২৯ মার্চ ২০২৪ / ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / ভোর ৫:০৩/ শুক্রবার
মার্চ ২৯, ২০২৪ ৫:০৩ পূর্বাহ্ণ

মৌলভীবাজার ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের মে দিবস পালন

     

 

মজুরি দাসত্ব উচ্ছেদ করে শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করার দৃপ্ত শপথ আর অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা শাখা আন্তজাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস “মহান মে দিবস” পালন করে। ১ মে সকাল থেকে গণসঙ্গীত, লালপতাকা র‌্যালী ও আলোচনা সভা মধ্যদিয়ে মহান মে দিবস পালিত হয়। দিনব্যাপী কর্মসূচির ১ম পর্বে মৌলভীবাজার পৌর মিলনায়তনে ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সহযোগী সংগঠন ধ্রবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির পরিবেশনায় গণসঙ্গীত ও স্বরচিত কবিতা আবৃতি পাঠ করা হয়। এরপর বেলা ১১ টার সময় বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের নেতৃত্বে শত শত শ্রমিক লাল পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে বর্ণাঢ্য র‌্যালী পৌর মিলনায়তন হতে শুরু হয়ে চৌমুহনা, কোর্ট রোড প্রদক্ষিণ করে পুণরায় পৌর মিলনায়তনে এসে শেষ হয়। র‌্যালীতে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের নেতৃত্বে মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ ২৩০৫, মৌলভীবাজার জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ ২৪৫৩, চা-শ্রমিক সংঘ, স’মিল শ্রমিক সংঘসহ বিভিন্ন বেসিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করে। র‌্যালী শেষে পৌর মিলনায়তনে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা শাখার সভাপতি মোঃ নুরুল মোহাইমীনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির অন্যতম নেতা প্রবীণ রাজনীতিবিদ আফজাল চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি মৌলভীবাজার জেলা কমিটির আহবায়ক ডা. অবনী শর্ম্মা, ধ্রবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সম্পাদক অমলেশ শর্ম্মা। ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাসের পরিচালনায় আলোচনা সভায় মহান মে দিবসের ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ ২৩০৫ এর সভাপতি মোঃ মোস্তফা কামাল, মৌলভীবাজার জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ চট্টঃ ২৪৫৩ এর সভাপতি সোহেল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক দোলাল আহমেদ, চা-শ্রমিক সংঘের নেতা দিবা বৈদ্য, স’মিল শ্রমিক সংঘের জেলা সভাপতি মোঃ আরজান আলী, শ্রীমঙ্গল উপজেলা স’মিল শ্রমিক সংঘ রেজিঃ নং চট্টঃ ২৮৬৪ এর সহ-সভাপতি আব্দুল করিম, স’মিল শ্রমিক সংঘ কমলগঞ্জ উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোস্তাক মিয়া ও সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি মোঃ ছালিক মিয়া, চা-শ্রমিকনেতা রাজেশ নুনিয়া ও নারায়ন গোড়াইত, রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের কালেঙ্গা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি শাহজাহান আলী ও মোস্তফাপুর আঞ্চলিক কমিটির নেতা শাহজাহান শাহ। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন ১৮৮৬ সালে রক্তঝরা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শ্রমিক শ্রেণি সামাজিক স্বীকৃতি এবং বিশ্বব্যাপী ৮ ঘন্টা শ্রম, ৮ ঘন্টা বিশ্রাম ও ৮ ঘন্টা বিনোদনের দাবি প্রতিষ্ঠিত করে। ৮ ঘন্টা শ্রম দিবস এবং মহান মে দিবসে ছুটি কারো দান নয় বরং শ্রমিক শ্রেণীর রক্তস্নাত পথে অজিত অধিকার। বক্তারা শ্রমিক শ্রেণীর মহান শিক্ষা গুরু কমরেড এঙ্গেলেসের বক্তব্য উদৃত করে বলেন মে দিবসের সংগ্রাম শুধু মাত্র ৮ ঘন্টা শ্রম দিবসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, মে দিবসের সংগ্রাম শ্রমিক শ্রেণির মজুরি দাসত্ব ব্যবস্থার উচ্ছেদের অবিচ্ছেদ্য সংগ্রমা। তাই আজকে প্রতিক্রিয়াশীল মহলসহ বিভিন্ন মহলের ‘মালিক-শ্রমিক ভাই ভাই’ শ্লোগান তুলে ধরে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মে দিবস পালনের বিপরীতে শ্রমিকশ্রেণিকে মে দিবসের বিপ্লবী চেনতাকে ধারণ করে মজুরি দাসত্ব উচ্ছেদ করে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার দৃপ্ত শপথ নিয়ে অগ্রসর হতে হবে।

সভা থেকে বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণভাবে শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য আইনী সুরক্ষা দিয়ে ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ঘোষণা, সর্বক্ষেত্রে ৮ ঘন্টা কাজ, পরিচয়পত্র, নিয়োগপত্র প্রদানসহ শ্রমআইনে অর্জিত অধিকার কার্যকর, আইএলও কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ অনুযায়ী অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার ও গণতান্ত্রিক শ্রমআইন প্রণয়ন, কর্মক্ষেত্রে সার্বিক নিরাপত্তা প্রদান চা-শ্রমিকের ন্যায্য মজুরিসহ ভূমির অধিকার প্রদান, সমকাজে সমমজুরি, শ্রমজীবী জনগণের জন্য রেশিনিং ব্যবস্থা চালু; হোটেল, প্রেস, স’মিলসহ বিভিন্ন সেক্টরে সরকার ঘোষিত নি¤œতম কার্যকর করার দাবি জানানো হয় ।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply