২৫ এপ্রিল ২০২৪ / ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ১১:২৪/ বৃহস্পতিবার
এপ্রিল ২৫, ২০২৪ ১১:২৪ অপরাহ্ণ

ভোটের বাইরে বিএনপির আরো পাঁচ প্রার্থী

     

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া আরো আটজনের প্রার্থিতা স্থগিত হয়েছে হাইকোর্টে। এদের মধ্যে পাঁচ জনই বিএনপির প্রার্থী।

এই আট জনের প্রত্যেকে বাদ পড়েছেন একটি কারণে। উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ছাড়ার চিঠিটি গ্রহণ হওয়ার আগেই তারা প্রার্থী হয়েছিলেন।

প্রার্থী শূন্য হওয়া আসনগুলোতে নতুন করে তফসিল দেওয়ার দাবিতে নির্বাচন কমিশনে বিএনপির আবেদনের দিনই গতকাল এই ধাক্কা পেল দলটি। বৃহস্পতিবার জে বি এম হাসান ও খায়রুল আলমের বেঞ্চ থেকে এই আদেশ এসেছে।

এর আগেও নয়টি আসনে বিএনপির প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। তবে একটি আসনে অন্য একজনকে প্রতীক দেওয়ার আদেশ দিয়েছে উচ্চ আদালতে। ফলে এই আটটিসহ মোট ১৩টি আসনে বিএনপির প্রার্থী নেই।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এসব প্রার্থীর পতদ্যাগপত্র গৃহীত হওয়ার পূর্বেই তারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু উপজেলা পরিষদ আইন-১৯৯৮ এর ১২(২) ধারায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা সদস্যগণের পদত্যাগের বিষয়ে বলা আছে, পদত্যাগ গৃহীত হইবার তারিখ হইতে পদত্যাগ কার্যকর হইবে এবং পদত্যাগকারীর পদ শূন্য হইবে। তারা পদত্যাগ না করে প্রার্থী হয়েছিলেন। আদালত তাদের মনোনয়ন স্থগিত করেছেন। আপাতত তাদের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই।’

একই দিন চারজন প্রার্থীকে ধানের শীষ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। এর একটি বগুড়া-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থীকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছিল। ফলে সেখানে একজন প্রার্থী ফিরে পেয়েছে দলটি। আর প্রার্থী পাল্টাতে হচ্ছে নাটোর-১ এবং মানিকগঞ্জ-১ আসনে।

জামালপুর-৪

জামালপুরর সরিষাবাড়ী উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনে বিএনপির প্রার্থী ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীমের প্রার্থিতা স্থগিত হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুরাদ হাসানের আবেদনে।

ফরিদুল সরিষাবাড়ীর উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় গত ২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। তবে নির্বাচন কমিশনে আপিল করে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে প্রচার শুরু করেন।

কিন্তু নৌকার প্রার্থী মুরাদ হাসান নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন।

জয়পুরহাট-১

জয়পুরহাট সদর ও পাঁচবিবি উপজেলা নিয়ে গঠিত সংসদয় আসনে বৃহস্পতিবার সকালে ধানের শীষের প্রচারে থাকার সময় বিএনপির প্রার্থী ফজলুর রহমান জানেন, তার প্রার্থিতা স্থগিত হয়ে গেছে। এরপর তিনি প্রচার স্থগিত করেন।

ফজলুর রহমান ছিলেন সদর উপজেলার চেয়ারম্যান। সংসদ সদস্য হিসেবে লড়বে এই পদ ছেড়ে জমা দেন মনোনয়নপত্র। গত ২ ডিসেম্বর যাচাই বাছাইয়ে তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। তবে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সামছুল আলম দুদু।

ফজলুর রহমান দাবি করছেন, তিনি মনোনয়নপত্র জমার আগে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে দিয়েছেন। এখন পদত্যাগপত্র গ্রহণ না হওয়ার অজুহাতে প্রার্থিতা আটকে গেছে। এটা সরকারের চাল। তাকে নির্বাচন থেকে সড়িয়ে রাখতে ষড়যন্ত্র।

এই আসনে জাতীয় পার্টির একজন প্রার্থীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মিলে আরো পাঁচ জন প্রার্থী আছেন। তবে বিএনপি ছাড়া আওয়ামী লীগকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কেউ নেই।

ঝিনাইদহ-২

ঝিনাইদহ সদর ও হরিণাকু-ু উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন হরিনাকু-ু উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ। তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে আগে ছাড়েন চেয়ারম্যানের পদ। রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন। পরে নির্বাচন কমিশন তাকে বৈধ প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে।

পরে হাইকোর্টে রিট করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী তাহজীব আলম সিদ্দিকী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪

আখাউড়া ও কসবা উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনে বিএনপির প্রার্থী মোসলেম উদ্দিনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয় ২ ডিসেম্বর যাচাইবাছাইয়ে। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল করে তিনি ফিরে পান প্রার্থিতা।

এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন ওই আসনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী জসিম উদ্দিন।

মোসলেম উদ্দিন ছিলেন আখাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি জানান, এই পদ ছেড়েই প্রার্থী হয়েছিলেন সংসদ নির্বাচনে।

রাজশাহী-৬

বাঘা ও চারঘাট উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনে বিএনপির প্রার্থী আবু সাঈদ চাঁদের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছিল ২ ডিসেম্বর যাচাই বাছাইয়ে। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল করে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পান।

আরো যেসব আসনে বিএনপির প্রার্থী নেই

ঢাকা-১, ঢাকা-২০, জামালপুর-১, দিনাজপুর-৩, সিলেট-২, মানিকগঞ্জ-৩, বগুড়া-৭, চাঁদপুর-৪ আসনেও বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই।

বাতিল আ.লীগের দুই বিদ্রোহীসহ আরো তিন

ময়মনসিংহ-৮(ঈশ্বরগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাহমুদ হাসান সুমনও ভোটে দাঁড়াতে পারছেন না। তিনি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন।

ওই আসনের মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম তার বিরুদ্ধে রিট করেন।

রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) আসনে গঙ্গাচড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে প্রার্থী হওয়া আসাদুজ্জামান বাবলুও ভোটে থাকছেন না। তিনিও দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। তার বিরুদ্ধে রিট করেন মহাজোটের প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা।

ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের বশির উল্লাহ ঝড়–র প্রার্থিতাও স্থগিত হয়েছে। তিনি সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ছিলেন।

ধানের শীষ পেলেন চার জন

মানিকগঞ্জ-১ আসনের বিএনপির প্রার্থী এস এ জিন্নাহ কবিরের বদলে বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে খোন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলুকে ধানের শীষ দেওয়ার আদেশ এসেছে।

এই আসনে বিএনপি প্রথমে জিন্নাহকে, পরে ডাবলুকে এবং শেষ মুহূর্তে আবার জিন্নাকে মনোনয়ন দেয়। পরে উচ্চ আদালতে রিট করেন ডাবলু।

নাটোর-১ আসনের কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মঞ্জুরুল ইসলাম বিমলের বদলে ধানের শীষ নিয়ে লড়বেন বিএনপির প্রয়াত স্ত্রী ফজলুর রহমান পটলের স্ত্রী কামরুন্নাহার শিরিন।

বিএনপি প্রথমে শিরিকেই চূড়ান্ত মনোনয়নের চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বিমলকে দেয়া এই চিঠি। পরে দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যান পটলের স্ত্রী।

নওগাঁ-১ আসনে বিএনপি নেতা মোস্তাফিজুর রহমানকে ধানের শীষ প্রতীক দেওয়ার নির্দেশ এসেছে। তিনিই প্রথমে ওই আসনে দলের ‘চূড়ান্ত’ মনোনয়ন পেয়েছিলেন। পরে শেষ মুহূর্তে তা পাল্টে দেওয়া হয় সালেক চৌধুরীকে। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যান মোস্তাফিজ।

বগুড়া-৩ আসনে আব্দুল মুহিত তালুকদারের প্রার্থিতা বাতিল করে ওই আসনে মাসুদা মমিনকে ধানের শীষ প্রতীক দিতে বলা হয়েছে। তিনি ওই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মোমেন তালুকদারের স্ত্রী।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার এই আসামি বর্তমানে পলাতক। তার অবর্তমানে প্রথমে স্ত্রী মাসুদাকে এবং পরে মুহিতকে মনোনয়নের চিঠি দিয়েছিল বিএনপি। গত ১৮ ডিসেম্বর মুহিতের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এতে আসনটি বিএনপি

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply