২৮ মার্চ ২০২৪ / ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / রাত ৮:১১/ বৃহস্পতিবার
মার্চ ২৮, ২০২৪ ৮:১১ অপরাহ্ণ

বিজিবি-বিএসএফ’র যৌথ টহল জোরদার ১৬০কিলোমিটার সীমান্ত দিয়ে কমেছে অপরাধ

     

 

বেনাপোল থেকে এম ওসমান
বিজিবি ও বিএসএফ’র যৌথ টহলদারি ব্যবস্থাপনায় বেনাপোল ও শার্শা সীমান্তের ১৬০ কিলোমিটার সীমান্ত এখন প্রায় সুরক্ষিত। অপরাধ প্রবনতা কমে গিয়ে মানুষ হত্যা, চোরাচালান, মাদক, অস্ত্র ও মানব পাচার নেমে এসেছে প্রায় শূন্যের কোটায়। আগে যেখানে এই সীমান্তে মানুষ হত্যা, মাদক, অস্ত্র ও মানব পাচার ছিল নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। প্রতিদিন এই সীমান্ত দিয়ে শতশত নারী-শিশু পাচার হয়ে যেত ভারতে। হাজার হাজার গরু ভারত থেকে পাচার হয়ে আসতো বাংলাদেশে। সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফ’র নিয়মিত যৌথ টহল, সীমান্তে বসবাসরত মানুষের মধ্যে সচেনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ ধরনের অপরাধ প্রবনতা কমতে শুরু করেছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এসব এলাকায় ৮ কিলোমিটার সীমান্ত ক্রাইম ফ্রি-জোন ঘোষণা করে বিজিবি ও বিএসএফ’র যৌথ নজরদারি বৃদ্ধির ফলে সীমান্তে অপরাধ প্রবনতা কমেছে। সরেজমিনে, বেনাপোলের পুটখালী, অগ্রভুলোট, দৌলতপুর ও সাদিপুর সীমান্তে গিয়ে দেখা যায় গরুর খাটাল গুলো প্রায় শূন্য। অনেকেই চোরাচালান পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। পুটখালি গ্রামের হজরত আলী জানান, এই সীমান্তে এখন আর আগের মত চোরাচালান হয় না।
ভারত থেকে গরু আসাও এক প্রকার বন্ধ হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে হয়তো সীমান্ত এলাকার মানুষ কিছুটা আর্থিক ভাবে অভাব অনটনে আছে সত্য কিন্তু এখন আর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র হাতে নিরীহ কোন বাংলাদেশী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় না। বিজিবি এ ধরনের তৎপরতা বৃদ্ধি করায় চোরাচালানীরা সরে পড়েছে অন্যত্র। ক্রাইম ফ্রী-জোনে বসানো হয়েছে অত্যাধুনিক টাওয়ার, সার্ভিলেন্স ডিভাইস ও সিসি ক্যামেরা যা সীমান্ত দিয়ে কোন মানুষ পাচার ও চোরাচালানীর ঘটনা ঘটলেই সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে তাৎক্ষনিক বিজিবি টহল দলের কাছে সংবাদ পৌঁছে যাবে। ফলে ধরা পড়ছে অপরাধীরা।
বিজিবি সুত্র জানায়, ২০১৭ সালে এই সীমান্ত দিয়ে ১শ’ ৫০ কোটি টাকার পণ্য আটক করেছে বিজিবি। এসময় ১৩ কজি সোনা, ৬৮ টি বিভিন্ন ধরনের আগ্নেআস্ত্র ও ২ কোটি ৮ হাজার টাকার মাদক দ্রব্যসহ ১২৪ জন অপরাধীকে আটক করা হয়। ভারতে পাচার কালে ৪৩৩ জন নারী-শিশু ও পুরুষকে উদ্ধার করা হয় পাচারকারীদের কাছ থেকে। অন্যদিকে ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই পর্যন্ত ৫৫ কোটি টাকার মালামাল আটক করা হয়। এর মধ্যে ১৮ কেজি সোনা, ৬১ টি আগ্নয়াস্ত্র ১ কোটি ৭১ লাখ টাকার মাদক দ্রব্য সহ ৮৪ জন অপরাধীকে আটক করা হয়।
এসময় ভারতে পাচারকালে ১০৩ জন নারী-শিশু ও পুরুষকে উদ্ধার করা হয় পাচারকারীদের কাছ থেকে। তুলনামুলক দেখা যায় গত বছরের তুলনায় একই সময়ে চোরাচালানী তৎপরতা কমে গেছে। সীমান্তবর্তী বারোপোতা গ্রামের চোরাকারবারী মিনা আলী জানান, বিজিবি-বিএসএফ’র যৌথ টহল ব্যবস্থার কারণে এখন চোরাচারান পেশা ছেড়ে দিয়ে মুদি দোকানের ব্যবসা করছি। আগের চেয়ে এখন অনেক ভালো আছি পরিবার পরিজন নিয়ে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র যশোর-৪৯ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল আরিফুল হক জানান, বিজিবি-বিএসফ’র যৌথ টহল ব্যবস্থা চালু করায় দু’দেশের মধ্যে চোরাচালান, মাদক, অস্ত্র ও মানব পাচার প্রায় শূণ্যের কোঠায় নেমে এসেছে। সেই সাথে ক্রাইম ফ্রী-জোন ঘোষণা ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করায় সীমান্তে অপরাধ প্রবনতা বন্ধে সফলতা এসেছে।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply