২৯ মার্চ ২০২৪ / ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / রাত ৪:৩৭/ শুক্রবার
মার্চ ২৯, ২০২৪ ৪:৩৭ পূর্বাহ্ণ

সুনামগঞ্জে আশ্রিত চাচা ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর দায়ের কোপে বাউল সাজিদ মিয়াসহ ৩ জন আহত

     

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় আশ্রিত চাচা ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর দায়ের কোপে বাউল সাজিদ মিয়াসহ তার পরিবারের ৩ জন আহত হয়েছেন। শনিবার সকাল ৯টায় উপজেলার লক্ষনশ্রী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে নিজ বসতঘরে এ ঘটনা ঘটে। গ্রামবাসী জানান, বাউল সাজিদ মিয়ার চাচা ইরফান আলীর বসতবাড়ীর জায়গা বর্তমানে মৃত আজমান আলীর পরিবারবর্গের দখলে আছে। এই জায়গা নিয়ে মৃত আজমান আলীর স্ত্রী বিধবা রহিমা বেগমের সাথে ইরফান আলীগংদের বিরোধ চলছিল। নিজগ্রামে থাকার কোন জায়গা না থাকায় বাউল সাজিদ মিয়া তার বসত ঘরের দক্ষিণ পার্শ্বের একটি রুমে চাচা ইরফান আলীকে স্বপরিবারে থাকার জন্য জায়গা দেন। গত ২ বছর আগে ভাতিজার আশ্রয়ে থেকে বসতঘরের পশ্চিমের একটি রুমে অগ্নি সংযোগ করে রাতের বেলা স্বপরিবারে বসতবাড়ী ত্যাগ করে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার কামরুপদলং গ্রামে বেয়াইয়ের বাড়ীতে চলে যান ইরফান আলী। এই ঘটনার দায়ে ইরফান আলী ও তার পুত্র শামীমের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করলে অগ্নি সংযোগের অভিযোগটি পুলিশ তদন্ত করে। পরে বাউল সাজিদ মিয়ার নিজ খরচে অগ্নি সংযোগ হওয়া ঘরটি মেরামত করলে ইরফান আলী প্রথমে পুত্রবধূ জহুরা খাতুনকে হঠাৎ করে ভাতিজার মেরামত করা বসতঘরটি আবার জবর দখল করায় এবং পর্যায়ক্রমে পুত্র শামীমসহ পরিবারের সকলকে নিয়ে ভাতিজার ঘরে জোরপূর্বক ফিরে আসে। বাউল সাজিদ মিয়া থানা পুলিশ ও এলাকার সালিশীগনের মাধ্যমে বিচার সালিশ করেও তাদেরকে শান্তিপূর্ণভাবে তার বসতঘর ছাড়া করতে ব্যর্থ হন। পরে শামীম ও ইরফান আলী এক লক্ষ টাকা চাঁদা নাদিলে কোনমতেই সাজিদ মিয়ার বসত ঘর ছাড়বেনা বলে তাকে শাসায়। সাজিদ মিয়া একেবারে নিরুপায় হয়ে জবর দখলদারদের সাথে তার বসতঘরে মানবেতর মুহুর্ত অতিক্রম করেন। শনিবার সকালে শামীম ও ইরফান আলী বাউল সাজিদ মিয়ার বসতঘরের মধ্যে একটা টিনের বেড়া দিয়ে তার জায়গা দখল করতে গেলে সাজিদ মিয়া তাদেরকে নিষেধ বাধা দেন। এতে উত্তেজিত শামীমের স্ত্রী জহুরা খাতুন ভাসুরকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে একখানা টেঙ্গি দা দিয়ে তার মাথার বামদিকে উপরে কোপ মেরে গুরুতর জখম করে। চাচাতো ভাই শামীম একখানা লোহার শাবল দিয়ে বাউল সাজিদ মিয়ার পিটের উপরে ডান কাদে ও কানে বারী মেরে হাড়ভাঙ্গা জখম করে। চাচা ইরফান আলী একই উদ্দেশ্যে লোহার রড দ্বারা বারি মেরে হাড়ভাঙ্গা জখম করে। সন্ত্রাসীরা বসত ঘরে অনধিকার প্রবেশ করত সাজিদ মিয়া এবং তার মা জরিনা বেগম (৭০) ও কন্যা পারভিন বেগম (১৫) কে মারপিঠ করে তাদেরকে গুরুতর আহত করার পাশাপাশি তার ঘরের চালডাল টাকা পয়সাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র লুটতরাজ করে নেয়। ঘটনার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদেরকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদিকে প্রতিপক্ষ স্বজনরা বাউল সাজিদ মিয়ার অবর্তমানে তার বাড়ীটিও শেষ পর্যন্ত দখল করে নেয়। ঘটনার পর বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি বাউল শাহজাহান,সহ-সভাপতি সাংবাদিক বাউল আল-হেলাল,সাধারন সম্পাদক অরুন তালুকদার ও বাউল তছকীর আলী আহত বাউল সাজিদ মিয়াকে দেখতে জেলা সদর হাসপাতালে যান। তারা অবিলম্বে সাজিদ মিয়ার উপর হামলা ও তার বাড়ী জবরদখলকারী সন্ত্রাসীদেরকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply