ধর্মীয় অবমননাকর বক্তব্য দেয়ায় আইজিপিকে আইনী নোটিশ
ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে আইনী নোটিশ পাঠিয়েছেন জাতীয় শিক্ষা মিশন বাংলাদেশের সভাপতি লায়ন আলহাজ্জ মাওলানা আবু বকর সিদ্দীক। পুলিশের মহা-পরিদর্শক, পুলিশ কমিশনার ডিএমপি এবং উপ পুলিশ-কমিশনার গুলশান বিভাগ, ডিএমপি ঢাকাকে এ নোটিশ পাঠানো হয়। স্বরাষ্ট্র সচিব বরারবর এর অনুলিপি পাঠানো হয়।
নোটিশদাতার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি এ্যাডভোকেট আব্দুল হালিমের পাঠানো আইনী নোটিশে বলা হয়, বিগত ০১/০৪/২০১৭ইং তারিখে এক সংবাদ সম্মেলনে আপনি ১নং নোটিশ গ্রহীতা বলেন যে, ‘যে ঘরে টিভি নাই তারা জঙ্গিবাদের সহিত সম্পৃক্ত’। যাহা পরদিন ০২/০৪/২০১৭ ইং“দৈনিকআমাদের অর্থনীতি”তে “ভাড়াটিয়ার টিভি না থাকলে পুলিশকে জানান” শিরোনামে এবং অন লাইন মিডিয়াতে প্রচার হয়। অপরদিকে গুলশান বিভাগ, ডি. এম. পি. ঢাকা হইতে একটি লিফলেট ছড়ানো হয় যাহার শিরোনাম ‘জঙ্গি ভাড়াটিয়া চিহ্নিত করার উপায়’ শীর্ষক লিফলেটটি আমার মোয়াক্কেলের দৃষ্টি গোচর হইয়াছে।
নোটিশে আরো বলা হয়, আমার সম্মানিত মোয়াক্কেল একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং তিনি স্বাধীনতার চেতনায় বিশ^াসী। পাশাপাশি যারা ধর্মকে পুঁজি করে ব্যবসা করে তাহাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বলিষ্ট ভুমিকা পালন করিতেছেন। কিন্তু আপনাদের উক্ত মন্তব্য এবং লিফলেটের বক্তব্য আমার সম্মানিত মোয়াক্কেলকে মর্মাহত করিয়াছে।আপনারা নোটিশ গ্রহীতাগণ প্রত্যেকেই ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে অবগত রহিয়াছেন এবং আপনাদের মধ্যে অনেকে ধর্মপ্রান মুসলমান বটে। আপনারা ভালভাবে অবগত রহিয়াছেন যে ইসলামের প্রত্যেকটি অনুসঙ্গ, নিয়ম-কানুন যাহা কুরআন শরীফ, হাদিস শরীফ, ইজমা এবং ক্বিয়াসে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রহিয়াছে তাহা প্রত্যেক মুসলানদের জন্য পালন করা আবশ্যকীয়। ক্ষেত্র বিশেষ ফরজ, ওয়াজিব এবং সুন্নত বটে।
আরো বলা হয়, আপনারা নোটিশ গ্রহীতাগন ভালভাবে অবগত আছেন যে, পর্দা পালন করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য ফরজ। কিন্তু আপনাদের দ্বারা প্রচারিত উক্ত লিফলেট এর বক্তব্য যেমন ‘বাসার মধ্যে মহিলা/নারী থাকলে তারা বাইরে আসে কম” বক্তব্য দ্বারা পর্দা পালনকারীদেরকে জঙ্গি চিনার উপায় হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। অথচ পবিত্র কুরআন শরীফে সূরা আহযাব, সূরা নিসা, সূরা নূর, সূরা মোমতাহিনাহ’ চারটি সূরায় স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক পর্দা পালন করা ফরয ঘোষণা করেছেন। সেহেতু ধর্মপ্রাণ মুসলমান মহিলাগণ স্বাভাবিকভাবেই পর্দা পালন করেন এবং প্রয়োজন ব্যতীত বাহিরে বের হননা। কিন্তু আপনাদের বক্তব্য অনুযায়ী তারা বাহিরে কম আসেন বলে ধর্মপ্রাণ সকল মহিলাই জঙ্গি হিসেবে সাব্যস্থ হয়। যা সুস্পষ্ট ধর্মীয় অবমাননা। পাশাপাশি ধর্মীয় অধিকার পালনের সাংবিধানিক অধিকারের সুষ্পষ্ট লংঘন।
নোটিশে বলা হয়, আপনারা নোটিশ গ্রহীতাগন আরও অবগত রহিয়াছেন যে, প্রানীর ছবি, আঁকা, রাখা ইত্যাদিকে পবিত্র হাদিছ শরীফে কঠোরভাবে নিষেধ করা হইয়াছে এবং আপনারা আরও জানেন যে, টিভি মুলত ছবির একটি চলমানরুপ। অর্থ্যাৎ অসংখ্য ছবির দ্বারা টিভির প্রত্যেকটি কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সুতরাং ধর্মপ্রাণ মুসলমান মাত্র পবিত্র হাদিছ শরীফ দ্বারা নিষেধকৃত ছবি আঁকা, রাখা, তোলা এবং দেখা হইতে বিরত থাকিবে। কিন্তু আপনাদের বক্তব্য দ্বারা প্রতিভাত হয় যে, যে ঘরে বা যাহারা টিভি রাখবে না বা দেখবে না তাহারা জঙ্গিবাদের সহিত সম্পৃক্ত। যাহা স্পষ্ট হাদিছ শরীফ এর সরাসরি বিরোধীতা করার সামিল। যাহা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতহানার সামিল।
উক্তরুপ বক্তব্য যাহা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতহানে তাহা অত্র নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে প্রত্যাহার করিয়া আমার মোয়াক্কেলকে অবহিত করিবেন। অন্যথায় মেয়াদান্তে আপনাদের উক্তরুপ বক্তব্য ও কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হইবে। যাহার দায়ভার সম্পূর্নরুপে আপনাদের উপর বর্তাইবে।