২৫ এপ্রিল ২০২৪ / ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ৮:৪৩/ বৃহস্পতিবার
এপ্রিল ২৫, ২০২৪ ৮:৪৩ অপরাহ্ণ

অবশেষে বের হল শিশু তুষার হত্যার রহস্য, জড়িত মামা ও ভাই

     


 

হিমেল তালুকদার, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ॥ ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার মুনিষগাঁও গ্রামে আল রাজি মোস্তাকিম রাজু দীর্ঘদিন যাবত পরকীয়া প্রেমে জড়িত। কিছুদিন যাবত ওই নারী রাজুকে বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। কিন্তু হঠাৎ বিয়ে করতে গেলে টাকার প্রয়োজন। এছাড়াও অনেক টাকা দেনার মধ্যে ছিলেন রাজু।

তাই মোটা অংকের টাকা কিভাবে পাওয়া যাবে সে জন্য পরিকল্পনা শুরু করেন রাজু। সেই মোতাবেক প্রতিবেশি মাসুদ রানার ছেলে আব্দুল কাফি তুষার (৩) কে অপহরন করে মুক্তিপনের চিন্তা করেন সে।

কিন্তু রাজুর পক্ষে একাই অপহরন করা সম্ভব হবে না বলে পারিবারিক কোলহের জের কে কাজে লাগিয়ে ও টাকার লোভ দেখিয়ে তুষারের মামা সেতু, চাচাতো ভাই শান্তকে ম্যানেজ করেন রাজু।

রাজুর পরিকল্পনা অনুয়ায়ী ২৬ এপ্রিল বুধবার মাসুদ রানার ছেলে তুষারকে অপহরণ করা হয়। সেই অপহরনের বিষয়টি প্রতিবেশি চাচা সিরাজুল ইসলাম টের পেলে রাজুর কাজে ফাঁয়দা নেওয়ার জন্য তুষারকে জিনে নিয়ে গেছে বলে মিথ্যা অপপ্রচার চালায়। দু’দিনের মধ্যে তুষার বাড়িতে ফেরত আসবে বলে তুষারের বাবা মাসুদ রানাকে জানান সিরাজুল।

অপহরনের আগে সেতু তার মা (তুষারের) নানীর মোবাইল চুরি করেন অপহরনের পর মুক্তিপন দাবির জন্য। অপহরনের দিন সকালে প্রতিবেশি চাচা সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে গিয়েছিল তুষার। ওই বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর তুষারকে সিরাজুল ইসলামের ছেলে শান্তর (১৫) কোলে দেখা যায়। সেদিনই তুষারকে অপহরণ করা হয়। নিখোঁজের ঘণ্টা ছয়েক পর ওই চুরি হওয়া মুঠোফোন দিয়ে তুষারের বাবার কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন রাজু। পরে তুষারের বাবা মাসুদ রানা রানীংশকৈল থানায় অপহরন বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। বিষয়টি টের পেয়ে অপহৃতরা শিশু তুষারকে চেতনা নাশক ওষুধ দিয়ে একটি বস্তায় ভরে হত্যার উদ্দেশ্যে অন্যস্থানে নিয়ে যায়। পরে একটি ঘরে রাজু, সেতু, শান্ত ও রিপনসহ গলা ও হাতের রগ কেটে হত্যা করে শিশু তুষারকে।

রবিবার ঠাকুরগাঁও নারী শিশু নির্যাতন দমন আইন আদালতের বিচারক ফারহানা আক্তার খানের কাছে হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে এভাবেই জবানবন্দি দিয়েছেন তুষারের মামা সেতু। পরে আদালত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে আটক ৯ জনকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।

উল্লেখ্য, ২৮ এপ্রিল শুক্রবার সকালে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার মুনিষগাঁও গ্রামে শিশুটির লাশ বাড়ির পাশের একটি খড়ের গাদা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকা সন্দেহে মূলহোতাসহ ৯ জনকে আটক করে।

অপরদিকে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ শিশু তুষার হত্যায় ৯ জনকে আটক করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন। এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেওয়ান লালন আহম্মেদ, রানীশংকৈল থানার সার্কেল এসপি মো: হাসিব, সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ মশিউর রহমান, ওসি তদন্ত মান্নান ও সাংবাদিকবৃন্দ।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply