২০ এপ্রিল ২০২৪ / ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৫:২৮/ শনিবার
এপ্রিল ২০, ২০২৪ ৫:২৮ অপরাহ্ণ

ভূমিদস্যু জামাল উদ্দিনকে গ্রেফতারের দাবী

     

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা
সুনামগঞ্জে সংবাদ সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্দ্বী পরিবারের উপর হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলা দায়েরকারী ভূমিদস্যু জামাল উদ্দিন কে গ্রেফতারের দাবীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ঐ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের পুরাতন গুদিগাঁও গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ তোছাদ্দক হোসেন এর সন্তান ও প্রতিবন্দী সমাজকল্যাণ সমিতির ইউনিয়ন সভাপতি মোঃ ওমর ফারুক। এসময় পিতা (বীর মুক্তিযোদ্ধা) ডাঃ তোছাদ্দক হোসেন,চাচা প্রতিবন্দী মোঃ নাজিম উদ্দিন চাচাতো ভাই ইব্রাহিম আলী,মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ ও সিরাজ মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে পুরাতন গুদিগাঁও গ্রামের মৃত হানিফ মুন্সীর পুত্র জামাল উদ্দিন এর বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে তিনি বলেন,স্থানীয় ফেটারগাঁও মৌজার ৪৫ নং জেএলস্থিত ৮৪ খতিয়ানের ৭৩৪,৭৩৫ ও ৭৩৬ নং দাগের মোট ১.১৮ একর বাড়ীরকম ভূমির মধ্যে আমার চাচা প্রতিবন্দী মোঃ নাজিম উদ্দিন ১.০৫ একর ভিটেবাড়ীর ক্রয়সূত্রে মালিক ও ভোগ দখলকার আছেন। ৯১৯২/৮৪ ইং সাবরেজিস্ট্রি দলিলমূলে ১.০৫ একর বাড়ীরকম ভূমির ক্রয়সূত্রে বৈধ মালিক হিসেবে আমার চাচা তার পরিবার পরিজনকে নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখলে থাকাবস্থায় একই গ্রামের মৃত হানিফ মুন্সীর পুত্র জামাল উদ্দিনগং বেআইনীভাবে আমার প্রতিবন্দ্বী চাচার বাড়ীর জায়গা জবরদখলে বিভিন্ন অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ আমার চাচা বর্ণিত জায়গা স্থানীয় পুরাতন গুদিগাঁও নিবাসী তোরাব আলী হাজীর নিকট হতে বৈধভাবে রেজিস্ট্রি দলিলমূলে ক্রয় করেন। এর আগে তোরাব আলী ১৭৮১/৬৮ নং দলিলমূলে আব্দুল মন্নাফ এর কাছ থেকে বর্ণিত ভূমি ক্রয় করেন। আব্দুল মন্নাফ ৭২১৭/৬১ নং দলিলমূলে মিন্নত আলী বেপারীর পুত্র তোতা মিয়া ও তাজ ইসলামের কাছ থেকে একই ভূমি ক্রয় করেন। মিন্নত আলী ১৫৭৪৭/৬০নং দলিলমূলে আব্দুল আজিজের নিকট হতে ঐ ভূমি ক্রয় করেন। আব্দুল আজিজ মূল রেকর্ডীয় মালিক সৈয়দ আলী মুন্সীর কাছ থেকে ১৩২৩/৫৬ নং দলিলমূলে ঐ ভূমি ক্রয় করেন।
অন্যদিকে আমার চাচার প্রতিপক্ষ জামাল উদ্দিন দাবী করেন,বর্ণিত মোট ভূমির ১.১৮ একর এর মধ্যে ০.৩০ একর তার পিতা হানিফ মুন্সীর কাছ থেকে ৫৫৭৩/২০০৫ নং দলিলমূলে ক্রয়সূত্রে মালিক। তিনি আরো দাবী করেন,বর্ণিত ভূমির ০.৪৫ একর ভুমি ১০১৫১/৫৯নং দলিলমূলে গোলাম জিলানী বিক্রয় করেন হাজী তঞ্জব আলী ও সদাঘর আলীর কাছে। ৯২৫/৫৯নং দলিলমূলে ০.৭৮ একর ভূমি হাজী তঞ্জব আলী ও সদাঘর আলী বিক্রয় করেন হানিফ মুন্সীর পিতা আশ্রব আলীর কাছে। আশ্রব আলীর পুত্র হানিফ মুন্সী ওয়ারিশান সূত্রে মালিক হিসেবে তার পুত্র জামাল উদ্দিন এর কাছে বিক্রয় করেন ০.৩০ একর ভূমি। প্রকৃতপক্ষে গোলাম জিলানীর পিতা সৈয়দ আলী মুন্সী রেকর্ডীয় মূল মালিক হিসেবে ১৩২৩/৫৬ নং সাবরেজিস্ট্রি দলিলমূলে জনৈক আব্দুল আজিজ পিতামৃত লোদী সরকার সাং গুদিগাঁও এর নিকট ১.০০ একর ভিটে বাড়ীরকম ভূমি বিক্রয় করেন। পিতা সৈয়দ আলী রেকর্ডীয় মূল মালিক হিসেবে ১৩২৩/৫৬ নং দলিলমূলে যে ১.০০ একর ভিটেবাড়ী রকম ভূমি আব্দুল আজিজের নিকট বিক্রয় করে দখলত্যাগী হন সেই ১.০০ একর একই ভূমির মধ্যে ০.৪৫ একর ভূমি পুত্র গোলাম জিলানী কিভাবে তঞ্জুর আলীর কাছে বিক্রয় করেন তা রহস্যজনক। কথিত ০.৪৫ একর ভূমির ভূয়া মালিক তঞ্জুব আলীর কাছ থেকে ০.৭৮ একর ভূমি হানিফ মুন্সীর পিতা আশ্রব আলী ক্রয় করেছেন মর্মে তার নাতি জামাল উদ্দিন দাবী করেন। আমাদের প্রশ্ন তঞ্জুব আলী যদি ০.৪৫ একর ভূমির ক্রয়সূত্রে মালিক হন তাহলে তিনি ০.৭৮ একর ভূমি কিভাবে আশ্রব আলীর নিকট বিক্রয় করেন?
এছাড়া এস.এ খতিয়ানের ফর্সায় দেখা যায়,৭৩৪ দাগের রেকর্ডীয় মালিক গোলাম জিলানী ও আব্দুল আজিজ সমান হিস্যায় মোট ভূমি ০.৩৮ একরের মধ্যে মাত্র ০.১৯ একরের মালিক। আমাদের প্রশ্ন ০.১৯ একরের রেকর্ডীয় বা ক্রয়সূত্রের মালিক কিভাবে ০.৭৮ একর ভূমি বিক্রয় করেন। এ থেকে প্রমাণ হয়,জামাল উদ্দিন প্রদর্শিত দলিল ও কাগজপত্রগুলো জাল ডকুমেন্ট।
বিভিন্ন জাল দলিল দ্বারা ০.৭৮ একর ভূমি হানিফ মুন্সী তার নিজ নামে ৭৬৬/৯৮ নং নামজারী সম্পাদন করেন। হানিফ মুন্সীর উক্ত নামজারীর বিরুদ্ধে আমার চাচা নাজিম উদ্দিন ৬৭/২০০০ নং রিভিউ দায়ের করলে গত ১০/৪/২০০১ইং তারিখে সুনামগঞ্জ সদর সহকারী কমিশনার মহোদয়,ভূমি হানিফ মুন্সীর নামজারী মোকদ্দমামূলে খারিজকৃত ভূমি মূল খতিয়ানে রেকর্ড বহালের আদেশ দেন। আমার চাচা নাজিম উদ্দিনের রিভিউ আদেশের বিরুদ্ধে ২য় দফায় ক্ষুব্ধ হানিফ মুন্সী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বরাবরে ২৩/২০০২ নং নামজারী রিভিশন মোকদ্দমা দায়ের করেন। ৯/১১/২০০২ইং তারিখে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সুনামগঞ্জ মহোদয়, উক্ত নামজারী রিভিশন মোকদ্দমাটি নামঞ্জুর করা হলো মর্মে আমার চাচার পক্ষে আদেশ দেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সুনামগঞ্জ প্রদত্ত ৯/১১/২০০২ইং তারিখের ২৩/২০০২ নং নামজারী রিভিশন মোকদ্দমার রায় ও আদেশ কার্যকর না হওয়ার সুযোগে প্রতারক জামাল উদ্দিন ২২৪৩/১৫-১৬নং নামজারী সম্পাদনক্রমে ১২১০ নং খতিয়ানে বিরোধীয় ০.৩৮ একর ভূমি নিজ নামে রেকর্ড করায়। কথিত ২২৪৩/১৫-১৬ নং নামজারী মোকদ্দমার আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে আমার চাচা নাজিম উদ্দিন,জামাল উদ্দিনকে বিবাদী করে পুনরায় ৮০/২০১৬ নং বিবিধ (নামজারী) রিভিউ মামলা দায়ের করেন। ৩/১/২০১৮ইং তারিখে সুনামগঞ্জ সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিশ^জিৎ দেব আমার চাচা নাজিম উদ্দিনের পক্ষে এক সদয় আদেশ দেন। উক্ত আদেশে জামাল উদ্দিন ও তার পিতা হানিফ মুন্সীর নামীয় ২২৪৩/১৫-১৬ নং নামজারী মামলার আদেশে সৃজিত ১২১০ নং খতিয়ানের ৭৩৪ দাগের ০.৩৮ একর ভূমি কর্তনক্রমে সাবেক ৮৪ নং খতিয়ানে বহাল রাখা হয়।
এসব আদেশ ও রায়ে প্রতীয়মাণ হয় জামাল উদ্দিন বিরোধীয় ভূমির বৈধ মালিক নয়। তারপরও আমার চাচার মালিকানাধীন বর্ণিত ভিটেবাড়ী রকম ভূমি গ্রাস করার অসদুদ্দেশ্যে জামাল উদ্দিনগং আমার প্রতিবন্দ্বী চাচা মোঃ নাজিম উদ্দিন ও তার ভাই অর্থাৎ আমার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ তোছাদ্দক হোসেন ও আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান প্রতিবন্দ্বী মোঃ ওমর ফারুকসহ আমাদের পরিবারের ৫ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন কাল্পনিক ঘটনার উল্লেখ করে বিবিধ মোকদ্দমা নং ৩৩/২০১৮,বিবিধ ৬১/২০১৮ ও সিআর ৫৯৩/২০১৭ নং হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করে।
এমতাবস্থায় আমরা অসহায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্দ্বী পরিবারের উপর হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলা দায়েরকারী মামলাবাজ ভুমিদস্যু জামাল উদ্দিনকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে আমাদের জানমাল ও সহায় সম্পত্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা জাতির বিবেক সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply