১৮ এপ্রিল ২০২৪ / ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / দুপুর ২:২২/ বৃহস্পতিবার
এপ্রিল ১৮, ২০২৪ ২:২২ অপরাহ্ণ

‘পহেলা বৈশাখ পালন করলে মুসলমানিত্ব যায় না’ ইনু

     

যা ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত তা প্রত্যাহার, পহেলা বৈশাখের নামে মুখোশ মিছিল বন্ধ বিকাল পাঁচটার মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা দেয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ কমিশনার মহোদয়কে ধন্যবাদসহ
শাহরিয়ার কবিরের ফাঁসি, আসন্ন শবে মেরাজে জাতীয় ছুটি, ‘কিশোর-কিশোরী ক্লাব’ স্থাপন বন্ধ এবং বিভিন্ন অনৈসলামিক কর্মকাণ্ড এবং ইহুদীদের সাথে বন্ধুত্বে জড়িয়ে পড়ায় সউদী আরবের প্রতি ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন।
সন্ত্রাসবাদ, মৌলবাদ, ধর্মব্যবসায়ীমুক্ত উন্নয়নের জোয়ারযুক্ত দেশ গড়ার জন্য আলিম সমাজ ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের নৌকায় ভোট চাওয়ার ও দেয়ার আহ্বান।
                                                                       বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ
আখেরী রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে মানহানীকর বক্তব্য লেখা, প্রকাশনা-প্রচার এবং বাল্যবিবাহ বিরোধীদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, পহেলা বৈশাখ নিয়ে তথ্যমন্ত্রী ইনুর কুফরী বক্তব্য প্রত্যাহার, আসন্ন শবে মেরাজে জাতীয় ছুটি, সারাদেশে অনৈতিকতা বিস্তারের ভয়াবহ ফাঁদ ‘কিশোর-কিশোরী ক্লাব’ নির্মাণের পরিকল্পনা বন্ধ, মসজিদ নির্মাণের বিরুদ্ধে বলায় শাহরিয়ার কবিরের ফাঁসি, বিভিন্ন অনৈসলামিক কর্মকাণ্ড এবং ইহুদীদের সাথে বন্ধুত্বে জড়িয়ে পড়ায় সউদী আরবের প্রতি ব্যবস্থা নেয়া, শিক্ষানীতি ২০১০ বাতিল ও বিতর্কিত শিক্ষা আইন পাশ না করা এবং ঢাকা শহর বিকেন্দ্রীকরণসহ ১৩ দফা দাবীতে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ১৩টি সংগঠন আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন করেছে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিকদের মুক্তমনা ব্লগ, ইষ্টিশন ব্লগ, নাস্তিক্য ব্লগ, ধর্মকারী ব্লগগুলো এদেশে আবারো তীব্র ইসলাম বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। নাস্তিকদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। অথচ পুলিশ, র‌্যাব, বিটিআরসি তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা দিচ্ছেনা। এর মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে ধর্মপ্রাণদের ক্ষেপিয়ে দেয়ার তৎপরতা চালাচ্ছে। পুলিশ, র‌্যাব, বিটিআরসি সবাই নীরব ভূমিকা পালন করছে। আখেরী রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিন্দু থেকে বিন্দুতম অবমাননা করলে বা মানহানীকর বক্তব্য, লেখা, প্রকাশ ও প্রচার করলে মৃত্যুদণ্ড বিধান করতে হবে।
বক্তারা বলেন, এনজিও, নারীবাদীরা বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে বললেও বছরে দেশে প্রায় ৫ লক্ষ ভ্রুণ শিশু হত্যা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গুতম্যাকার ইনস্টিটিউটের জরিপ মতে, ২০১৪ সালে বাংলাদেশে ১১ লাখ ৯৪ হাজার অবৈধ গর্ভপাত হয়েছে। এর অধিকাংশই হচ্ছে ১৮ বছরের নিচের কুমারী মাতাদের অবৈধ ফসল। এনজিও, নারীবাদী এবং সরকারে ঘাপটি মেরে থাকা মহল অবৈধভাবে কুমারী মাতা হতে সমর্থন করছে তাই এর বিরুদ্ধে কিছু বলছে না। এমনকি আইন প্রণয়নও করছে না। কিন্তু বৈধ বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। বাল্যবিবাহের বিরোধিতাকারীদের মৃত্যুদ- দিতে হবে। বাল্যবিবাহ বিরোধী ইসলাম বিদ্বেষী এনজিওগুলো নিষিদ্ধ করতে হবে।
বক্তারা বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ ও চৈত্র সংক্রান্তির সাথে ইসলামের কোন বিরোধ নেই। এগুলো পালনে মুসলমানিত্ব যায় না।’ তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এই বক্তব্য প্রত্যাহার না করা মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত। বক্তারা বলেন, ইনু বামপন্থী। এদেশের গণতন্ত্র নস্যাৎ করে সমাজতন্ত্র কায়েমই তার মূল উদ্দেশ্য। ইনু তো জানেনা যে, ইসলামে কোন ধরণের নববর্ষ পালন জায়েয নাই। নববর্ষ পালনের উৎসব বিধর্মীদের থেকে। নুরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হিজরতের পর পবিত্র মদীনা শরীফ গিয়ে ঐ এলাকাবাসীর দুটি উৎসব বন্ধ করেছিলেন। একটি হচ্ছে, বছরের প্রথম দিন উদযাপন বা নওরোজ; অন্যটির নাম ছিলো ‘মিহিরজান’। এ উৎসব দুটির বিপরীতে চালু হয় মুসলমানদের দুই ঈদ। (তাফসিরসমূহ) মূলত: নওরোজ বা বছরের প্রথম দিন পালন করার রীতি ইসলামে নেই, এটা পার্সী মজুসীদের (অগ্নিউপাসক) অুনকরণ। এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীস শরীফে এসেছে: “যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করে সে তাদের দলভুক্ত।” তাই যে কোন নওরোজ সেটা থার্টি ফাস্ট নাইট হোক, পহেলা নববর্ষ হোক কিংবা পহেলা মুহররম হোক, বিজাতীয় রীতি হিসেবে প্রতেকটি ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ সম্পর্কে – ইমাম ফখরুদ্দীন উসমান বিন আলী আয যাইলায়ী বলেন, “নওরোজ ও মেলার নামে কিছু দেয়া নাজায়েয। এ দুই দিনের নামে প্রদত্ত হাদিয়া হারাম; বরঞ্চ কুফর”। (গ্রন্থ তাবইনুল হাকায়েক : ৬/২২৮)
ইমাম হাফস কবীর রহমতুল্লাহি বলেন, “নওরোজ বা বছরের প্রথম দিন উপলক্ষে যদি কেউ একটা ডিমও দান করে, তবে তার ৫০ বৎসরের আমল থাকলে তা বরবাদ হয়ে যাবে”
তাই পহেলা বৈশাখ পালন করলে মুসলমানিত্ব যায়না বামপন্থী ইনুর এ বক্তব্য মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত। অপরদিকে ইনু বলেছে,  চৈত্র সংক্রান্তি পালন করলেও মুসলমানিত্ব যায়না। তাহলে মুসলমানদের পূজা করিয়ে হিন্দু বানাতে চায়। কারণ পহেলা বৈশাখে মুসলমানদের কোন উৎসব নেই বরং হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন ধরনের পূজা এবং উৎসব রয়েছে। এগুলো হলো-১) হিন্দুদের ঘটপূজা, ২) হিন্দুদের গণেশ পূজা, ৩) হিন্দুদের সিদ্ধেশ্বরী পূজা, ৫) হিন্দুদের চৈত্রসংক্রান্তি পূজা-অর্চনা, ৬) মারমাদের সাংগ্রাই ও পানি উৎসব, ৭) চাকমাদের বিজু উৎসব (ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমাদের পূজা উৎসবগুলোর সম্মিলিত নাম বৈসাবি), ৮) হিন্দু ও বৌদ্ধদের উল্কিপূজা, ৯) মজুসি তথা অগ্নি পূজকদের নওরোজ, ১০) হিন্দুদের বউমেলা, ১১) হিন্দুদের মঙ্গলযাত্রা, ১২) হিন্দুদের সূর্যপূজা সহ বিধর্মীদের বিভিন্ন পালনীয় দিবস রয়েছে। (উইকিপিডিয়া)
বক্তারা আরো বলেন, মুসলিম জনগণকে ইসলামহীন করার লক্ষ্যে এ অপতৎপরতা চালানো হচ্ছে। যেমন মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে, উলুধ্বনী দিয়ে, শাখা বাজিয়ে, মঙ্গল কলস সাজিয়ে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। এছাড়া যেসব পশু-পাখী নিয়ে অমঙ্গল শোভাযাত্রা করা হয়, তাও এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্মীয় বিশ্বাস ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্যের পরিপন্থী। কেননা সংখ্যালঘু একটি জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় বিশ্বাস মোতাবেক পেঁচা মঙ্গলের প্রতীক ও লক্ষীর বাহন, ইঁদুর গণেশের বাহন, হনুমান রামের বাহন, হাঁস স্বরসতীর বাহন, সিংহ দূর্গার বাহন, গাভী রামের সহযাত্রী, সূর্য দেবতার প্রতীক ও ময়ূর কার্তিকের বাহন।
আর পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, নুরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন “আমি যমীনে তাশরীফ নিয়েছি মূর্তি এবং বাদ্যযন্ত্র ধ্বংস করার জন্য।” পহেলা বৈশাখের নামে মুখোশ মিছিল বন্ধে সরকারের নির্দেশনা এ হাদীছ শরীফ আমলে সহায়ক। এজন্য বক্তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
তাই পহেলা বৈশাখের সাম্প্রদায়িক উৎসবকে অসাম্প্রদায়িক বানানোর চেষ্ঠা করা মুর্খতা বৈ কিছু নয়। ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ নামের সাম্প্রদায়িক বৈষম্য মেনে নেয়া যায় না। কারণ পহেলা বৈশাখের হিন্দু ও বৌদ্ধদের ধর্মীয় উৎসবকে অসাম্প্রদায়িক নাম দিয়ে মুসলমানদের পূজায় অংশগ্রহণ করতে বলা হলেও হিন্দুদেরকে মুসলমানদের শবে বরাত, শবে মিরাজ বা ঈদে মীলাদুন্নবী পালন করতে বলা হয়না। এটা মুসলমানদের বিরুদ্ধে চরম সাম্প্রদায়িক বৈষম্য।
বক্তারা বলেন, মুঘল সম্রাট আকবর খাজনা আদাযে সুষ্ঠুতা প্রণযনের লক্ষ্যে ৫ই নভেম্বর, ১৫৫৬ ঈসায়ীতে হিজরী সনের পরিবর্তে ফসলী সন প্রবর্তন করে। পরবর্তীতে ১৫৮৪ ঈসায়ীর ১০ই মার্চ বা ১১ই মার্চ থেকে বাংলা সন বা বঙ্গাব্দ হিসেবে গণনা শুরু হয়। তাহলে ঐতিহাসিকভাবেই পহেলা বৈশাখ হাজার বছরের ঐতিহ্য এ কথা ভুল। আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন শুরু হয। তখন প্রত্যেককে চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সকল খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে হত। বাংলা সন প্রবর্তনের মুল হোতা সম্রাট আকবর একজন মোঙ্গলীয়ান। এর প্রবর্তক বাদশাহ আকবর এদেশীয় বাঙালী ছিলো না বা বাংলাভাষীও ছিলো না এমনকি বাংলাদেশীও ছিলো না । সে ছিলো সাম্রাজ্যবাদী ও মোগল বংশোদ্ভূত।
বক্তারা বলেন, পহেলা বৈশাখের উৎসব মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। পহেলা বৈশাখ মুসলমানদের ঈদ নয়। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ঈদ পবিত্র ঈদে মীলাুদন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। কাজেই যেখানে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সেখানে মুসলমানদের পহেলা বৈশাখের বোনাস বাদ দিয়ে মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ উপলক্ষ্যে বোনাস দেয়া উচিত। বক্তারা আরো বলেন, “পহেলা বৈশাখের নামে চারুকলার গাঁজাখোর মিডিয়া ও  পূজিবাদী বেনিয়াগোষ্ঠি বাণিজ্য করছে। ওদের শোষণ থেকে জনগনকে বাঁচাতে হবে। পান্তা ইলিশ বন্ধ করে জাতীয় মাছ ইলিশ রক্ষা করতে হবে।” তারা বলেন, “ইসলামের নামে সন্ত্রাসবাদ, সন্ত্রাসী হামলা এবং তথাকথিত পহেলা বৈশাখ সংস্কৃতি দুটোই অনৈসলামী ও হারাম। তারা আরো বলেন, “সংগ্রাম, নয়াদিগন্ত গং এবং ধর্মব্যবসায়ী রাজনৈতিক দল তথা জামাত শিবিরের কথিত “বড় নেয়ামতের দিন”। এদিনকে পূঁজি করে তারা রাজনীতি করে। তাই এটি পালন বন্ধ করতে হবে। তবে পহেলা বৈশাখে সন্ত্রাসী হামলা কখনোই ইসলামে জায়েয নেই।
বক্তারা বলেন, বছরের একটি ফজীলতপূর্ণ রাত হচ্ছে লাইলাতুন মিন নিসাফি শা’বান তথা লাইলাতুল বরাত বা শবে বরাত। শা’বান মাসের ১৪তম তারিখের দিবাগত রাত হচ্ছে- লাইলাতুল বারাআত বা শবে বারাআত। লাইলাতুল বারাআত হচ্ছে-গুনাহ থেকে মুক্তি লাভের রাত্রি। সরকারের উচিত শবে বরাত উপলক্ষে কমপক্ষে ৩ দিন বাধ্যতামূলক ছুটি ঘোষণা করা। পবিত্র শবে মিরাজ শরীফ উপলক্ষে ১দিনের ছুটি ঘোষণা করা। টিভি চ্যানেলে পবিত্র শবে বরাত বিরোধীদের গ্রেফতার করা।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের দালাল ঘাদানিকের সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেছে, “সরকারের টাকায় দেশে মাদ্রাসা হতে পারে না। এটা সংবিধানেও নেই, ইসলামেও নেই।” অথচ সরকার বর্তমানে হিন্দুদেরকে মুসলমানদের চেয়েও বেশী অগ্রাধিকার দিচ্ছে। সরকারী টাকায় হিন্দুদের মন্দির নির্মাণ সেটা বৈধ হয় কি করে? সরকারী টাকায় পূজায় ৩০ হাজার মন্ডপে মন্ডপ প্রতি ৫০০ কেজি চাল বৈধ হয় কি করে? বাজেটে মসজিদে-মাদরাসায় বরাদ্দ না করে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের বাজেটে হিন্দুদের জন্য অতিরিক্ত ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ বৈধ হয় কি করে। আবার অর্থমন্ত্রীর সাম্পদায়িক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী বাজেটে হিন্দুদের জন্য অতিরিক্ত ১০০ কোটি বরােেদ্দর ঘোষণা দেয়া বৈধ হয় কি করে? মুসলমানদের জমি ঢাকেশ্বরী মন্দিরের জন্য বিনামূল্যে একোয়ার করা বৈধ হয় কি করে? মসজিদের জন্য টাকা বরাদ্দ অসাংবিধানিক হলে মন্দির, মঠ, গীর্জার জন্য টাকা দেয়া-নেয়া বৈধ কোন সংবিধানে আছে? এছাড়া ভারতে মুসলমানরা ৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের শত্রু সম্পত্তি ফেরত না পেলেও বাংলাদেশে তারা ৬ লাখ একর শত্রু সম্পত্তি বা অর্পিত সম্পত্তি ফেরত পাচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসন সব জায়গায় হিন্দুদের আধিপত্য। সুতরাং মুসলমানদের অধিকার ক্ষুন্ন হলেও তার বিরুদ্ধে না বলে, সরকারী টাকায় মন্দির, মঠ, গীর্জা নির্মাণের বিরুদ্ধে না বলে মুসলমানদের অধিকারের বিরুদ্ধে এবং মসজিদ নির্মাণের বিরুদ্ধে বলায় প্রতীয়মাণ হয় শাহরিয়ার কবির ওরফে মুরগী কবির উগ্র হিন্দু মৌলবাদীদের কৃত দালাল। (বেগম মোস্তারী শফি লিখিত ‘জাহানারা ইমামের স্মৃতির উদ্দেশে লেখা চিঠি’)
বক্তারা বলেন, শাহরিয়ার কবির’রা মূলত মৌলবাদী হিন্দুদের টাকায় গরমে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে উস্কানী দিচ্ছে। তাই মসজিদ নির্মাণের বিরুদ্ধে বলায় শাহরিয়ার কবিরকে ফাঁসিতে ঝুলাতে হবে। এসব সাম্প্রদায়িক উস্কানী মূলে রয়েছে, দেশ বিরোধী ও মুসলিম বিদ্বেষী সাম্প্রদায়িক সংগঠন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান এক্য পরিষদ ও রানা দাশরা। আবার এই সাম্প্রদায়িক লোকটি রয়েছে, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালে। কোন সরকারী পদে এরকম সাম্প্রদায়িক লোক থাকতে পারেনা। তাকেও বহিস্কার করতে হবে।
আসন্ন রমাদ্বান শরীফে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখতে হবে, ঈদের ছুটি ১০ দিন দিতে হবে। এই মাসে খেলাধূলা বন্ধ রাখতে হবে, দ্রব্যমূল্য হ্রাস করতে হবে, টিভি চ্যানেলে অশ্লীল অশালীন নাচ-গান বন্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশ পতাকা বিধিমালা ১৯৭২ অনুযায়ী, বিদেশী পতাকা ওড়ানো নিষিদ্ধ ও দন্ডনীয় অপরাধ। বিদেশী পতাকা ওড়ানো শুধু নিষিদ্ধই করা হয়নি বরং ২০১০ সালের সংশোধিত আইনে এই বিধান লংঙ্ঘন করলে ২ বছর পর্যন্ত শাস্তি এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ডে বিধান রয়েছে। তারপরও বিদেশী পতাকা উড়ানো বন্ধে সরকারীভাবে কোন ব্যবস্থা হচ্ছেনা। অবিলম্বে আসন্ন বিশ্বকাপে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনাসহ বিদেশী পতাকা লাগানো নিষিদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি দেশবাসীর দেশপ্রেম উজ্জীবিত করতে হবে।
হেফাজত আব্দুল আউয়াল পবিত্র মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করাকে শ্রী কৃষ্ণের জন্মবার্ষিকীর সাথে তুলনা করে এদেশের নবী ও রসূল প্রেমিক কোটি কোটি জনতার হৃদয়ে আঘাত করেছে। হেফাযতমার্কা মাওলানারা নবীজীর জন্মদিন পালন করাকে শ্রী কৃষ্ণের জন্মবার্ষিকীর সাথে তুলনা করলেও খালেদা জিয়ার জন্ম দিন গরু জবাই করে পালন করেছে। খালেদার জন্মদিন পালনকে তখন শ্রী কৃষ্ণের সাথে তুলনা করে না। এদের কাছে নবীজীর চাইতে খালেদা জিয়া অনেক বড়। বঙ্গবন্ধুর মাজার শরীফসহ দেশের সব মাজার ভাঙ্গার ঘোষণা দেয়া  আইএস মতাদর্শী ও আইএস এর ন্যায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে হেফাযত নামক বিষফোঁড়া নিষিদ্ধ করতে হবে।
ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে কখনো যানজট নিরসন হবে না। বরং ঢাকার পরিবর্তে জেলা পর্যায়ে অফিস-আদালত, গার্মেণ্টস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বিভিন্ন কর্মক্ষেত্র বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। প্রতিটি জেলায় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। অচল শহর হওয়া থেকে রক্ষা করতে অবিলম্বে রাজধানী ঢাকার বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে।
দেশের লাখ লাখ শিক্ষার্থীদের অকালে শিক্ষাজীবন ধ্বংসের হোতা, প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে ব্যার্থ, সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্নকারী আত্মস্বীকৃত চোর ও দূর্নীতিবাজ, আওয়ামীলীগে প্রবেশ করা কট্টর বামপন্থী শিক্ষামন্ত্রী নাহিদের হাত থেকে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা রক্ষায় শিক্ষামন্ত্রীকে প্রত্যাহার করতে হবে। মুসলমানিত্ব নির্মূলের শিক্ষা আইন অনুমোদন করা যাবেনা। পাঠ্যপুস্তকে পুণরায় হিন্দুত্ববাদ প্রবেশ করানোর চক্রান্ত বন্ধ করতে হবে।
বক্তারা বলেন, শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক সারাদেশে ভয়াবহ অনৈতিকতা বিস্তারের ফাঁদ ‘কিশোর-কিশোরী ক্লাব’ স্থাপনের পরিকল্পনা বন্ধ করতে হবে। এর মাধ্যমে বয়ঃসন্ধিকাল নিয়ে সচেতন করা হবে। অথচ বয়সন্ধির বিষয়টি কিশোর-কিশোরীদের একান্ত ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়।  গবেষণা মতে, দেশের ৭৭ ভাগ শিশু পর্ণোগ্রাফিতে আসক্ত। দেশে প্রতিবছর ১০ হাজার লোক আত্মহত্যা করছে। এর মধ্যে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশী। প্রেমে ব্যর্থতা, হতাশা থেকে তরুণ-তরুণী বেশি হারে আত্মহত্যা করছে। আত্মহত্যা বিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষক জন ম্যানের মতে, “সন্দেহ ম্যানিয়া থেকে আত্মহত্যার হার টিনএজ বালক-বালিকা, টিনএজ প্রেমিক-প্রেমিকা এবং টিনএজ তথা তরুণ দম্পতির মধ্যে বেশি। কারণ টিনএজদের মধ্যে হরমোনের তীব্র সক্রিয়তার কারণে অস্থিরতা থাকে। তাদের মধ্যে মেনে নেয়ার প্রবণতা কম, জটিল পরিস্থিতিতে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশি।”
এমতাবস্থায় কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের যখন “কিশোর-কিশোরী” ক্লাব নামে প্রেমকুঞ্জ তৈরী করে একাকার করে দেয়া হবে। ফলে বাড়বে নারীটিজিং, শ্লীলতাহানী, সম্ভ্রমহরণ, অবৈধ গর্ভপাত, কুমারীমাতা, আত্মহত্যা’র মতো অপরাধ। এসব অপরাধের দায় কি মন্ত্রণালয় নেবে? এছাড়া বয়সন্ধির বিষয়টি কিশোর-কিশোরীদের একান্ত ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়। সে বিষয়ের উপর হস্তক্ষেপ করা সর্ম্পুণ অনৈতিক ও সংবিধানের মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে বিবেচিত “ব্যক্তির গোপনীয়তার অধিকার” সংক্রান্ত ৪৩ নম্বর অনুচ্ছেদের মারাত্মক লংঘন। এছাড়া আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ঘোষণাপত্রেরও মারাত্মক ল!ঘন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের ১২ নম্বর অনুচ্ছেদের লংঘন। পাশাপাশি নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদের (ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঈড়াবহধহঃ ড়হ ঈরারষ ধহফ চড়ষরঃরপধষ জরমযঃং) ১৭ নম্বর অনুচ্ছেদ, জাতিসংঘের কনভেনশন অন মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার’সের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদ এবং জাতিসংঘের শিশু সুরক্ষা সনদের ১৬ নম্বর অনুচ্ছেদেরও লংঘন। শুধু তাই নয়, প্রকাশ্যে কিশোর-কিশোরীদের বয়ঃসন্ধির আলোচনা ধর্মীয় অবমাননার শামিল। যা সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদ ধর্মীয় স্বাধীনতারও সুষ্পষ্ট লংঘন। সুতরাং এসব উদ্ভট ও সমাজবিরোধী, দ্বীন ইসলাম বিরোধী পরিকল্পনা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। নির্বাচনের পূর্বে এসব দ্বীন ইসলাম বিরোধী সিদ্ধান্ত নেয়া মূলত দেশের মুসলমানদের সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার গভীর ষড়যন্ত্র।
বক্তারা বলেন, ওহাবী-সালাফী আইএস সন্ত্রাসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সউদী আরবের অর্থায়ন ছাড়া সারাদেশে ৫৬০টি মসজিদ তৈরির প্রকল্প নেয়া, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বয়স্ক ভাতার প্রবর্তন, ১ম থেকে ১০ শ্রেণী পর্যন্ত উপবৃত্তি চালু, উন্নয়নের মহাসড়কে অবিরাম গতিতে এগিয়ে নেয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের প্রতি অভিনন্দন।
আওয়ামী ওলামা লীগসহ ১৩টি ইসলামী সমমনা সংগঠনের মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন, পীরজাদা পীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী পীর সাহেব, সভাপতি- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ। আরো বক্তব্য রাখেন- আলহাজ্জ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সাধারণ সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, সভাপতি- সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ, লায়ন আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ আবু বকর সিদ্দিক, মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ। মাওলানা মুজিবুর রহমান চিশতি, হাফেজ মাওলানা মোস্তফা চৌধুরী বাগেরহাটি, মাওলানা মুহম্মদ শোয়েব আহমেদ, আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ আতাউর রহমান বঙ্গ, হাফেজ ক্বারী মুহম্মদ শাহ আলম ফরাজী, হাফেজ মুহম্মদ আব্দুল বারী, কারী মাওলানা মুহম্মদ আসাদুজ্জামান আল কাদেরী, আলহাজ মুহম্মদ খোরশেদ আলম রেজভী, হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আল আমীন, আলহাজ্জ মাওলানা রফিকুল ইসলাম, হাফেজ মাওলানা ওমর ফারুক, মাওলানা মুহম্মদ আব্দুল গফুর, মুহম্মদ গরীব মাহাবুব সহ ১৩টি ইসলামী সমমনা সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ চেয়ারম্যান- আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার। মিছিল শেষে শহীদ বঙ্গবন্ধু রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার রূহের মাগফিরাত কামনা করে ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হায়াতে তৈয়বার জন্য দোয়া মোনাজাত করেন- আলহাজ্জ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী।
বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সমমনা ১৩ দলের পক্ষে

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply