২০ এপ্রিল ২০২৪ / ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ৭:৪৯/ শনিবার
এপ্রিল ২০, ২০২৪ ৭:৪৯ পূর্বাহ্ণ

প্রেমিকের হাতে প্রেমিকার লাশ ৭ টুকরা

     

পলাশের আদালতে স্বীকারোক্তি, আইনজীবি’র জন্য রিমান্ড আবেদন 

কে.এম.রিয়াজুল ইসলাম

বরগুনার আমতলীতে চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্রী মালা আকতার হত্যা মামলার প্রধান আসামী আলমগীর হোসেন পলাশ বুধবার (২৫ অক্টোবর) আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে।
হত্যার সাথে সম্পৃক্ততার সন্দেহে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে আইনজীবি মাইনুল আহসান বিপ্লব তালুকদারকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) নুরুল ইসলাম বাদল বাদী হয়ে দু’জনের নাম উল্লেখ করে চারজনের নামে মামলা করেছেন। পুলিশ অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আইনজীবি মাইনুল আহসান বিপ্লব তালুকদারকে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে। আদালতের বিচারক মোঃ হুমায়ূন কবির রিমান্ড আবেদন শুনানীর জন্য আগামী ৩১ অক্টোবর দিন ধার্য্য করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বরগুনা সদর উপজেলার গুদিঘাটা গ্রামের মোঃ মান্নান হাওলাদারের কন্যা মালা আকতারের সাথে পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার মজিদবাড়িয়া ইউনিয়নের বাসন্ডা গ্রামের আবদুল লতিফ খানের ছেলে আলমগীর হোসেন পলাশ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। মালা সম্পর্কে আলমগীর হোসেন পলাশের মামাতো শালিকা। সপ্তম শ্রেণিতে লেখাপড়া অবস্থায় পলাশের সাথে মালার সম্পর্ক হয়।
নিহত মালা কলাপাড়া মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজের একাদ্বশ শ্রেণির ছাত্রী। গত রবিবার সন্ধ্যায় আলমগীর হোসেন পলাশ প্রেমিকা মালাকে নিয়ে আমতলী তার (পলাশ) আত্মীয় এ্যাডভোকেট মাইনুল আহসান বিপ্লবের বাসায় বেড়াতে আসে। তিন দিন ধরে পলাশ এ বাড়ীতে অবস্থান করে। মঙ্গলবার মালা পলাশকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু পলাশ এতে রাজি হয়নি। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া ঝাটি হয়। এক পর্যায় মঙ্গলবার দুপুরে আলমগীর হোসেন পলাশ মালা আকতারকে ধারালো অস্ত্র (বটি) দিয়ে কুপিয়ে মাথা, দু’হাত, দু’পা, গলার নিচ থেকে কোমর পর্যন্ত দু’টুকরো এবং মোট সাত টুকরো করে হত্যা করে।
এ সময় ওই বাসায় কেউ ছিল না। ঘাতক পলাশ লাশ সাত টুকরো করে ওই বাসার বাথরুমের মধ্যে দুটি ড্রামে ভরে লুকিয়ে রাখে। এ ঘটনায় সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে বাসার মালিক আইনজীবি মাইনুল আহসান বিপ্লবকে ওইদিন রাত সাড়ে ১০ টার দিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) নুরুল ইসলাম বাদল বাদী হয়ে ঘাতক আলমগীর হোসেন পলাশ ও আইনজীবি মাইনুল আহসান বিপ্লবের নাম উল্লেখ করে চারজনের নামে মামলা দায়ের করেছেন। বুধবার আলমগীর হোসেন পলাশ আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ হুমায়ূন কবিরের আদালতে ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহত মালা আকতারের মামা হাবিব খাঁন সাংবাদিক কে জানান, ময়না তদন্ত শেষে পুলিশ লাশ আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। লাশ গুদিঘাটা গ্রামে মালা আকতারের নানার বাড়ীতে দাফন করা হবে। তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় আদালতে মামলা করা হবে।

মামলার তদন্তকারী অফিসার ও ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মোঃ শহিদ উল্যাহ সাংবাদিক কে বলেন, আসামী আলমগীর হোসেন পলাশ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, আইনজীবি মাইনুল আহসান বিপ্লবকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
আমতলী আদালতের পরিদর্শক দুলাল কৃষ্ণ চন্দ্র বলেন, আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোঃ হুমায়ূন কবির আইনজীবি মাইনুল আহসান বিপ্লব তালুকদারের রিমান্ড আবেদন নিয়ে আগামী ৩১ অক্টোবর শুনানীর দিন ধার্য্য করেছেন।

About The Author

শেয়ার করুনঃ