রীয় কোন পদ-পদবি পাওয়ার ইচ্ছা আপনার নাই।কিন্তু আপনার বিপক্ষের লোকজন বলিতেছে নির্বাচন করিলে আপনি একজন ইউপি সদস্যের মতো ভোটও পাইবেন না।অবশ্য জোটের পক্ষের বক্তব্য তাহারই বিপরীত। একটি গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও বহুমাত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য আপনি কাজ করিতেছেন । সজীব ওয়াজেদ জয় বলিলেন ‘ঐক্য ফ্রন্টের নেতা কামাল হোসেন নিজে নির্বাচনই করেননি। কারণ উনি জানতেন উনি কোনো আসন থেকেই জিততে পারবেন না। কিন্তু তারা আমাদের কিছুটা অবাকও করেছেন। ভোটের লড়াইয়ে প্রথমবারের মতন কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণ ফোরাম একটি নয়, দুইটি আসন থেকে জয়লাভ করে। কারচুপি যদি হতোই তাহলে যে দল আগে কোনো নির্বাচনেই কোনো আসন পায়নি তারা কিভাবে দুইটি আসনে জিতে?’ ‘সত্য আসলে বেশি জটিল না। বাংলাদেশের জনগণ, বিশেষ করে তরুণরা, দেখছে কিভাবে শেখ হাসিনার মতন একজন ডাইনামিক নেত্রী দেশকে উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাই বিরোধীপক্ষের শত অপবাদ, অপপ্রচার ও কাদা ছোড়াছুড়ি কোনো কাজে আসেনি। কারণ দিন শেষে মানুষ তাকেই বেছে নেয় যে তাকে উন্নত জীবন দিতে পারবে।’

ভাইজানরে,

‘জামায়াতের সঙ্গে অতীতে যেটা হয়েছে, সেটি অনিচ্ছাকৃত ভুল। তারা যে ধানের শীষে জামায়াতের ২২ জনকে মনোনয়ন দেবে, সেটি আমরা জানতাম না।তাড়াতাড়ি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃত যেসব ভুল-ত্রুটি হয়েছে, তা সংশোধন করে ভবিষ্যতের জন্য সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।’ এইসব কথা বলিবার পর মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি আপনার অবস্হান বুঝিতে পারিয়াছে।কয়েকজন জামাত নেতারা এই বিষয়ে বলিতেছে ঐক্যফ্রণ্টে আপনি থাকিলে জামাত থাকিবে না।এখন হয়ত বুঝা যাইবে বিএনপি জামাতকে তালাক দিবে নাকি ঐক্যফ্রণ্টে ভাঙ্গণ শুরু হইবে।

ভাইজানরে,

সারাদেশে সচেতন লোকজনের মধ্যে আপনার জনপ্রিয়তা বাড়িয়া চলিতেছে।আপনি আবারো সংলাপের প্রস্তাবের দিয়াছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই সংলাপের পক্ষে আছেন বলিয়া দেশবাসীকে পরিষ্কার ধারণা দিয়াছেন। এদিকে বিএনপি নেতা সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু চৌধুরী বলিলেন ফলপ্রসূ আলোচনা না হইলে সংলাপের দরকার কী ? তিনি নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কোনো সুফল বয়ে আনেনি বলে অভিযোগ করেন।তিনি আরো বলিলেন ‘দেশে একটা সংবিধান আছে, সংবিধানে মৌলিক অধিকার, বাক স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের কথা বলা হয়েছে, এগুলো থেকে ব্যত্যয় ঘটিয়ে সংলাপ করে কিছু অর্জন করা যাবে না।’ আজ আর না।আপনার মঙ্গল ও সুস্বাস্হ্য কামনায় ইতি আপনারই বিশ্বস্ত

ঠাণ্ডা মিয়া

গ্রন্হনা: ম. আ. হ

তারিখ ১৪ জানুয়ারী ২০১৯

আগামী সংখ্যায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ সমীপে ঠাণ্ডা মিয়ার গরম কথা ( ২১০) সম্প্রচার করা হইবে।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply