১৮ এপ্রিল ২০২৪ / ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ১১:০৩/ বৃহস্পতিবার
এপ্রিল ১৮, ২০২৪ ১১:০৩ অপরাহ্ণ

ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের স্বাক্ষরসীল জাল করে টাকা আদায়ের অভিযোগ

     

আল-হেলাল,সুনামগঞ্জ থেকে

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের উত্তর সুরিয়ারপাড় গ্রামের ইরশাদ আলীর পুত্র একুশে টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি সুনামগঞ্জ শহরের বর্তমান পশ্চিম হাজিপাড়ার বাসিন্দা আব্দুস সালাম ওরফে সন্ত্রাসী ঘাড়ব্যাকা সালাম এর বিরুদ্ধে এবার আমলগ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট,জগন্নাথপুর জোন এর বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট ও এসআই জয়নাল আবেদীনের স্বাক্ষর সীল জাল করে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে প্রকাশ,উক্ত সালাম মুহুরী ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে জগন্নাথপুর থানার মামলা নং ২১ (জিআর ২১৩/২০০৯) তাং ১/১২/২০০৯ইং এর আসামী পক্ষের মামলার তদবীরে লিপ্ত হয়। উক্ত মামলার আসামী সিরাজ খা পিতামৃত দরাসত খা,সাং পাইকপাড়া,থানা জগন্নাথপুর,জেলা সুনামগঞ্জ গংদের কাছ থেকে মামলায় অব্যাহতি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজ ব্যাংক হিসাব ও নগদ গ্রহনের মাধ্যমে প্রায় ১,০০,০০০ (এক লক্ষ) টাকা গ্রহন করে সে। নগদ ৫০ হাজার টাকা গ্রহনের পাশাপাশি উক্ত সালাম, ঐ মামলার আসামী সিরাজ খার বেয়াই হাজী রিয়াজুল হক এর উত্তরা ব্যাংক সিলেট শাখার এসবি হিসাব নং ৮০৯৬৫৫৫ তাং ৪/৪/২০১০ইং হতে জগন্নাথপুর উপজেলার কুবাজপুর গ্রামের তাজুল ইসলামের (সালামের ফুফা) মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকার ব্যাংক চেকও গ্রহন করে। পরে জগন্নাথপুর উপজেলার একটি ব্যাংক একাউন্ট নাম্বারের মাধ্যমে টাকা জমা করে সালাম ঘুষের টাকা নগদায়ন করে। কিন্তু দালাল সালামের তদবীর উপেক্ষা করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোস্তাফিজুর রহমান বিজ্ঞ আদালতে আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র নং ২৪ ধারা ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/১১৪/৩৪ দ:বি: দাখিল করেন। ঐ সময় মামলায় আসামীদের অব্যাহতি পাইয়ে দিতে ব্যর্থ হওয়ায় আসামীপক্ষ সালামের বিরুদ্ধে এসআই জয়নাল আবেদীনের নামে নেয়া ঘুষের টাকা ফেরত চেয়ে সুরিয়ারপাড় গ্রামে সালিশ আহবাণ করেন। ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে ইউপি সদস্য আওয়ামীলীগ নেতা আবুবক্কর সাগরের সভাপতিত্বে সুরিয়ারপাড় গ্রামে অনুষ্ঠিত সালিশে সালামের প্রতারণার বিষয়টি প্রমাণিত হলে তার পক্ষে তার পিতা ইরশাদ আলী মামলার আসামী পক্ষকে নগদ ২৫,০০০ (পচিশ হাজার) টাকা পরিশোধ করে বাকী টাকা ২ মাসের মধ্যে পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দেন। ঐসময় সালিশে সালামের প্রতারণার একটি লিখিত ডকুমেন্ট প্রদান করে তার চাচাতো ভাই ফজলুর রহমান। উক্ত ডকুমেন্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়,গত ১৩/০৬/২০১০ইং তারিখে ৫১২ নং স্মারকে জগন্নাথপুর আদালতের সিএসআই এর মাধ্যমে সিরাজ খা পিতামৃত দরাসত খা,সাং পাইকপাড়া,থানা জগন্নাথপুর,জেলা সুনামগঞ্জ নামের আসামীকে অব্যাহতি দানের জন্য এসআই জয়নাল আবেদীন বিজ্ঞ আদালতে আবেদন করেন। সালিসে প্রমাণিত হয়,কথিত আবেদনে এসআই জয়নাল আবেদীনের নাম স্বাক্ষর জালিয়াতি করেছে প্রতারক সালাম। এমনকি কথিত অব্যাহতির আবেদনে দেখিলাম শব্দটির নীচে এবং আমলগ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট,জগন্নাথপুর জোন,সুনামগঞ্জ,তাং ১৫/৬/১০ইং এর উপরে উল্লেখিত স্বাক্ষর সংশ্লিষ্ট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবের নয়। উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসআই জয়নাল আবেদীনের নাম স্বাক্ষর জাল করে এবং আদালতের বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট এর সীল স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভূয়া অব্যাহতির আবেদন প্রস্তুত ও সরবরাহ করে আসামী পক্ষের লোকদের পাশাপাশি বাংলাদেশ পুলিশ প্রশাসনসহ বিজ্ঞ আদালতকে প্রতারিত করিয়াছে সালাম। যা তৎকালীন এসআই (বর্তমানে অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) কোট চাঁদপুর মডেল থানা,ঝিনাইদহ জেলা) মোঃ জয়নাল আবেদীন অস্বীকার করেন। তিনি বলেন,আমি ঐ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নই। তাই এ মামলায় আসামী অব্যাহতির জন্য আবেদন করার প্রশ্নই আসেনা। কথিত অব্যাহতির আবেদনে আমার নামে যে স্বাক্ষর দেয়া হয়েছে তা আমার নয়। এটি প্রতারক সালামের কাজ। এসআই মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,আমি যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছি সেই একই বিষয়ে অব্যাহতির আবেদন বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করার প্রশ্নই আসেনা। ওসি তদন্ত জয়নাল আবেদীন ও ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন বিজ্ঞ আদালত আমাদেরকে সমন দিলে আমরা প্রমাণ করে দেবো এটি প্রতারক আব্দুস সালামের কাজ। এছাড়া সালামকে ধরে এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এবং তার স্বাক্ষর এক্সপার্ট দ্বারা পরীক্ষা নিরীক্ষা করলে প্রমাণিত হবে কথিত আসামী অব্যাহতির আবেদনটিতে বর্ণিত স্বাক্ষর এসআই জয়নাল আবেদীনের নয় বরং এটি আব্দুস সালামের পরিকল্পিত প্রতারনার কাজ। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাবেক ইউপি সদস্য আবুবক্কর সাগর বলেন,আব্দুস সালাম প্রতারনার অসদুদ্দেশ্যে প্রবাসী সিরাজ খা ও তার পক্ষের লোকজনের কাছ থেকে ব্যাংক চেকের মাধ্যমে টাকা গ্রহন করার পাশাপাশি বিজ্ঞ আদালতের মাননীয় ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয়ের সীল স্বাক্ষর ও এস আই জয়নাল আবেদীনের জাল স্বাক্ষর দিয়ে আসামী অব্যাহতির আবেদন প্রস্তুত করে তার প্রস্তুতকৃত জাল আসামী অব্যাহতির আবেদন সালিশে হস্তান্তর করে। আমি সালিশে তার জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণ করে তার পিতা ইরশাদ আলীর কাছ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ প্রতারিতদেরকে ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করে দেয়ায় সে প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে হয়রানী করা অব্যাহত রেখেছে। অথচ সে ও তার পিতা সালিশের রায় অনুযায়ী বাকী টাকা এখন পর্যন্ত প্রতারিতদেরকে ফেরত দেয়নি।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply