১৯ এপ্রিল ২০২৪ / ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ২:০১/ শুক্রবার
এপ্রিল ১৯, ২০২৪ ২:০১ পূর্বাহ্ণ

লিভার চিকিৎসায় বাংলাদেশি চিকিৎসকদের উদ্ভাবন

     

 লিভারের রোগের নতুন ও কম খরচে চিকিৎসা পদ্ধতি বের করেছেন বাংলাদেশের চিকিৎসকদের একটি দল।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই দলটি বলছে, তাদের উদ্ভাবিত স্টেম সেল থেরাপি এবং বিলিরুবিন ডায়ালাইসিসের এ পদ্ধতিতে প্রচলিত যন্ত্রপাতিকেই নতুনভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে অনেক কম খরচে অকার্যকর লিভার বা হেপাটাইটিসের চিকিৎসা করা যাবে।

তারা বলছেন, তাদের এ পদ্ধতির কথা ইতিমধ্যেই তারা কয়েকটি আন্তর্জাতিক চিকিৎসক সম্মেলনে তুলে ধরেছেন।

এ গবেষণা দলের একজন বিএসএমএমইউর লিভার বিভাগের অধ্যাপক মামুন আল মাহতাব বলছেন, লিভার সিরোসিস কিম্বা অন্য কোনো কারণে যখন কারো লিভার অকার্যকর হয়ে যায়, তখন এ চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব।

তিনি বলেন, এ রকম হলে একমাত্র চিকিৎসা হলো লিভার প্রতিস্থাপন। কিন্তু বাংলাদেশে দুর্ভাগ্যজনক হলেও এখনো পর্যন্ত লিভার প্রতিস্থাপন করা যাচ্ছে না। প্রতিবেশী ভারতে এ চিকিৎসায় খরচ হয় বাংলাদেশি টাকায় ৪০ লাখেরও বেশি। এ জন্য আমরা নতুন এ চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছি।

এ জন্য দুটো পদ্ধতি। একটা হলো স্টেম সেল চিকিৎসা আর অন্যটি ডায়ালাইসিস।

তিনি বলেন, এ পদ্ধতিতে লিভারকে একদম সুস্থ করতে না পারলেও এর অবস্থার উন্নতি করা সম্ভব।

অধ্যাপক মামুন আল মাহতাব বলেন, যে যন্ত্রের সাহায্যে রক্ত থেকে প্লেটিলেট আলাদা করা হয়, এই একই যন্ত্রটিকে আমরা নতুন কাজে ব্যবহার করেছি। এই মেশিনের নির্মাতার সঙ্গেও আমরা কথা বলেছি। এই যন্ত্রটি দিয়ে আমরা যখন প্রথম স্টেম সেল সংগ্রহ করি তখন তারা অবাক হয়েছিল।লিভার চিকিৎসায় বাংলাদেশি চিকিৎসকদের উদ্ভাবন

এই স্টেম সেলকে বলা হয় শরীরের রাজমিস্ত্রি। যখনই কোনো অর্গানে সমস্যা হয় তখন এই স্টেম সেলের কাজ হচ্ছে সেটি মেরামত করা। আমরা একটি ইনজেকশন দেই। যখন রোগীর স্টেম সেলের সংখ্যা বেড়ে যায় তখন ওই যন্ত্রের সাহায্যে প্লেটিলেটকে আলাদা না করে স্টেম সেলকে আলাদা করেছি। তারপর স্টেম সেলগুলোকে লিভারের ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলছেন, যেসব রোগীর ওপর তারা এ চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন তাদের বেশিরভাগেরই লিভারের অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

অধ্যাপক আল-মাহতাব জানান, তাদের এ উদ্ভাবন গত মাসে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় সম্মেলনে তুলে ধরেছেন। আরও দুটো আন্তর্জাতিক জার্নালেও এই আবিষ্কারের কথা প্রকাশিত হয়েছে।

তিনি জানান, আন্তর্জাতিক কোনো গবেষকই তাদের এ উদ্ভাবনকে চ্যালেঞ্জ করেননি।

তিনি জানান, এই স্টেম সেল চিকিৎসার পেছনে খরচ পড়বে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মতো। এটা তারা এখন ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকায় নামিয়ে আনার চেষ্টা করছেন।

তিনি বলেন, থাইল্যান্ডে এ চিকিৎসা করতে তাদের খরচ হয় ১৬ থেকে ১৭ লাখ টাকার মতো।

তিনি জানান, ডায়ালাইসিস পদ্ধতিতে খরচ পড়বে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা যেটা করতে সাধারণত খরচ হয় ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা।

খবর বিবিসি বাংলা

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply