২৮ মার্চ ২০২৪ / ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৪:৩৪/ বৃহস্পতিবার
মার্চ ২৮, ২০২৪ ৪:৩৪ অপরাহ্ণ

বড় আন্দোলনের চিন্তা বিএনপির

     

দাবি আদায়ে বড় আন্দোলনের পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। এই আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। আপাতত পবিত্র মাহে রমজান অব্দি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে থাকবে তারা। ঈদের পরে মাঠে নামবে। বেগম খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দীর্ঘসূত্রতার আবর্তে পড়ার পরে দলের সিনিয়র নেতারা কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। নেতারা বলছেন, রাজপথ ছাড়া কোন গত্যন্তর নেই। সরকারের সাথে সমঝোতার পথ সুদূর পরাহত। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিয়ে দাবি আদায় হবেনা। কঠোর এবং অল আউট আন্দোলনই সমাধান। এই লক্ষ্যে তৃণমূলে কেন্দ্রের বার্তা পৌঁছে দিতে কেন্দ্রীয় নেতারা আগামীকাল ২৩ মার্চ থেকে মাঠে নামবেন।

হাইকমান্ড থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, বড় আন্দোলনের সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য তৃণমূল নেতাদের উজ্জীবিত করতে হবে। সেই সাথে মাঠ পর্যায়ে সভা-সমাবেশ-ঘরোয়া বৈঠকের মাধ্যমে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন, নির্বাচনের প্রস্তুতি, প্রার্থী সম্পর্কে ধারণা গ্রহণ করতে হবে। ১০ এপ্রিলের মধ্যে সফর শেষে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বিএনপি মহাসচিবকে সংশ্লিষ্ট এলাকার রিপোর্ট দেবেন।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেন, কৌশলগত কারণে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিচ্ছে বিএনপি। খুব বেশিদিন এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে থাকতে পারবে না বিএনপি। কারণ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলন চাচ্ছে দলের সর্বস্তরের কর্মী-সমর্থক-নেতারা। তিনি বলেন, যেহেতু সুপ্রিম কোর্ট দেশের উচ্চতর আদালত, আমরা পছন্দ করি অথবা না করি তাদের রায় আমাদের মেনে আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। তার সাথে সাথে আমরা কতদিন আর শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবো? একটা পর্যায় আসছে দেশের মানুষ শান্তিপূর্ণ আন্দোলন আর চাইবে না। তখন বাধ্য হয়ে আমাদেরকে তাদের সাথে থাকতে হবে। তাই আমাদের বড় আন্দোলনের প্রস্তুতি এখনি নিতে হবে।

এ প্রসঙ্গে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে দুর্বল ভাবছে। মিথ্যা মামলায় আমাদের দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে আটকে রেখেছে। তার জামিন নিয়ে নাটক করছে। আদালতও এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে। নেতা-কর্মীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এখন কঠোর আন্দোলনে এই সরকারের বিদায় ঘটানো হবে। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। উপযুক্ত সময়ে শুরু হবে সর্বব্যাপী আন্দোলন।

এদিকে দলের ৭৮টি সাংগঠনিক জেলা শাখা সফরের জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে ৩৭টি টিম গঠন করা হয়েছে। গত চার মাসে তৃণমূলে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের এটি তৃতীয় সফর। এর আগে গত ডিসেম্বরে প্রথম দফায় ও ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় দফায় তৃণমূল সফর করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। দলের স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানান, এবারের সফর খুব গুরুত্বপূর্ণ। রমজান মাস শুরুর আগে এই সফরে আন্দোলনের প্রস্তুতিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থী সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার জন্যও দায়িত্বপ্রাপ্তদের নির্দেশনা দেওয়া হবে। আজ বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তৃণমূল সফরে দায়িত্বপ্রাপ্তদের নিয়ে বৈঠক করবেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব জানান, টিমের নেতারা মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিকট কেন্দ্রের বার্তা পৌঁছে দিবেন। তারা সেখানে কর্মীসভা করবেন।

জেলা ট্যুরে কে কোথায়: টিমের দায়িত্বপ্রাপ্তরা হলেন- খুলনা জেলা ও মহানগরে মেজর অব.হাফিজউদ্দিন আহমেদ, বরগুনা ও ঝালকাঠিতে মজিবুর রহমান সরোয়ার, ভোলায় শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বরিশাল জেলা ও মহানগরে মির্জা আব্বাস এবং পিরোজপুর ও পটুয়াখালীতে খায়রুল কবীর খোকন, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও লালমনিরহাটে আবদুস সালাম, সৈয়দপুর ও নীলফামারীতে মিজানুর রহমান মিনু, দিনাজপুর ও কুড়িগ্রামে আবুল খায়ের ভূঁইয়া, রংপুর জেলা ও মহানগরে হারুন অর রশিদ, গাইবান্ধায় হাবিবুর ইসলাম হাবিব, জয়পুরহাটে মীর সরাফত আলী সফু, বগুড়া ও পাবনায় ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, নওগাঁয় হেলালুজ্জামান লালু, রাজশাহী জেলা ও মহানগর নজরুল ইসলাম খান, নাটোর ও সিরাজগঞ্জে এজেডএম জাহিদ হোসেন, কক্সবাজার ও বান্দরবানে মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, ঢাকা মহানগর উত্তর, দক্ষিণ ও মানিকগঞ্জে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সিলেট জেলা ও মহানগর মোহাম্মদ শাহজাহান, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে ইনাম আহমেদ চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুরে গোলাম আকবর খোন্দকার, কুমিল্লা উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জামালপুরে মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, শেরপুর ও নেত্রকোনায় আহমদ আযম খান, ময়মনসিংহ উত্তর, দক্ষিণ ও নোয়াখালীতে ড. আবদুল মঈন খান, লক্ষ্মীপুর ও কিশোরগঞ্জে অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন, মুন্সীগঞ্জ ও গাজীপুরে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নরসিংদী ও টাঙ্গাইল মনিরুল হক চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বরকতউল্লাহ বুলু, রাজবাড়ী ও ফরিদপুরে ফজলুর রহমান, গোপালগঞ্জে তৈমুর আলম খন্দকার, মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, সুনামগঞ্জে শওকত মাহমুদ, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুরে জয়নুল আবদীন ফারুক, চুয়াডাঙ্গায় আতাউর রহমান ঢালী, ঝিনাইদহ ও সাতক্ষীরা নিতাই রায় চৌধুরী এবং মাগুড়া ও নড়াইল হাবিবুর রহমান হাবিব।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply