চলে গেলেন প্রবীণ সাংবাদিক কুলদীপ নায়ার
ভারতের প্রবীণ সাংবাদিক, লেখক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক কুলদীপ নায়ার আর নেই। টাইমস অভ ইনডিয়া জানিয়েছে, বুধবার গভীর রাতে দিল্লির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বহুদর্শী এই ব্যক্তিত্বের জীবনাবসান ঘটে। তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও দুই পুত্রসন্তান রেখে গেছেন। বিডিনিউজ
কুলদীপ নায়ারের জন্ম ১৯২৩ সালের ১৪ অাগস্ট ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাবের শিয়ালকোটে (বর্তমানে পাকিস্তানে)। আইন শাস্ত্রে লেখাপড়া করেও তিনি কর্মজীবন শুরু করেন উর্দু পত্রিকা দৈনিক আনজামের একজন প্রতিবেদক হিসেবে। এরপর দীর্ঘ ক্যারিয়ারে নিজের পরিচয়কে তিনি বিস্তৃত করেছেন বহুমাত্রায়।
ভারতের ইংরেজি দৈনিক ইনডিয়ান এক্সপ্রেস এবং স্টেটসম্যান সম্পাদনা করা কুলদীপ নায়ার ছিলেন সেইসব সাংবাদিকদের একজন যারা সত্তরের দশকে ইন্দিরা গান্ধীর সময়ে জরুরি অবস্থা জারির বিরোধিতায় সরব হয়েছিলেন। প্রতিবাদী হওয়ায় তাকে কারাগারেও যেতে হয়েছিল।
কুলদীপ নায়ার ১৯৯০-এর দশকের শুরুতে যুক্তরাজ্যে ভারতের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৭ সালে রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
ধর্মীয় উগ্রবাদের পাশাপাশি উগ্র জাতীয়তাবাদের বিরোধিতায় সরব এ কলামিস্ট শেষ বয়সে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিলেন তার রাজনৈতিক বিশ্লেষণের জন্য ।
তিনি মনে করতেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের পাশাপাশি পাকিস্তানের সঙ্গেও ভারতের দূরত্ব কমিয়ে আনা প্রয়োজন।
গণতন্ত্রকামী এ অধিকারকর্মী তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে লিখে গেছেন ১৫টি বই। তার আত্মজীবনী ‘বিয়ন্ড দ্য লাইন্স’-এ ব্যক্তি কুলদীপ নায়ারের বেড়ে ওঠার গল্পের সঙ্গে ধরা পড়েছে ভারতীয় উপমহাদেশের ঐতিহাসিক নানা বাঁক বদলের কথা।
তার মৃত্যুতে ভারতের প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ বহু মানুষ শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন।
এক টুইটে মোদী বলেছেন, ‘কুলদীপ নায়ার আমাদের সময়ের এক মহান বুদ্ধিজীবী ছিলেন। মতামত প্রকাশে স্পষ্টভাষী ও নির্ভীক ছিলেন তিনি। জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে তার অবস্থান, উন্নত ভারতের জন্য তার নিবেদন সবসময় মনে থাকবে। তার মৃত্যুতে গভীর শোক।’
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ আগস্ট) দক্ষিণ দিল্লির লোধি শ্মশানে তার শেষকৃত্য হবে বলে এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।