১৯ এপ্রিল ২০২৪ / ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৪:২৯/ শুক্রবার
এপ্রিল ১৯, ২০২৪ ৪:২৯ অপরাহ্ণ

নব্য জেএমবি আবুল কাশেম হাফেজিয়া মাদ্রাসার আড়ালে জঙ্গি প্রশিক্ষণ দিতেন

     

সাইফুর রহমান শামীম
ঢাকায় পুলিশের হাতে আটক নব্য জেএমবির আধ্যাত্মিক নেতা বড় হুজুর খ্যাত আবুল কাশেম এর বাড়ি কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন দুর্গম উত্তর কোদালকাটি চরে। প্রথমে তিনি  চিলমারী উপজেলার অষ্টমীচর ইউনিয়নের ডাটিয়ারচর বাজারে পল্লী চিকিৎসক এবং হাফেজিয়া মাদ্রাসার হুজুর ছিলেন। বিএনপি-জামায়াতের আমলে ২০০৪ সালের শুরুর দিকে ঐ হাফেজিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলেন। মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসা হতো এই দুর্গম চরে। সারারাত ধরে চলত বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ। এমন অভিযোগ করেন চরের স্থানীয় অধিবাসীরা।
ডাটিয়ার চরের বাসিন্দা মজিবুর রহমান, সোলেমান মাষ্টার, করিম মন্ডল ও ইদ্রিস আলী জানান, আবুল কাশেম ডাটিয়ারচর হাফেজিয়া মাদ্রাসাকে জঙ্গি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম হিসেবে ব্যবহার করতেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অপরিচিত মধ্য বয়সি ও কিশোর যুবকদের যাতায়াত ছিল বেশি। এশার নামাজের পর বসত মজলিস। যা ফজরের আযানের আগ পর্যন্ত মাদ্রাসায় আলোচনা চলত। তাদের সবার খাবার রান্না হতো কাশেম হুজুরের বাড়িতে। তবে বাইরের কোনো পুরুষ বা মহিলা তার বাড়িতে ঢুকতে পারত না। পরিবারের সবাই পর্দানশীল।
আবুল কাশেম রাজীবপুরের করাতিপাড়া ও দিয়ারার চরের প্রায় দু’শতাধিক পরিবারকে পর্দানশীল করে গড়ে তুলেছেন। প্রথমে হাফেজিয়া মাদ্রাসার হাফেজ বানানোর কথা বলে মাদ্রাসা চালু করেন তিনি।
বর্তমানে রাজীবপুরের কোদালকাটি ইউনিয়নের উত্তর কোদালকাটি চরে আবুল কাশেম এর বাড়ি। বাড়িতে দুইটা দোচালা টিনের ঘর ছাড়া তেমন কিছুই নেই। তার পরিবারে ৭ ছেলে ও ৩ মেয়ে রয়েছে। আবুল কাশেমের স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, ‘উনি (স্বামী) গত বছর ১৬ মে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর আর ফেরেনি। জঙ্গি হামলার সঙ্গে আমার স্বামী জড়িত নেই। ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে অন্যায়ভাবে চক্রান্ত করে আমার স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
উত্তর কোদালকাটি ইউপি মেম্বার কামাল হোসেন জানান, আমরা অনেক সময় শুনতাম আবুল কাশেম জঙ্গি নেতা। সে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে জঙ্গি হিসেবে গড়ে তোলেন। সেসময় আইন-শৃংখলা বাহিনীকে স্থানীয়রা জানালেও দুর্গম চর হবার কারণে তারা বিষয়টি নজরে নেননি। ফলে আজ এইসব দুর্গম চরাঞ্চল থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে।
কোদালকাটি ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ছক্কু জানান, তার বাড়িতে বিভিন্ন সময় বহিরাগত লোকজন আসত কিন্তু আমরা বুঝতে পরিনি তিনি জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন।
এই বিষয়ে পুলিশ সুপার মেহেদুল করিম জানান, আবুল কাশেম এর বাড়ি কুড়িগ্রামে শুনেছি। কিন্তু এখনও তেমন কোন তথ্য জানা নেই।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply