২৯ মার্চ ২০২৪ / ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / রাত ২:২৮/ শুক্রবার
মার্চ ২৯, ২০২৪ ২:২৮ পূর্বাহ্ণ

ঠান্ডা মিয়ার গরম কথা মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সমীপে

     

মাননীয়,
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্রল গৌরব এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সুযোগ্য পুত্র ব্যারিষ্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সমীপে,
শ্রদ্ধেয়

নওফেল ভাইজানরে,
গরম গরম কথার শুরুতে আমার লাখ কোটি সালাম জানিবেন। আশা করি, আল্লাহ মালিকের অপার মহিমায় ভালো থাকিয়া সামনে  জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইসতেহার  ও  নানান ফর্মূলা তৈরী ও বাস্তবায়ন করিয়া দিনাতিপাত করিতেছেন। আমিও গ্রাম বাংলার এক মফস্বল শহরে থাকিয়া সামনের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও রাজনৈতিক সংকট এইসব ভাবিয়া ভাবিয়াই ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্ছার মতো খাইয়া না খাইয়া বাঁচিয়া আছি। গেল বারে আ জ ম নাসির উদ্দিন সমীপে গরম কথা লিখিবার পর আপনার ও আপনার মরহুম পিতার ভক্ত- অনুরক্তরা এইবার আপনাকে লইয়া গরম কথা লিখিবার অনুরোধ করিয়াছে  বিধায় এইবার আপনার সমীপে লিখিব বলিয়াছিলাম বলিয়াই  হঠাৎ করিয়া লিখিতেছি বলিয়া রাগ করিবেন না বরং শত ব্যস্ততার পরও গরম কথাটুকু পড়িয়া দেখিবেন ও যাহা প্রয়োজন তাহা করিবেন।  ভুল হইলে নিজ গুনে মাফও করিয়া দিবেন। ইতিপূর্বে আপনার প্রয়াত পিতা এবিএম মহিউদ্দিন  চৌধুরী সমীপে ঠান্ডা মিয়া গরম কথা লিখিয়াছিলাম এবং তিনি যাহা প্রয়োজন তাহা করিয়াও ছিলেন।

ভাইজানরে,

আপনি হইলেন, চট্টগ্রামে কম বয়সের তরূন নেতা আওয়ামী লীগের মতো বৃহৎ রাজনৈতিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক হইবার গৌরব আর্জন করি্য়াছেন।এটা শাণিত -প্রাণিত করা সর্বোপরি আপনার যোগ্যতা প্রমাণ করিবার সময় আসিয়াছে এখন ।মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে হিসাবে আপনি যাহা পাইয়াছেন চট্টগ্রামের অন্য নেতার সন্তানেরা তাহা পান নাই।যদিও আতাউর রহমান খান কায়সারের মেয়ে ওয়াশিকা আয়েশা খান সংরক্ষিত মহিলা এমপি  ও কেন্দ্রিয় মহিলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি হইয়াছেন।অবশ্য এখানে এটাও মনে রাখিতে হইবে ওয়াশিকার মাতা -পিতা দুইজন বর্নাঢ্য রাজনীতিবীদ। ওয়াশিকার মাও কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও মহানগরের দীর্ঘদিনের সভাপতি ছিলেন।এম এ আজিজ, ওহাব মিয়া,  ছিদ্দিক মিয়া ও ইসহাক মিয়ার ছেলেদের ভাগ্যে আপনার মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ জুটে নাই। এমন কি মন্ত্রী মান্নান, মোশাররফ হোসেন, আখতারজ্জামান চৌধুরী বাবু ও অধ্যাপক নুরুল ইসলামের কাহারো সন্তানেরা আপনার মতো দলীয় উচ্চ পদে আসীন হওয়ার সুভাগ্য হয় নাই।বাবুপুত্র সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ভুমি প্রতিমন্ত্রী ও এমপি হইলেও দলের কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে  নাই।অথচ সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ কয়েকবার ব্যবসায়ীদের বড় সংগঠন চট্টগ্রাম শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করিয়াছেন।১৯৯৪ সাল থেকে টানা সাড়ে ১৬ বছর চট্টগ্রামের মেয়র ছিলেন আপনারই পিতা মহিউদ্দিন চৌধুরী। অনেকেই বলিতেছে, এইটা মহিউদ্দিন চৌধুরীর ত্যাগের ফসল।ঢাকা বারের আইনজীবী ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বিজয় টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে পালন করিয়া আসিতেছেন আপনি । যাক, সেইসব কথা।

ভাইজানরে,

শুনিয়াছি, ২০১৪ সাল থেকেই আপনি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সদস্য ছিলেন।এছাড়াও একই সময় থেকেই আপনি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগেরও সদস্য। বিষয়টি কেমন জানি উল্টা পাল্টা মনে করিতেছে সুশীল সমাজের লোকেরা । রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলিতেছে, আপনি একটি পদ ছাড়িয়া দিয়া অন্য কোন মেধাবী ও যোগ্য লোক এই রকম পদে আসীন করাইলে দলের অনেক লাভ হইত।

শুনিয়াছি, তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কিত বিদেশী প্রতিষ্টানের বিপক্ষে দেশীয় স্বার্থ রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের আইনী কৌশলী হিসাবে দীর্ঘদিন কাজ করিয়াছেন আপনি।রাজনৈতিক মহলে কানাঘুষা হইতেছে, সাজাপ্রাপ্ত অবস্থায় কারাগারে থেকে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ, মহিউদ্দিন খান আলমগীর, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। এমন বাস্তবতায় খালেদা জিয়াও সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারিবেন। এই বিষয়ে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে ও সংবিধানের আইন কী বলে জাতিকে জানানো দরকার।

ভাইজানরে,

কখনো প্রতিপক্ষকে দূর্বল ভাবিতে নাই।এক সময় আপনার পিতা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি থাকা অবস্হায় আ জ ম নাসির উদ্দিন মহানগর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনেও থাকিতে পারেন নাই।কিন্তু এখন আ জ ম নাসির উদ্দিন শুধু মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নন বরং দেশের  বাণিজ্যিক রাজধানীখ্যাত ম্যাগাসিটি চট্টগ্রামের মেয়রও।এক সময় শুনিতাম, শহরে বাবু – মহিউদ্দিন গ্রুপ, তখন আ জ ম নাসির উদ্দিন ছিলেন আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর সাথে।দক্ষিন জেলায় ছিল বাবু -কায়সার গ্রুপ পরে বাবু-জাফর গ্রুপ, নগরে কিছুদিন গুরু শীর্ষ লড়াই অর্থাৎ  বাবু- নাসির গ্রুপ এবং সর্বশেষে মহিউদ্দিন – নাসির গ্রুপের রাজনীতি চট্টগ্রামবাসী দেখিয়াছে। গ্রুপ রাজনীতির দুই মহান নেতা বাবু- মহিউদ্দিন এখন বাঁচিয়া নাই।বাচিঁয়া নাই আতাউর রহমান খান কায়সারও।রাজনৈতিক ভারসাম্য দিবার নেতা অধ্যাপক পুলিন দে, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম.ফজলুল হক বিএসসি,  ইসহাক মিয়া, ইদ্রিস বিকম, ওহাব মিয়া ও ছিদ্দিক মিয়ারাও আর বাঁচিয়া নাই।আবু ছালেহ গুরুতর অসুস্হ। মোশাররফ হোসেন ও মোসলেম উদ্দিন আহমেদ দুই জেলার দুই অভিজ্ঞ ও প্রজ্ঞাবান রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব।এই দুই নেতাকে সামনে রাখিয়া গ্রুপিং বাদ দিয়া সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, আ জ ম নাসির উদ্দিন, ওয়াশিকা আয়েশা খানদের লইয়া আপনিই ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগের রাজনীতির ডাক চট্টগ্রাম হইতে দিবার দরকার বলিতেছে আপনার শুভাকাঙ্খীরা। কথাটা গভীরভাবে ভাবিয়া দেখিবেন।

 ভাইজানরে    

সংবিধান প্রণেতা ড কামাল হোসেন, জাতীয় পতাকা উত্তোলক আ স ম আবদুর রব ( কেউ কেউ বলিয়া থাকেন সময়ে রব অসময়ে নিরব) বঙ্গবীর কাদের ছিদ্দিকী, ডাকসুর ভিপি সুলতান মুহাম্মদ মুনসু্‌র, মাহমুদুর রহমান মান্না এইসব ব্যাক্তিদের জাতীয়ভাবে পরিচয় রহিয়াছে। এইবার যেহেতু তাহারা জোটবদ্ধ হইয়াছে সেইহেতু জাতীয় নির্বাচনে এইবার পরিবর্তন আসিবে।এই পরিবর্তনে আপনাদের মেধা  ও কৌশল সর্বাধিক ব্যবহার করিতে হইবে।মনে রাখিবেন, খালেদা জিয়া জেলে থাকিয়া ও নির্বাচন করিতে পারে। সেই লক্ষ্যে মাঠে আন্দোলন ও আদালতে কামাল সাহেবের আইনী মিশন ও বিদেশীদের বুঝানোর দায়িত্ব ড. ইউনুস কাজ করিতেছে বলিয়া শুনিতেছি।এই ক্ষেত্রে বিএনপির জনসমর্থনে এই নেতারা ভাগ বসাইয়াছে বলিয়া মনে হইতেছে আর রাজনৈতিক এতিম হইয়াছে জামাত।

                              আজ আর না। আপনার মঙ্গল ও সুস্বাস্হ্য কামনায় আপনারই বিশ্বস্হ।

                                                                                                                                                                                                                                                                 ঠাণ্ডা  মিয়া

                                                                                                           গ্রন্হনা ম. আ. হ

                                                                                                     তারিখ ৬ নভেম্বর ২০১৮   আগামী সংখ্যায় ঠাণ্ডা মিয়ার গরম কথা (২০৬) ভুমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ  সমীপে সম্প্রচার করা হইবে।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply