২০ এপ্রিল ২০২৪ / ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ৮:৩৩/ শনিবার
এপ্রিল ২০, ২০২৪ ৮:৩৩ পূর্বাহ্ণ

ইবাদত কখনো আনুষ্ঠানিক বা লোক দেখানো হতে পারেনা

     

জিল্লুর রহমান
রোজা এবং তারাবীহ দুইটাই একে অপরের পরিপূরক সিয়াম সাধনার অন্যতম হলো রোজা আর নামাজ কিন্ত আমাদের মধ্যে এই তারাবী নানাভাবে সম্পূর্ণ করার এক প্রতিযোগিতা লক্ষ্যণীয় যা পৃথীবির অন্য কোথাও দেখা যায়না যেমন আমরা কোরান খতমে তারাবী আদায়ের প্রতিযোগিতা করি কোথাও ৭ দিনে কোথাও ১০ দিনে কোথাও ১৪ দিনে কোথাও ২৮ দিনে কোন কোন জায়গায় রাত ১০ টা থেকে ২ টা অবধিও তারাবী হয় কিন্ত একজন রোজাদার প্রতি রাকাত নামাজে ১৫/২০ মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে আসলেই কতক্ষন আল্লার ধ্যানে মশগুল থাকেন তাছাড়া কোরানের আয়াত যিনি পড়েন তিনি এতই দ্রুত পড়েন যা একজন নামাজীর পক্ষে সবসময় মিলানো সম্ভব হয়না আবার যিনি পড়েন তাহার ভুল হচ্ছে কিনা তাও সবসময় খোজা হয়না এমতাবস্হায় এত দীর্ঘ্য সময়ে খতম তারাবী কতটুকু উত্তম তা আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে বিশ্লেষন অসম্ভব কারন আমি যাই বলিনা কেন তার একটা ব্যাথা নিজের মত করে আমরা সবাই দ্বার করাতে পারি কিন্ত আমরা যদি নবী রাসুলদের সময়ের তারাবী এবং সমাজ রাষ্ট ও পারিপাশ্বিকতার কথা ভাবী তবে সবকিছুতে এত জটিল না করে একটা নির্দিষ্ট নিয়মে তারাবী সহ অন্য সকল ইবাদত স্বাচ্ছন্দে করতে পারি । এখন দেখা যায় প্রতিযোগিতার খাতিরে গ্রামে পাড়া মহল্লায় খতম তারাবী পড়ানো হয় আবার অনেকেই খতমে নামাজ পড়ানো হাফেজ সাহেবের বেতনটাও ঠিকমত দিতে পারেননা আবার অনেকে প্রতিযোগিতা করে টাকা উঠিয়ে একটু বিলাসী ইবাদতের জন্য চিন্তা করেন । ইবাদত বিলাসীতা নয় এটা নৈমত্তিক কর্মসুচির অংশ যা ডাকঢোল না বাজিয়ে আদবের সাথে পালন আবশ্যক মাত্র । আমাদের মধ্যে অনেকে লাইলাতুল বরাত এবং লাইলাতুল কদরের নামাজও ফরজ নামাজের ন্যায় ইমামের পেছনে পড়ি যা কতটুকু সহি আমি বুজিনা তবে নফল ইবাদত যে যার মত যত খুশি করাটা উত্তম এইটুকু বুঝি । ইসলাম অত্যন্ত সহজ এবং শান্তির ধর্ম এখানে নিজস্ব মনগড়া মতবাদ দিয়ে অন্যকে বোকা বানানো অন্যায় আর অন্যায়কারীদের ব্যাপারে বারবার সতর্ক করেছেন তার পরেও আমাদের মধ্যে গোত্র উপগোত্রে ধর্মীয় অনুশাসন নিয়ে নানাজনের নানা ফতোয়ায় অনেকের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পরে অথচ ইসলাম ধর্মে মনগড়া মতবাদের ব্যাপারে সর্তক করা হয়েছে নানা ভাবেই । নামাজ রোজা হজ্ব জাকাত এইসবে আল্লাহর বিধান মোতাবেক হওয়া আবশ্যিক যেখানে সামর্থ্যের কথা বলা হয়েছে । ঘুষের টাকা নিয়ে বা নামের উদ্দ্যেশ্যে হজ্ব বা যাকাত বা দান করা কি ইসলাম সম্মতি দেন? তেমনি অসুস্হতার ক্ষেত্রে নামাজেরও সংক্ষিপ্ত নিয়ম আছে আর ঘুষের টাকায় বা অন্যায়ভাবে অন্যের উপর ভর করা আয়োজনে ৭/১০ দিনে কোরান খতম করে হুজুরের বড় বকশিস এবং মসজিদে দান করে দিলেই যদি ঘুষ , সুদ এবং অবৈদ টাকা জায়েজ হয়ে যেত তবে আল্লাহ রোজ কেয়ামতে শাস্তির ব্যাপারে সতর্ক করতেন না । সবকিছুর ঊর্দ্ধে মানবিক জ্ঞানে একজন আদর্শিক মানুষ হওয়া ইবাদতের পূর্বশর্ত যা আমরা কখনো চেষ্টা করিনা যেমনিভাবে ইবাদতকে আনুষ্টানিকতায় পালন করি । যেমন আমরা হজ্বে যাই আর তাওয়াফ অবস্হায় নিজের সেলফি উঠিয়ে স্যোসাল মিডিয়ায় জানায় যে আমরা হজ্বে তেমনি মসজিদে প্রথম কাতারে একদিন বসে কিছু লোক দেখানো টাকা পয়সা দিয়ে পরের দিন আর মসজিদের পাশেও পারি দিইনি যা ইবাদতের মুল স্তম্ভের পরিপহ্ন বটে  এবং সাধনার অন্যতম শর্ত যা আমরা কতজনইবা করি আর এক রাকাত নামাজে ১৫/২০ মিনিট দাড়িয়ে থেকে কতক্ষন আমরা একাগ্রতা রাখতে পারি আর দুনিয়াবী চিন্তায় আসলে তো ইবাদতের শর্ত পুরুন হয়না । আমরা নিজের অভাবী পরিপাশ্বিক বন্ধু আত্মীয় স্বজন প্রতিবেশীর জন্য বরাদ্ধ না রেখে বিলাসী ইবাদতে অর্থ ব্যায় করলে তাও কি ইবাদতের শর্ত পুরুন হয়? বিলাসী ইবাদত বলতে চেয়ার টেবিল নিয়ে এসি লাগিয়ে আশেপাশের ২/৪ জনকে সরিয়ে নিজের জন্য জায়গা নিয়ে মসজিদে মসজিদে ভাল ডোনেশান দিয়ে বিশাল অংকের ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা কি বিলাসীতার মধ্যে পরেনা তবে কেউ নিজের পারিপাশ্বিক সমস্ত দায়িত্ব এবং হক আদায়ের পরে অবশিষ্ট হালাল টাকায় যদি কিছু করেন তা নিচ্ছয় বিলাসিতা নয় কিন্ত হালাল টাকায় আর কতটুকু হয় বা কতইবা দান করা যায় তাতো একটু পর্যালোচনা করলে স্পষ্ট প্রতিয়মান হয় । যাই হোক আমার এই লিখায় ধর্মীয় অনুশাসন মানার ক্ষেত্রে আল্লাহ্ব এবং তাহার রসুলের বিধান অনুযায়ী করা এবং নানা মনগড়া মতবাদকে সতর্কতার সাথে পালনে সবাইকে সচেতন হওয়ার আবশ্যকীয় বুজাতে কিছু প্রসঙ্গ ঠেনেছি যা কেউ ব্যাক্তিগতভাবে না নিলে খুশি হব। ইসলাম সবচেয়ে শান্তি , সহজ এবং সৌহার্দের ধর্ম বিবেদের নয় তাই যেকারো মতবাদকে মানার আগে নিজের বিবেক এবং আমল ও সামর্থ্যকেও প্রধান্য দেওয়া সকলের উচিত । সবাইকে পবিত্র রমজানের শুভেচ্ছা ।।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply