২০ এপ্রিল ২০২৪ / ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ৪:৪৬/ শনিবার
এপ্রিল ২০, ২০২৪ ৪:৪৬ পূর্বাহ্ণ

ঠাকুরগাঁওয়ে ডাক্তারের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার শিকার এক গৃহবধু

     

 

হিমেল তালুকদার, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি 

ঠাকুরগাঁওয়ের লাইফ এইড হাসপাতালে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসা ও অবহেলার কারনে গরুতর অবস্থা এক গৃহবধুর। সেখানে ইউরেটাসের অপারেশন করাতে গেলে তাদের এই অবস্থর শিকার হতে হয়।

জানাযায়, ঠাকুরগাও সদরের গেয়ালপাড়ার বাসিন্দা শাহ জামালের স্ত্রী আজিজা সুলতানা বেশ কিছুদিন থেকেই ঋতুস্রাবের সময়ের তারতম্য ও অতিরিক্ত ব্যথা অনুভব করতে থাকে। । সমস্যার সমাধানে তারা ঠাকুরগাঁওয়ের লাইফ এইড হাসপাতালে যায়। সেখানেগিয়ে জানতে পারে ইউরেটাসের নামক সমস্যায় অপারেশন করতে হবে। সেখানকার ডাক্তার জহুরুল ইসলাম দ্রুত অপারেসনের পরামর্স দেন। তার প্রেক্ষিতে ডাক্তার জহুরুল ইসলামের দ্বারা গত ১৬/২/২০১৭ তারিখে আজিজা সুলতানার অপারেশন করা হয় । অপারেশনের চারদিন পর বাসায় ফিরে তারা ডাক্তারের পরামর্শে নিয়মিত ঔষধ সেবন করতে থাকে। কিন্তু রোগী আজিজা সুলতানা সারিরিক কোন উন্নতি লক্ষ করা যায়না । ক্ষত স্থানের ব্যথা অসহনীয় পর্যায় হলে তারা হাসপাতাল কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে। হাসপাতাল কর্তৃক বলা হয় তার রক্তে হিমোগ্লোবিন এর সংকট দেখা দিয়েছে । তাই রক্ত দিতে হবে। সেই মোতাবেক রোগীকে রক্ত দেওয়া হয় । কিন্তু অপারেশনের জায়গার ব্যথা না কমে ক্রমস বাড়তে থাকে। ১২ দিন পর তারা আবার সেই হাসপাতালে যায়। সেখানে ডাক্তার জহুরুল ইসলাম বেস কিছু টেষ্ট করাতে বলেন । টেষ্ট করা হলে রিপোর্ট দেখে কোন সমস্যা নেই জানিয়ে কিছু ঔষধ লিখে দেন সেই ডাক্তার । রোগী আজিজা সুলতানা তিব্র ব্যথাকে সঙ্গি করে ডাক্তারের পরামর্শ মত ঔষধ খেতে থাকেন। দশদিন পর অবস্থা চরম পর্যায় চলে যায় । রোগীর স্বামি শাহ জামাল আবার মুঠো ফোনে হাসপাতাল কতৃপক্ষকে সমস্যার কথা জানান । তখনোও তারা ঠিক হয়ে যাবে আ্শস্থ করে ঔষধ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন । কিন্তু রোগীর স্বজনরা ডাক্তারের ওপর আর আস্থা রাখতে পারছিলেন না । তাই রোগীকে নিয়ে তারা দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক জাহানারা মুন্নির কাছে যান। তিনি রোগী আজিজা সুলতানা ক্ষত স্থান পর্যবেক্ষন করে সেলাই এর ভিতরে সমস্যার আশংকা জানিয়ে দ্রুত মেডিকেলে ভর্তি হবার পরামর্শ দেন ।

দিনাজপুর মেডিকেল কতৃক জানাযায়, আজিজা সুলতানা অপারেশনের ক্ষতর ভেতরে একটি বেন্ডিজ গজের টুকরা ও একটি সেলাই এর সুতা পাওয়া গেছে। সেলাই এর সময় হয়তো ভুল বসত সেগুলো রেখেই সেলাই করা হয়েছিল। এর ফলে ইনফেকসন হয়ে সেখানে তিন স্থরে পুজ জমে গেছে । আরো আগে তাদের ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ ছিল।

দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের ডাক্তার জাহানারা মুন্নি জানান, অপারেশনের জায়গায় ইনফেকসন হয়ে অনেক খারাপ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এখন সম্পুর্ন সেলাই খুলে ড্রেসিং করে আবার সেলাই করতে হবে। এর পরেই কিছু বলা সম্ভব। আর কিছুদিন দেরি হলে অনেক বড় কোন সমস্যা হতে পারতো।

রোগীর স্বামি শাহ জামাল অভিযোগ করে বলেন, অপারেশনে অবহেলা করার ফলেই আমাদেরকে এমন সমস্যার সম্মুক্ষিন হতে হয়েছে। এই বিষয়ে তাদের কথায় কিছু টেষ্ট ও করাই কিন্তু টেস্ট রিপোর্ট দেখেও ডাক্তার সমস্যার বিষয়টি বুঝতে পারেনি। আমরা অন্য কোথাও যেতে চেয়েছিলাম। কোন প্রয়োজন নেই জানিয়ে ডাক্তার কিছু ঔষধ লিখে দেয়। ডাক্তার দের উপরেই যদি ভরষা করতে না পারি তাহলে আমরা কোথায় যাবো।

হাসপাতালের পরিচালক নাসেরুল ইসলাম বলেন, আমি এই বিষয়টি জানি। ডাক্তারের ভুলে এমনটা হয়েছে। ডাক্তার জহুরুল ইসলাম সময় মত সমস্যাটা ধরতেও পারেনি। দুঃখ প্রকাশ করে এই বিষয়ে আমি নিজে রোগী ও তার সজ¦নদের সাথে কথা বলেছি।

এই বিষয়ে ডাক্তার জহুরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ফোন করলেও তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দিয়েছেন।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply