২৫ এপ্রিল ২০২৪ / ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / দুপুর ১:১৩/ বৃহস্পতিবার
এপ্রিল ২৫, ২০২৪ ১:১৩ অপরাহ্ণ

এদেশ কোনো মহারানীর নয়, কোনো রাজার নয়-ড. কামাল

     

এদেশ কোনো মহারানীর নয়, কোনো রাজার নয়। জনগণ ক্ষমতার মালিক। ভোট সুষ্ঠু না হলে স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে যায়।”

দেশে যা হচ্ছে তা মেনে ‘নেওয়া যায় না’ মন্তব্য করে ‘দেশের মালিক’ জনগণকে শক্তভাবে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন।ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি নিয়ে গণভবনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় দফা সংলাপের আগের দিন আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক জনসভায়  ড. কামাল হোসেন এই আহ্বান জানান।

জোটের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ড.  কামাল হোসেন বলেন, “আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, ঐক্যবদ্ধ থাকব। ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েই আমরা দেশের সকল অন্যায় দূর করব।”

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন ছিলেন এ কর্মসূচির প্রধান অতিথি। আর জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব ছিলেন প্রধান বক্তা।জোটের শরিক নাগরিক ঐক্য, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া এবং কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন এ জনসভায়।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে’ জনসভায় ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “আজকে এই পিজি হাসপাতালে ছোট্ট একটি কক্ষে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ অবস্থায় বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন। আমি জানি না, জনগণের এই উচ্চারণ পৌঁছাচ্ছে কিনা। আমি বিশ্বাস করি, তিনি সেখান থেকে শুনছেন এবং বলছেন, এগিয়ে যাও, গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য এগিয়ে যাও, বিজয় নিশ্চিত কর।”

ফখরুল বলেন, গণভবনের সংলাপে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ‘নির্যাতন’ করা হচ্ছে।

“প্রতিদিন গ্রেপ্তার হচ্ছে। এই জনসভা থেকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমার কাছে লম্বা তালিকা আছে যা পড়ে শেষ করা যাবে না। শুধু গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ হাজার ৩৭১টি মামলা হয়েছে। ২৫ লাখ আসামি।”

জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব বলেন, আর গায়েবী মামলা দেবেন না, কাউকে গ্রেপ্তার করবেন না, বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিকে মুক্তি দিন। অন্যথায় খবর আছে।”

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বলেন, “আমি বিএনপিতে যোগ দেই নেই, আমি ড. কামাল হোসেনের ঐক্যফ্রন্টে যোগদান করেছি। আমি বলব, যদি আপনারা জিততে চান, তাহলে জয় আপনাদের হাতে। আর যদি হারতে চান তাও আপনাদের হাতে।”

সাবেক এই আওয়ামী লীগ নেতা বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, “যদি বিজয়ী হতে চান, তাহলে নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপি ভুলে যান। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পতাকাতলে অন্ততপক্ষে সোজা হয়ে দাঁড়ান।”

মুক্তিযুদ্ধের কাদেরিয়া বাহিনীর নেতা কাদের সিদ্দিকী বলেন, বিএনপি রাজকারের গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা তুলে দিয়েছে বলে যে অভিযোগ আওয়ামী লীগ করে, তা ‘সত্য নয়’। আওয়ামী লীগই ‘প্রথম’ ওই কাজ করেছে।

তিনি বলেন, “সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা এনেছিলাম, আজকে বলে যাচ্ছি, ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে আমরা এই পল্টন থেকে গণতন্ত্রকে মুক্ত করব, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব।”নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “দেশে নির্বাচন হবে, জনগণের বিজয় হবে। যদি সরকার দাবি না মানে তাহলে কি হবে? এই সভা থেকে, এই মঞ্চ থেকে বলছি, এখান থেকে শাপলা চত্বর পর্যন্ত যত রাজপথ আছে প্রকম্পিত করে আমাদের দাবি আদায় করব।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “প্রথম সংলাপ কোনো কাজের সংলাপ হয় নাই। আমরা আগামীকাল যাচ্ছি। আমরা ঝগড়া করতে চাই না। আমরা বলতে চাই, আগামী দিনে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।”

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, “আমরা সংলাপে এখনো কিছু পাই নাই। আজকে সরকার যদি সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতায় না আসে, রাজপথ ও আন্দোলন ছাড়া আমাদের কোনো বিকল্প থাকবে না। আপনারা প্রস্তুত হোন।”

জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার সুলতান মো. মনসুর আহমেদ বলেন, “আমরা জনগণকে বলতে চাই, সোজা আঙুলে ঘি উঠবে না, আঙুল বাঁকা করতে হতে পারে। সকলে প্রস্তুতি নিন।’’

গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশের ‘সঙ্কট’ থেকে উত্তরণে সকলকে এক হতে হবে। আর চুপ করে বসে থাকা যাবে না।

বিএনপির শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আবদুস সালাম আজাদ, আমিরুল ইসলাম আলীম, জেএসডির শফিকউদ্দিন আহমেদ স্বপন ও গণফোরামের মোশতাক আহমেদের পরিচালনায় এ জনসভায় জেএসডির তানিয়া রব, আবদুল মালেক রতন, এম এ গোফরান, গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের এসএম আকরাম হোসেন, শহীদুল্লাহ কায়সার বক্তব্য রাখেন।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির জমিরউদ্দিন সরকার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আবদুল্লাহ আল নোমান, জয়নাল আবেদীন, আমানউল্লাহ আমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ফজলুল হক মিলন, অঙ্গসংগঠনের কাজী আবুল বাশার, আহসানউল্লাহ হাসান, আফরোজা আব্বাস, সাইফুল আলম নীরব, শফিউল বারী বাবু ও রাজীব আহসান।

এছাড়া ২০ দলীয় জোটের শরিক বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, ইসলামী ঐক্যজোটের এম এ রকীব, খেলাফত মজলিশের আহমেদ আবদুল কাদের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা নুর হোসাইন কাশেমী, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, বিকল্পধারা বাংলাদেশের একাংশের অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী বক্তব্য দেন জনসভায়।

এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপার খোন্দকার লুৎফর রহমান, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, বিকল্পধারা একাংশের মহাসচিব শাহ আহমেদ বাদল, পিপিবির রিটা রহমান, গণফোরামের মোকাব্বির খান, জগলুল হায়দার আফ্রিক, আওম শফিকউল্লাহ, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার  আবম মোস্তফা আমিন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নাসরিন সিদ্দিকী, হাবিবুর রহমান বীর প্রতীক, বিএনপির সেলিমা রহমান, শাহজাহান ওমর, আবদুল মান্নান, বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, মীর নাসির, মাহমুদুল হাসান, রুহুল আলম চৌধুরী, আহমেদ আজম খান, এজেএম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, জয়নুল আবদিন ফারুক, লুৎফুর রহমান খান, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, ফরহাদ হালিম ডোনার, মাহবুবউদ্দিন খোকন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, আহসান হাবিব দুলু, নুরুল ইসলাম মনজু, বিলকিস জাহান শিরিন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, শিরিন সুলতানা, এবিএম মোশাররফ হোসেন,নাজিম উদ্দিন আলম, মীর সরফত আলী সপু, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, শামীমুর রহমান শামীম, হারুনুর রশীদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

 

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply