১৮ এপ্রিল ২০২৪ / ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ৮:৫৬/ বৃহস্পতিবার
এপ্রিল ১৮, ২০২৪ ৮:৫৬ অপরাহ্ণ

দুই সোর্সের চাঁদাবাজি বাণিজ্য জমজমাট,প্রশাসন নিরব

     

সুনামগঞ্জের চাঁরাগাঁও সীমান্তে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনের নাম ভাংগিয়ে দুই সোর্সের চলছে জমজমাট চাঁদাবাজি বাণিজ্য। তারা সরকারের লক্ষলক্ষ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ ভাবে কয়লা,পাথর,মদ,গাঁজা,হেরুইন,ইয়াবা,মোটর সাইকেল,অস্ত্র ও গরু পাচাঁর করে নামে-বেনামে চাঁদাবাজি করছে। অভিযুক্ত সোর্সরা হলেন-জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের জঙ্গলবাড়ি গ্রামের মৃত আছালক মিয়ার ছেলে তোতা মিয়া(৪৮) ও চাঁরাগাঁও গ্রামের মৃত মকবুল ইসলামের ছেলে নারী নির্যাতন মামলার আসামী শফিকুল ইসলাম ভৈরব(৩৫)।
এব্যাপারে চাঁরাগাঁও শুল্কস্টেশনের ব্যবসায়ীরা জানায়,চাঁরাগাঁও ও কলাগাঁও ছড়া দিয়ে প্রায় ৩শ গজ ভারতের ভিতরে কয়েক হাজার লোক ঢুকিয়ে প্রতিদিন পাথর পাচাঁর করছে বিজিবিসহ বিভিন্ন সংস্থার সোর্স পরিচয়ধারী তোতা মিয়া ও শফিকুল ইসলাম ভৈরব। আর পাচাঁরকৃত ১ট্রলি বল্ডার পাথর থেকে বিজিবি,পুলিশ,ইউপি মেম্বার হাসান আলী ও আব্দুর রাজ্জাকের নামে মোট ৩৫০টাকা,১টি গরু থেকে ৩হাজার টাকা,১টি মোটর সাইকেল থেকে ১৫হাজার টাকা চাঁদা নেয়াসহ মদ,গাঁজা,হেরুইন ও ইয়াবা পাচাঁরের জন্য সাপ্তাহিক ২০থেকে ৫০হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা নিচ্ছে। তার সাথে কয়লা ও কয়লার বস্তার ভিতরে করে মদ পাচাঁর করে বাবুল মিয়ার চাঁরাগাঁও এর ডিপুতে,সোর্স শফিকুলের মামা রাজ্জাক মিয়ার বাড়িতে নিয়ে মজুত রেখে ওপেন বিক্রি করছে চোরাচালানী বাবুল মিয়া মোবারক মিয়া,ফালান মিয়া,হাসিম মিয়া,মরতুজ আলী ও সোর্স শফিকুল ইসলাম ভৈরব। এবং ১বস্তা কয়লা পাচাঁরের জন্য বীরেন্দ্রনগর কোম্পানীর কমান্ডারের নামে ২০টাকা,চাঁরাগাঁও ক্যাম্প কমান্ডারের নামে ও ম্যাচ খরছ বাবদ ৫০টাকা,সাংবাদিকদের নাম ভাংগিয়ে কয়লা পাচাঁর মামলা নং-৯,জিআর-১৫৮/০৭এর আসামী আব্দুর রাজ্জাক নিচ্ছে ৩০টাকা,অস্ত্র পাচাঁর মামলাসহ একাধিক মামলার জেলখাটা আসামী হাসান আলী মেম্বার ৫০টাকা,সুনামগঞ্জ বিজিবি অধিনায়কের নামে ভাংগিয়ে ৫০টাকা,থানা ও ডিবি পুলিশের নামে ৫০টাকাসহ মোট ২৭০টাকা চাঁদা নিচ্ছে ওই দুই সোর্স। অন্যদিকে চাঁরাগাঁও শুল্কস্টেশন দিয়ে বৈধ ভাবে ভারত থেকে আমদানীকৃত কয়লা ব্যবসায়ীদের ডিপু থেকে ও পরিবহণের সময় ট্রলি ও নৌকা থেকে অবাধে কয়লার বস্তা চুরি করে নিয়ে সমসার হাওর পাড়ের পাথরঘাটা নামকস্থানে ও রাস্তার দুইপাশে মজুত রেখে প্রতিদিন ২০থেকে ৩০মে.টন কয়লা ওপেন বিক্রি করা হচ্ছে। আর চুরি করা ১মে.টন কয়লা থেকে বিজিবি ক্যাম্পের নামে ১০০টাকা,মেম্বার হাসান আলীর নামে ২০০টাকা,থানার নামে ১০০টাকা ও বিজিবির দুই সোর্সের নামে ১০০টাকাসহ মোট ৫০০টাকা চাঁদা নিচ্ছে দুই সোর্স তোতা মিয়া ও শফিকুল। আর শুল্কস্টেশনের ব্যবসায়ীদের নিয়োজিত ৩জন সেন্টি (পাহারাদার) ১বস্তা কয়লা থেকে নিচ্ছে ৫০টাকা চাঁদা। এব্যাপারে চাঁরাগাঁও এর ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া,শাহালম,মনির হোসেন,আব্দুল জব্বার,ফুরকান মিয়া,অজিত রায়সহ অনেকেই বলেন,চোরাচালানীরা সোর্স তোতা মিয়া ও শফিকুল ইসলাম ভৈরবের মাধ্যমে সিন্ডিকেড তৈরি করে প্রতিদিন কয়লা,পাথর,মদ,হেরুইন ও ইয়াবাসহ অস্ত্র পাচাঁর করে ওপেন চাঁদাবাজি করছে। কিন্তু প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি।
এব্যাপারে সোর্স তোতা মিয়া বলেন,আমরা যা করছি সবার সাথে আলোচনা করে বিজিবির নির্দেশেই করছি,আপনার কিছু জানার থাকলে ক্যাম্প থেকে জানতে পারেন। চোরাচালানী মরতুজ আলী বলেন,আমাদের চোরাচালান ও চাঁদাবাজি নিয়ে পত্রিকায় লেখতে লেখতে ১০টা কলম ভাংলেও কেউ কিছুই করতে পারবেনা। চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার মোনায়েম এর সরকারী মোবাইল (০১৭৬৯-৬১৩১২৬) নাম্বারে বারবার কল করার পরও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাহিরপুর থানার ওসি নন্দন কান্তি ধর বলেন,সোর্স তোতা মিয়া ও শফিকুল ইসলাম ভৈরবকে আমি চিনিনা,তারা যদি আমাদের নামে চাঁদাবাজি করে তাহলে ওদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক নাসিরউদ্দিন বলেন,সীমান্ত চোরাচালান বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য,সম্প্রতি চাঁরাগাঁও সীমান্তের বাঁশতলা ও লালঘাট এলাকায় একাধিক বার অভিযান চালিয়ে প্রায় ৩শ বোতল মদ ও ৫ মে.টন কয়লা জব্দ করলেও সোর্স শফিকুল ইসলাম ভৈরব,তোতা মিয়া ও মরতুজ আলীসহ তার সহযোগীদের আটক করেনি বিজিবি।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply