২৯ মার্চ ২০২৪ / ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / রাত ৮:৩৪/ শুক্রবার
মার্চ ২৯, ২০২৪ ৮:৩৪ অপরাহ্ণ

গাজীপুরে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষ, পুলিশসহ অন্তত ২০ জন আহত

     

গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি
বেতনের দাবিতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের লক্ষীপুরা এলাকার ইন্ট্রামেক্স পোশাক কারখনার আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে ১৫ অক্টোবর সোমবার বিকেলে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটেছে। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ, গুলিবর্ষণ, টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় পুলিশসহ অন্তত ২০ শ্রমিক আহত হয়েছে।

আহতদের মধ্যে গাজীপুর সদর থানার এসআই বশির আহমেদ ও কারখানার কোয়ালিটি কন্ট্রোলার আব্দুল আলিম রয়েছেন। কারখানার প্যাকিংম্যান মারফত আলী (২৫), আয়রনম্যান মোবারক হোসেন (৩০) লাঠিপেটা ও টিয়ারসেলে আহত হয়েছে। তাদের গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশের এএসপি মোঃ মকবুল হোসেন জানান, কারখানার স্টাফদের পাঁচ মাসের এবং শ্রমিকদের সেপ্টেম্বর মাসের বেতন পাওনা রয়েছে। এ বেতনের দাবিতে শ্রমিক-কর্মচারীরা রবিবার দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কর্মবিরতি এবং বিক্ষোভ করে। পর দিন সকালেও তারা কারখানায় গিয়ে একই দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করে। কর্তৃপক্ষ ২৪ অক্টোবর তাদের বেতন দেওয়ার ঘোষণা দিলে শ্রমিকরা তা না মেনে বিকেলে বিক্ষোভ এবং কারখানায় ভাংচুর শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা কারখানার পার্শ্ববর্তী ঢাকা-গাজীপুর সড়কে অবস্থান নিতে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। শ্রমিক-পুলিশের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শ্রমিকদের মৃদু লাঠিচার্জ, ৩১ রাউন্ড সর্টগানের গুলি ও ২২ রাউন্ড টিয়ার সেল ছুঁড়ে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

গাজীপুর সদর মেট্রো থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সমীর চন্দ্র সূত্রধর জানান, এ ঘটনায় সদর থানার এসআই বশির আহমদসহ দুই পুলিশ সদস্য এবং কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন। তবে কেউ গুরুতর নন।

কারখানার কেয়ালিটি ইন্সপেক্টর মোঃ আমান উল্লাহ ও শ্রমিক শহিদুল ইসলাম জানান, স্টাফদের পাঁচ মাসের এবং শ্রমিকদের সেপ্টেম্বর মাসের বেতন পাওনা রয়েছে। কর্তৃপক্ষ ওই পাওনা পরিশোধের একাধিক তারিখ দিলেও তারা তা পরিশোধ করেনি। সর্বশেষ ১৪ অক্টোবর শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ওই দিনও বেতন দেয়নি। পরে শ্রমিকরা দুপুরের পর থেকে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করে। একই দাবিতে সোমবার সকাল থেকে তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু পুলিশ তাদের উপর হামলা, গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। এতে তাদের অন্তত ১৮-২০ জন আহত হয়েছে।

এ ব্যাপারে কারখানার জিএম (অপারেশন) মোঃ আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, কারখনায় প্রায় ৬ হাজার শ্রমিক ও স্টাফ রয়েছে। প্রতি মাসে তাদের বেতনের জন্য সোয়া ৬ কোটি টাকার প্রয়োজন হয়। অর্থসংকটের কারণে কথামত তারা বেতন দিতে পারছেন না। তারপরও ২৪ অক্টোবর বেতন প্রদানের আশ্বাস দিলেও শ্রমিকরা না মেনে রবিবার দুপুরে বিক্ষোভ শুরু করে এবং অফিস কক্ষের কাঁচ ভাংচুর করে। সোমবার সকালেও তারা কারখানা চত্বরে ধর্মঘট, বিক্ষোভ এবং বিকেলে কারখানা ভাংচুর করে।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply